• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
প্রয়োজন সুষ্ঠু নীতিমালা

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮

সম্পাদকীয়

রাজধানীতে গণপরিবহনের নৈরাজ্য

প্রয়োজন সুষ্ঠু নীতিমালা

  • প্রকাশিত ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

গত বছর সড়ক পরিবহন আইন অনুমোদন দেওয়া হলেও রাজধানীতে গণপরিবহনের নৈরাজ্য বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এই নৈরাজ্য বন্ধে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি নতুন কোনো নীতিমালা। দীর্ঘদিন ধরে নগরীতে চলমান সিটিং সার্ভিসের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া, যত্রতত্র তোলা হচ্ছে যাত্রী।

এসব কারণে ইদানীং আবারো সড়কে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে বোধ হচ্ছে। কয়েকদিন ধরেই পত্রিকার পাতা উল্টালেই সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র জনমনে পুনরায় আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সহমর্মিতা, সরকারের অঙ্গীকার, সড়ক পরিবহন আইন অনুমোদন— এসব কিছু কী তবে বৃথা যাবে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত তিন কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে— ওভার স্পিড, ওভার টেকিং, যান্ত্রিক ও রাস্তার ত্রুটি। সমস্যা যাই হোক, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস না পাওয়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণ। চালকের লাইসেন্স প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে যানবাহনের ফিটনেস সনদ, গাড়ির অনুমোদন, সড়কের ত্রুটি, সঠিক তদারকির অভাবসহ সব ক্ষেত্রেই রয়েছে গলদ। দুর্ঘটনা রোধে সরকারিভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার্যকর হয় না। এক্ষেত্রেও রয়েছে সমন্বয় ও পরিকল্পনার অভাব।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে জনসাধারণের দাবি ছিল গণপরিবহনকে শক্তিশালী করা। আর গণপরিবহন সেক্টরকে সমৃদ্ধ করতে হলে রাজধানীতে বসবাসকারী ধনী-গরিব বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে বিবেচনায় নিয়ে সিটিং এবং লোকাল উভয় সার্ভিসই সহজলভ্য হওয়া প্রয়োজন। ২০১৭ সালেই এ-সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির প্রস্তাবিত পাঁচ দফার অনুসরণ রাজধানীতে গণপরিবহনে নৈরাজ্য বন্ধে জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেখানে বলা হয়েছে, কোম্পানিভিত্তিক কিছুসংখ্যক গাড়ি সিটিং ও বাকি গাড়ি নন-সিটিং করা; সিটিং সার্ভিসের গাড়ির রঙ আলাদা থাকা; সম্পূর্ণ রুট কয়েকটি ধাপে বিভক্ত করে এর ভাড়া ধাপভিত্তিক অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা; এবং সিটিং সার্ভিসের জন্য সীমিত সংখ্যক স্টপেজ নির্ধারণ করা বাঞ্ছনীয়।

জানা গেছে, উপরোক্ত সুপারিশগুলো মালিকপক্ষের কথা বিবেচনায় নিয়ে আরো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সমন্বয় কমিটির কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল তখন বিআরটিএ। যদি বিআরটিএ আবারো মালিকপক্ষের সুবিধাকে প্রাধান্য দেয়, তাহলে সিটিং কিংবা লোকাল কোনো সার্ভিসই যাত্রীকল্যাণ বয়ে আনবে না। বন্ধ হবে না গণপরিবহনের নৈরাজ। এ অবস্থায় গত বছর পাস হওয়া নতুন সড়ক পরিবহন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং তার সঠিক প্রয়োগ দেশবাসী দেখতে চায়। পাশাপাশি একটি সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে রাজধানীতে গণপরিবহনের নৈরাজ্য বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে নগরবাসী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads