• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
অর্ধশত চিকিৎসক আ.লীগ বিএনপির মনোনয়ন চান

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত অর্ধশত চিকিৎসক

সংরক্ষিত ছবি

নির্বাচন

একাদশ জাতীয় নির্বাচন

অর্ধশত চিকিৎসক আ.লীগ বিএনপির মনোনয়ন চান

কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত পেয়েছেন অনেকেই 

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ১৮ আগস্ট ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত অর্ধশত চিকিৎসক। দলীয় প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে তারা রাজনীতির মাঠে আছেন অনেক দিন ধরে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সংসদীয় এলাকায় গিয়ে জনসংযোগ, সামাজিক কর্মকাণ্ড, শুভেচ্ছা বিনিময় ও গরিবদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের কথাও জনগণকে জানাচ্ছেন অনেকে।

মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলীয় পেশাজীবী সংগঠনের নেতা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ‘স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ’ (স্বাচিপ) ও বিএনপি সমর্থিত ‘ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ (ড্যাবের) কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান নেতাও তারা। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের’ (বিএমএ) বর্তমান ও সাবেক নেতারাও আছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের এ তালিকায়।

কেউ কেউ স্বাস্থ্য অধিদফতর, মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রজীবন থেকে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া ও পেশাগত জীবনে খ্যাতিমান চিকিৎসকরাও আছেন মনোনয়ন দৌড়ে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদেও আছেন অনেকে। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে অনেকে মৌখিক আশ্বাস ও ‘সবুজ সঙ্কেত’ পেয়েছেন মনোনয়ন পাওয়ার। মনোনয়ন পেতে দলের শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগ ও তদবির অব্যাহত রেখেছেন তারা।

চিকিৎসকদের সংগঠন ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন অন্তত ২৫ চিকিৎসক। তাদের মধ্যে চলতি জাতীয় সংসদের আট সংসদ সদস্যও আছেন। বিএনপি থেকেও মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত দুই ডজন চিকিৎসক। দুই দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের জন্য তাদের অবদান, দুর্দিনে দলের পাশে থাকা ও নিজের সংসদীয় এলাকায় জনপ্রিয়তার বিষয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ের কাছে নিজেদের অবস্থান নানাভাবে তুলে ধরে আসছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে তাদের তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডও বাড়ছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। অনেকের এলাকায় পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি থাকায় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে দুই দলের সূত্র উল্লেখ করেছে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী চিকিৎসকরা সংসদীয় এলাকায় সামাজিক, রাজনৈতিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বেশি জড়িত। ইতোমধ্যে তারা মনোনয়নের কথা স্থানীয় ভোটদাতাদের বিভিন্নভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় দলটি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের এ তুলনায় এলাকায় তৎপরতা কম। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশ নেওয়া সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের মধ্যেও তলে তলে দলটির নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে। তবে দলটির প্রকাশ্য অবস্থান, খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যাওয়া।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পেতে পারেন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থীরা, এমন ইঙ্গিত দলের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজনের বক্তব্য থেকে ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে। ফলে এলাকায় জনপ্রিয় ও তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন পেশাজীবী মনোনয়ন পেতে পারেন। তালিকায় চিকিৎসকরাও আছেন। বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকেও দলের দুর্দিনে মাঠে থাকা ড্যাবের নেতাদের বিশেষ মূল্যায়নের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। কেন্দ্রের সমর্থনের পাশাপাশি দুই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তৃণমূল নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাচ্ছেন কুমিল্লা-৭ আসন থেকে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এলাকায় জনসংযোগ করে আসছি। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব।’ বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান খান টাঙ্গাইল-৩, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. দীন মো. নুরুল হক কিশোরগঞ্জ-২, স্বাচিপ সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান রাজবাড়ী-২, স্বাচিপ মহাসচিব ডা. এমএ আজিজ ময়মনসিংহ-৪, দলের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাদের সম্পর্কে দলের শীর্ষ পর্যায়ের মূল্যায়ন ইতিবাচক বলে জানায় দলীয় সূত্র।

বিএমএর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম-৩, স্বাচিপ সহসভাপতি ডা. রউফ সরদার নরসিংদী-৪, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. শহীদ উল্লাহ খুলনা-৬, ডা. নজরুল ইসলাম পিরোজপুর-৩, বিএমএর খুলনা বিভাগীয় সহসভাপতি ডা. বাহারুল আলম খুলনা-২, ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

অন্যদিকে ময়মনসিংহ-৪ থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি দলে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। এক এগারোতে দলের দুর্দিনেও তিনি মাঠে ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত দল নির্বাচনে অংশ নিলে ও আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব। এলাকায় জনসংযোগ করছি।’

ড্যাবের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার ঢাকা-১৭, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মীর ফাওয়াজ হোসাইন চট্টগ্রাম-৫, সহসম্পাদক (স্বাস্থ্য) ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুু গাজীপুর-৩, দলের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ডা. মাজহারুল ইসলাম দোলন নোয়াখালী-৪, ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. শহিদুল আলম সাতক্ষীরা-৩, গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. সৈয়দ মঈনুল হাসান সাদিক গাইবান্ধা-৩, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি ডা. শাহাদৎ হোসেন চট্টগ্রাম-৯, বিএনপির পরিবার কল্যাণ সম্পাদক ডা. মহসিন জিল্লুর করিম চট্টগ্রাম-১৪, সহসম্পাদক (পরিবার কল্যাণ) ডা. রফিকুল কবির লাবু পিরোজপুর-২, দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন ময়মনসিংহ-৭, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডা. শহিদ হাসান বরিশাল-৬, ড্যাবের সহসভাপতি ডা. মাজহারুল আলম গাজীপুর-২ থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads