• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
এবার লড়াই বাতাসের শহরে

বলে হেড করছেন তামিম। তা দেখে হেসেই আটখানা মুশফিকুর রহিম। ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই অনুশীলন করেছে টাইগাররা। মাঠের লড়াইয়ে সবার মুখে এমন হাসি থাকলেই হয়

ছবি : বিসিবি

ক্রিকেট

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ২য় টেস্ট

এবার লড়াই বাতাসের শহরে

ওয়েলিংটনে অনিশ্চিত মুশফিক

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৭ মার্চ ২০১৯

নিউজিল্যান্ডের মাটি এমনিতেই দুর্ভেদ্য। বিরূপ কন্ডিশনই যেখানে মূল বাধা। নিউজিল্যান্ডের যে কটি ভেন্যু আছে, তার মধ্যে ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ অন্যতম। এই ভেন্যুটি আবার বিশেষভাবে পরিচিত বাতাসের শহর বলে। সারাক্ষণই চলে বাতাসের দাপট। ক্রিকেট মাঠে যতটা না প্রতিপক্ষ, তার চেয়ে বাতাসকেই বেশি ভয় লাগে পেস বোলারদের। বাতাসের অনুকূলে বল করার সুযোগও থাকে। কিন্তু ঝামেলা বাধে প্রতিকূলে বল করতে গেলে। মানে বাতাসের বিপরীতে। তখন একজন বোলার সর্বোচ্চ গতিটাই দেওয়ার চেষ্টা করেন। না হলে বল নির্ঘাত গ্যালারিতে। ওয়েলিংটনে এমন আবহের মধ্যেই দ্বিতীয় টেস্টে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। শুক্রবার ভোর ৪টায় বেসিন রিজার্ভে শুরু হবে ময়দানি লড়াই।

ওয়ানডেতে তিন ম্যাচের হোয়াইটওয়াশের পর প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ৫২ রানের ব্যবধানে। তারপরও দ্বিতীয় ইনিংসটা প্রেরণা জোগাচ্ছে টাইগারদের। প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে অলআউট বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পেরেছিল ৪২৯ রান। মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছিলেন সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনেই করেছিলেন প্রায় দেড়শ রানের ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের মাটিতেও যে ধৈর্য ধরে খেললে রান পাওয়া যায়, সেই দুটি ইনিংস তারই প্রমাণ। 

বাতাসের শহরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টে পাচ্ছে মূল পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে, যা বড় স্বস্তির খবর। হ্যামিল্টন টেস্টে তিনি ছিলেন বিশ্রামে। তবে অস্বস্তির খবরও আছে। পাঁজরের চোটের কারণে দ্বিতীয় টেস্টেও অনিশ্চিত দলের নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ হেড কোচ স্টিভ রোডস তো সরাসরি বলে দিয়েছেন- ‘দ্বিতীয় টেস্টেও তার খেলার সম্ভাবনা খুবই কম।’

বেসিন রিজার্ভে মুশফিক নেট সেশনে অংশ নিলেও বিপত্তিটা বাধে সেখানেই। গতকাল বুধবার ব্যাট করলেও চোটের কারণে খুবই সীমিত সময়ের জন্য তা অব্যাহত রাখতে পেরেছেন। হেড কোচ গতকাল জানালেন, তার এখনো বৃদ্ধাঙ্গুল ও কব্জির জায়গায় ব্যথা রয়েছে- ‘সে প্রথমবারের মতো অনুশীলন করল। টেনিস, ক্রিকেট বল দিয়ে কিছু কাজ করার চেষ্টা করেছে। আর ক্রিকেট বল দিয়ে যখন অনুশীলন শুরু করে তখন বোঝা যায় তার লিগামেন্ট অঞ্চলে ব্যথা রয়ে গেছে।’

দ্বিতীয় টেস্টেও তার খেলার সম্ভাবনা যে প্রায় নেই বললেই চলে সেই কথা এভাবেই বললেন স্টিভ রোডস, ‘দ্বিতীয় টেস্টে আসলে তার খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে ভালো খবর হচ্ছে তৃতীয় টেস্টে সে ফিরতে পারবে। তাই আশা করি এই পথে যেন আর কোনো দুঃসংবাদ না আসে।’

তামিম ইকবালের হালকা চোট সমস্যা থাকায় খুব বেশি অনুশীলন করেননি বেসিন রিজার্ভে। তবে সেই চোট যে গুরুতর নয় তা বললেন বাংলাদেশ কোচ, ‘তামিম হাল্কা অনুশীলন করেছে। কিছু ব্যথা আছে। তবে সে ভালো অবস্থায় আছে। বেশ কিছু ওভার ব্যাটিং করেছে।’

ওয়ানডে সিরিজে পাওয়া চোট মুশফিকুর রহিমকে খেলতে দেয়নি প্রথম টেস্টে। তবে আশা করা যাচ্ছিল দ্বিতীয় টেস্টের আগেই তিনি সেরে উঠবেন, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ধাপও দিচ্ছিল আশার খবর। কিন্তু শেষটা হতাশারই। রোডস আরো জানান, ‘মুশফিকের পরিস্থিতি হচ্ছে, দ্রুত সময়ের জন্য টেস্ট খেলার মতো ফিট করার চেষ্টা হচ্ছে তাকে। আজ তার সত্যিকারের অনুশীলন ছিল। দ্বিতীয় টেস্টে তার খেলা খুবই সংশয়ের মধ্যে আছে। রাতারাতি বিস্ময়কর কোনো উন্নতি হলেই কেবল সেটা (খেলা) সম্ভব। ভালো খবর যেটা তা হচ্ছে তৃতীয় টেস্টের জন্য সে পুরো ফিট হয়ে উঠছে।’

টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। ১৪ টেস্টের মধ্যে ১১টিতে হার। তিন ম্যাচে ড্র। তিন ড্রই বাংলাদেশের মাটিতে। ওয়েলিংটনের ইতিহাসও খুব বিপদের আভাস দিচ্ছে। এই ভেন্যুতে তিনটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। হারতে হয়েছে প্রত্যেকটিতে। এর মধ্যে দুটিতেই ইনিংস ব্যবধানে। একটি উইকেটে। এই মাঠে প্রথম টেস্ট খেলে বাংলাদেশ ২০০১ সালের ডিসেম্বরে। বাংলাদেশের দুই ইনিংসের রান ছিল ১৩২ ও ১৩৫। খালেদ মাসুদের জমানার সেই টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ৭৪ রানে।

এরপর এই মাঠে দ্বিতীয় টেস্ট খেলে বাংলাদেশ ২০০৮ সালে। জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সেই টেস্টে বাংলাদেশের দুই ইনিংসের রান ছিল ১৪৩ ও ১১৩। আশরাফুল শিবির সেবার হেরেছিল ইনিংস ও ১৩৭ রানের ব্যবধানে। এই মাঠে সবশেষ দুই দলের লড়াই বছর দুয়েক আগে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। বাংলাদেশ হেরেছিল ৭ উইকেটে। তবে লড়াইটা হয়েছিল সেয়ানে সেয়ানে। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিল ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান, ডিক্লেয়ার। সাকিব খেলেছিলেন ২১৭ রানের বিস্ময়কর ইনিংস। মুশফিক করেছিলেন ১৫৯। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে (১৬০) ব্যাটিং ভরাডুবির কারণে হারতে হয়েছিল সেই ম্যাচ।  

সেই ম্যাচে আলো ছড়ানো সাকিব নেই চলমান সিরিজে। মুশফিকও অনিশ্চিত। তবে তামিম, সৌম্য, মাহমুদউল্লাহদের ব্যাটে চড়ে ভালো কিছুর আশাই করতে পারে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads