• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
নির্বাচন পরিস্থিতি জানলেন কূটনীতিকরা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নির্বাচন

গুলশানে ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠক

নির্বাচন পরিস্থিতি জানলেন কূটনীতিকরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকের কাছে নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন রাজনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। কানাডা, ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (আইআইডি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) উদ্যোগে গুলশানের একটি হোটেলে এ বিষয়ে অনেকটা রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার এই সভায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইডেন, নরওয়ে, জাপানের কূটনীতিকরা ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, বিকল্পধারার শমসের মবিন চৌধুরী কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। এ ছাড়া ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ বিভিন্ন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, একাদশ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব কিছু করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। তা সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সব রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যম নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মূলত নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে যা প্রয়োজন এখানে আমরা সে বিষয়ে বলেছি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা সত্ত্বেও আমরা নির্বাচনে এসেছি। নির্বাচনে আসার পর দেখছি আমাদের জার্নি হচ্ছে লং হিল জার্নি, আমরা আরো নিচের দিকে যাচ্ছি। আমরা আশা করি বাকি দিনগুলোয় নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নেবে। এ পর্যন্ত জনগণের কোনো আস্থা সৃষ্টি হয়নি। বস্তুতপক্ষে বিভিন্ন কারণে নির্বাচনটি নির্বাচনের আগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। এটা আরো খারাপের দিকে যেতে পারে।

খসরু আরো বলেন, ‘আজকে নির্বাচিত সরকার নাই, নির্বাচিত সংসদ নাই, নির্বাচিত প্রতিনিধি নাই। দেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এখানে সমস্যা হচ্ছে পুরো নিয়ন্ত্রণটা সরকারের হাতে, নির্বাচন কমিশনের হাতে নিয়ন্ত্রণ নাই। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে?’

ডা. দীপু মনি বলেন, নির্বাচনটা আরো ভালো করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য হলো গত ১০ বছরে ও তার আগে ২০০৭-৮ সালেও নির্বাচনী পুরো প্রক্রিয়ায় যে ধরনের সংস্কার করা হয়েছে তার প্রত্যেকটি ছিল আওয়ামী লীগের উদ্যোগ। ওইসব সংস্কারের মাধ্যমে আজ একটা সিস্টেম দাঁড়িয়েছে, যার মাধ্যমে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে স্বাধীনভাবে নির্বাচন করানো। প্রতিষ্ঠানটির যে সাংবিধানিক দায়িত্ব তা পালনে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে এবং সেটি করে যাচ্ছে।

তবে ভেতরে কী আলোচনা হয়েছে তা জানতে চাইলে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ভেতরে আলোচনার কথা এখানে বলবার কথা না। তবে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।’

শারমিন মুরশিদ বলেন, এই ধরনের আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যেহেতু এখানে নির্বাচনের সব অংশীদার উপস্থিত ছিলেন, সেই জায়গাটা থেকে বলা যায়, সকলে তাদের জায়গা থেকে তাদের সমস্যাগুলো উত্থাপন করেছেন।

পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে কী বলেছেন— এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলো যেন একটু সহনশীল হয়। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। সেই ভূমিকাটা শক্ত করার জন্য সরকারি দল কমিশন থেকে দূরত্ব বজায় রাখবে। আমাদের বক্তব্য ছিল নির্বাচন কমিশনের ইন্ডিপেনডেন্স প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো তার থেকে দূরত্ব রক্ষা করবে।’

সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে যে জিনিসটা উঠে এসেছে তা হলো আগামী নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যেসব অর্জন আছে সেই অর্জনগুলোকে ম্লান করতে পারে। যেটা আলোচনায় উঠে এসেছে, এইটুকুই আমি বুঝতে পেরেছি।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads