• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
আমি নিজেও খেলোয়ার ছিলাম

সংগৃহীত ছবি

ঢালিউড

আমি নিজেও খেলোয়ার ছিলাম

  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৯

মিশা সওদাগর। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে খলচরিত্রের সুপারহিট অভিনেতা। সম্প্রতি এক আড্ডায় জানিয়েছেন তার অজানা অনেক কথা। সঙ্গে ছিলেন রবিউল কমল

আপনার অভিনয়ের শুরুটা কীভাবে?

বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়ের (১৯৮৬-তে) একটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতায় আমি নায়ক হিসেবে ফার্স্ট হয়েছিলাম। তখন থেকেই আমার অভিনয়ের জগতে আসা। শুরুতে নায়ক হিসেবে দুটি ছবিও করেছিলাম। কিন্তু নায়কের চাইতে আমি খলনায়কের ভূমিকাকে প্রাধান্য দিয়েছি। তাই চলচ্চিত্র জগতে খলনায়ককেই পেশা হিসেবে বেছে নেই।

অভিনয়ে আপনার সুদীর্ঘ ক্যারিয়ার। এই সাফল্যের সূত্র কী?

করুণাময় আল্লাহতায়ালার অশেষ আশীর্বাদ আমার অভিনয় জীবনে সাফল্যের প্রধান কারণ বলে আমার বিশ্বাস। তদুপরি অভিনয় এবং অভিনয় জীবনের প্রতি সচেতনতা, নিঃস্বার্থতা, বিশ্বাস, আন্তরিকতা সবমিলিয়েই এই ৩৩ বছর ছবির জগতে একটানা কাজ করেছি। কখনো পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে একটু পিছুপা হইনি। এসবই আমার সফলতার অন্যতম কারণ বলে আমি মনে করি।

আপনার প্রিয় লেখক কারা?

আমি অনেকের বই পড়ি। বাংলাদেশের লেখকের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রাহমান ও হুমায়ূন আহমেদের বই বেশি পড়া হয়।

নতুনদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

অভিনয়ে যে কেউ আসতে পারে। তবে যারা অভিনয়ে আসতে আগ্রহী তাদের মধ্যে বিশেষ কোনো গুণ না থাকলে আসার দরকার নেই। এতে তার সময় নষ্ট হবে। তাই আমি বলব, অভিনয় করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু কারো চেহারা, কণ্ঠ বা ফ্যাশনে যদি বিশেষ কিছু না থাকে তাহলে এখানে এসে কোনো লাভ নেই। অভিনয় বাদ দিয়ে তাকে অন্যকিছু করার সিদ্ধান্ত দেব আমি। তবে কেউ যদি ভাবে তার মধ্যে বিশেষ কিছু আছে, তাকে দিয়ে নতুন কিছু করা সম্ভব। তাহেল সে অভিনয়ে আসতে পারে। তাই অভিনেতা হতে হলে বা এই জগতে আসতে হলে আগে নিজেকে আবিষ্কার করতে হবে

আমাদের চলচ্চিত্র যে অবস্থায় রয়েছে এখান থেকে উত্তরণের উপায় কী বলে আপনি মনে করেন?

এখন চলচ্চিত্রের খুব বাজে অবস্থা। এখান থেকে বের হতে সবার আগে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে চলচ্চিত্রে পৃষ্ঠপোষকতার খুবই অভাব। সিনেমা হলগুলোও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কাই এই মুহূর্তে প্রোডিউসারদের ফিরিয়ে আনতে হবে। সেটা শুধু সরকারের দ্বারাই সম্ভব। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে কোনো ছবি পাইরেসি হবে না, বিভিন্ন হলে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। তাহলে প্রোডিউসারদের টাকা উঠে আসবে। এমন হলে কিন্তু তারা ইনভেস্ট করবে। এ ছাড়া বিশ্বায়নের যুগে মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। এটা গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষ কী চাই, মানুষের রুচি কোন দিকে সেটা খুঁজে বের করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন ছেলেমেয়েদের অভিনয়ের সুযোগ দিতে হবে, নতুন স্ক্রিপ্ট রাইটারদের সুযোগ দিতে হবে। নতুন ডিরেক্টদের সঙ্গে পুরাতন ও মেধাবী ডিরেক্টদের বসে আলোচনা করতে হবে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সামগ্রিক তৎপরতা খুবই দরকার। সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে সরকারকে।

দেশের বাইরের ছবি আমদানির ব্যাপারে মন্তব্য কী?

এটা আসলে শিল্প সংস্কৃতির বাইরে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ব্যাপার। যারা ব্যবসায়ী তারা এটা নিয়ে আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবে। বাইরের ছবি আমাদের দেশে পণ্য হিসেবে আসছে। এ জন্য সরকার নীতিমালা করেছে। আমি মনে করছি, এ কারণে আমরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না। ছবি আমদানি-রপ্তানি হোক তবে এ জন্য যেন আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

অনেকের অভিযোগ মানুষ বাংলাদেশি চ্যানেল দেখছে না, কিন্তু কেন?

এটা দারুণ প্রশ্ন। আসলে উন্নত সংস্কৃতি সবসময় মানুষকে আকর্ষণ করে। যখন মানুষ পোশাক পরে তখন চেষ্টা করে তার পোশাকটা যেন ভালো কোনো ব্রান্ডের হয়। এই যে ভালো ব্রান্ডের প্রতি মানুষের আকর্ষণ এটাই হলো উন্নত সংস্কৃতি বা রিচ কালচার। এটাকে কোনোভাইে অস্বীকার করা যাবে না। তা ছাড়া বিশ্বায়নের যুগে সবকিছু মানুষের হাতের নাগালে। তাই এসব চ্যানেল বন্ধ করেও আমরা আমাদের দেশীয় চ্যানেল দেখাতে পারব না। দর্শক টানতে হলে আমাদের কনটেন্ট আরো ভালো হতে হবে। আমাদের রিচ কালচার প্রেজেন্ট করতে হবে।

আপনার অনুপ্রেরণা কারা?

আমাকে ওভাবে কেউ অনুপ্রেরণা দেইনি। আমার এক প্রকৌশলী বন্ধুর পরামর্শে ফরম কিনে জমা দিয়েছিলাম। তারপর তো সিলেক্ট হয়েই গেলাম। কিন্তু তখন আমার কোনো অতীত অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে আমি কখনো ভয় পেতাম না। এভাবেই এগিয়ে এসেছি। আলাদাভাবে কারো অনুপ্রেরণা লাগেনি। তবে অমিতাভ বচ্চনের অভিনয় দেখে মনে হতো আমিও পারব।

কাদের অভিনয় আপনার ভালো লাগে?

এখন যারা অভিনয় করছেন তাদের মধ্যে শাবনূরের অভিনয় অনেক ভালো লাগে। যাদের অভিনয় বেশি ভালো লাগত ওনারা বেঁচে নেই। তারা সবাই আমার শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাদের মধ্যে গোলাম মোস্তফা, হুমায়ুন ফরিদী, রাজ্জাক, সালমান শাহ উল্লেখযোগ্য।

এত ব্যস্ততার মাঝে আপনার অবসর কাটে কীভাবে?

আমি অবসরে খেলা দেখি। ক্রিকেট এবং ফুটবল আমার প্রিয় খেলা। এগুলো দেখেই আমার অবসর কাটে। আমি নিজেও খেলোয়াড় ছিলাম। ফুটবলে রিয়াল আমার প্রিয় টিম।

প্রিয় খেলোয়াড় কারা?

এই তালিকা অনেক বড়। তবে এগিয়ে রাখব ভারতের বিরাট কোহলি, অস্ট্রেলিয়ার স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার, নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন। আর ফুটবলে তো এখন অনেকেই ভালো খেলছে এদের মধ্যে লিওনেল মেসি, রোনালদো, গ্রিজম্যান ও এমবাপের খেলা বেশি ভালো লাগে।

মেসি নাকি রোনালদো কে সেরা?

খুবই কঠিন প্রশ্ন। তবে আমার উত্তর হলো মেসি সেরা খেলোয়াড় এবং রোনালদো সেরা স্ট্রাইকার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads