• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
র‌্যাগিং : জুনিয়রের কান ফাটালো সিনিয়ররা!

ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষা

র‌্যাগিং : জুনিয়রের কান ফাটালো সিনিয়ররা!

  • জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ জুলাই ২০১৯

জাহাঙ্গীনরগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গণরুমে মুরগী হতে অস্বীকৃতি জান‍ালে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে একই হলের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭ ব্যাচ) কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

গত মঙ্গলবার মধ্যরাত ১ টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের থাকার নির্ধারিত জায়গা গণরুমে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার ফয়সাল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের (৪৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দায়ের করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১২.৩০ টার দিকে গণরুমে যায় ৪৭ ব্যাচের মিরাজ হাসান শিহাব, সারোয়ার শাকিল, মাহিন, বাদশা ও নীরবসহ প্রায় ৩০-৩৫ জন সিনিয়র শিক্ষার্থী। সেখানে গিয়ে সারোয়ার শাকিল (ইতিহাস বিভাগ) এই সাইটে ফয়সাল আলমকে ডেকে নেয়। পরে তাকে তার নাম পরিচয় দিতে বলে। ফয়সাল আলম শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় বিভাগের নামের সঠিক উচ্চারণ করতে দেরি হয়। এক পর্যায়ে তাকে আবার পরিচয় দিতে বলা হলে সে ভয় পেয়ে গুলিয়ে ফেললে শাকিল তাকে পিঠে মারে ও গ্রিলের রডে ঝুলিয়ে রাখে। এ সময় পাশে বসে থাকা মিরাজ হাসান শিহাব (মার্কেটিং বিভাগ, ৪৭ ব্যাচ) ফয়সালকে কাছে ডেকে নিয়ে মুরগী হতে বলে। ফয়সাল অসুস্থর কথা বলে মুরগী হতে অস্বীকৃতি জানালে কানে জোরে থাপ্পড় দেয় শিহাব। এতে অজ্ঞান হয়ে যায় ফয়সাল। পরে ঘটনা জানাজানি হলে তার (ফয়সাল) সহপাঠী ও অভিযুক্ত দু’তিন জন শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তুু পরে কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার আবার তাকে সাভারের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকের ভাষ্যমতে কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হয়েছে। সুস্থ হতে মাস খানেক সময় লাগবে। অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা ফয়সাল সিঁড়ি থেকে পরে গিয়েছে বলে ডাক্তারকে চিকিৎসা করাতে বলে।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী ফয়সাল আলম বলেন, আমার ঠান্ডাজনিত অসুস্থতা ছিল। সিনিয়র ভাইয়েরা আমাকে পরিচয় দিতে বললে বিভাগের নামের উচ্চারণ ছোট করে করি। পরে তারা আমাকে গ্রিলের রডে ঝুলিয়ে রাখে। এরপর মুরগী হতে বলে। আমি মুরগী হতে অস্বীকৃতি জানালে কানে থাপ্পড় মারে। পরে অজ্ঞান হয়ে যাই। আর কিছু বলতে পারি না।

অভিযুক্তরা ঘটনায় দায় স্বীকার করে বলেন, অনাকাঙ্খিতভাবে ঘটনাটি ঘটেছে। কথা না শোনায় তার (ফয়সাল) গায়ে হাত তুলেছি। সে অসুস্থ ছিল টের পাই নি। বিষয়টি এত মারাত্মক হবে তা আমরা বুঝতে পারিনি। এ ঘটনার জন্য আমরা দু:খিত। ভবিষ্যতে আর এরকম টা হবে না।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.ফরিদ আহমেদ জানান, বিষয়টি জেনেছি। এধরনের ঘটনা সত্যি মেনে নেওয়ার মতো নয়। হলে জরুরি মিটিং ডাকা হয়েছে। আবাসিক শিক্ষক, ওয়ার্ডেনসহ সবাইকে নিয়ে বসবো। সবার সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যাতে কেউ ভবিষ্যতে এরকম কাজ করতে সাহস না পায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads