আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্ম এউইন মরগানের। পারিবারিক সূত্রে ছেলেবেলাই ক্রিকেটে হাতেখড়ি তার। খেলেন আয়ারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক সব ধরনের ক্রিকেটে। আয়ারল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও খেলেছেন তিনি। তবে টেস্ট ক্রিকেট খেলার তীব্র বাসনা নিয়ে ২০০৯ সালে আয়ারল্যান্ড জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিয়ে ইংল্যান্ডের ভেলায় ভাসেন মরগান। প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে দীেয়া অধিনায়ক মরগান বলেছেন, ‘আল্লাহ আর আইরিশ সৌভাগ্য সঙ্গে ছিল বলেই শিরোপা জিতেছি।’
ইংলিশদের হয়ে নিয়মিত খেলতে খেলতে একসময় ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্বও পান তিনি। মরগানের অধীনে ইংল্যান্ড ২০১৫ বিশ্বকাপে কিছুই করতে পারেনি। চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে বাদ হয়ে যায় গ্রুপ পর্ব থেকেই। কিন্তু তাতেও পিছপা হননি তিনি। তখন থেকেই ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসে দল গোছাতে শুরু করেন এই আইরিশ। চার বছর পর সেই পরিকল্পনা এবার সফল। বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে নিউজিল্যান্ডকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচে হারিয়ে এখন চ্যাম্পিয়ন হলো ইংল্যান্ড। মরগানকে নিয়ে এখন আনন্দে মাতোয়ারা গোটা ব্রিটেন। যেই কাজটা (বিশ্বকাপ এনে দীেয়া) ঘরের ছেলেরা (আগের অধিনায়করা) কখনো করে দেখাতে পারেননি, বাইরের এক ছেলে এসে সেটা করে দিয়েছেন- মরগানকে প্রশংসায় ভাসানো তাই অমূলক কিছু নয়।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মরগানকে জিজ্ঞেস করা হয় আইরিশ সৌভাগ্যই কি তার দলকে বিশ্বকাপ এনে দিল? দ্বিমত পোষণ করেননি মরগান। তবে আইরিশ সৌভাগ্যের সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহও যে তাদের পাশে ছিল সে কথাও মুখ ফুটে স্বীকার করেন তিনি, ‘আমি আদিল রশিদের সঙ্গে আইরিশ সৌভাগ্য নিয়ে কথা বলছিলাম। সে আমাকে বলল আল্লাহও অবশ্যই আমাদের সঙ্গে আছেন। এটাই আমাদের দলের মধ্যে অটুট বন্ধনের কথা জানান দেয়। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে এসেছি, কিন্তু এবার আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি।’
এছাড়া মরগান বলেন, ‘ম্যাচটিতে কী ছিল না? আমি উইলিয়ামসনের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। যে স্পিরিট, যে লড়াইটা তারা করেছে! সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি জানতাম ম্যাচটা কঠিন হবে, তাই বলে এতটা! এটা আমাদের চার বছরের জার্নি। আমরা এ জার্নিতে নিজেদের উন্নতি করেছি, বিশেষ করে শেষের দুই বছরে। শেষতক শিরোপা জিতেছি মানে আমরা বিশ্বসেরা। মাঠে খেলোয়াড়রা নিজেদের শান্ত রেখেছে, নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। প্রয়োজনের সময়ে নিজেদের সেরা চরিত্রটা দেখিয়েছে।’ সুপার ওভারের ব্যাটিং জুটি ও বোলার প্রসঙ্গে মরগান বলেন, ‘যেহেতু স্টোকস তেমন ক্লান্ত ছিল না, তাই বাটলারের সঙ্গে তাকেই পাঠানো হয়েছিল। এ দুজনের সঙ্গে কৃতিত্ব দেব জোফরা আর্চারকেও। সে যত খেলছে ততই উন্নতি করছে। এ মুহূর্তে পুরো বিশ্ব যেন আমাদের হাতের মুঠোয়।’