• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
রাবিতে ১৪ হাজার ছাত্রীর জন্য ২৫ শৌচাগার

ফাইল ছবি

শিক্ষা

রাবিতে ১৪ হাজার ছাত্রীর জন্য ২৫ শৌচাগার

  • রাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রায় ১৪ হাজার ছাত্রীর (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত) জন্য একাডেমিক ভবনে শৌচাগার আছে মাত্র ২৫টি। অর্থাৎ প্রতি ৫৬০ জন ছাত্রীর জন্য শৌচাগারের রয়েছে মাত্র ১টি। আবার এসব শৌচাগার কেবল অফিস চলাকালীন খোলা থাকে। অন্য সময় ছাত্রদের শৌচাগার ব্যবহার করা ছাড়া ছাত্রীদের কোনো উপায় থাকে না। অপর্যাপ্ত শৌচাগারের কারণে ছাত্রীদের প্রতিনিয়ত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।

ছাত্রীদের অভিযোগ, একদিকে অপর্যাপ্ত শৌচাগার, অন্যদিকে সেগুলোর নোংরা পরিবেশের কারণে তারা হর-হামেশাই সমস্যায় পড়ছেন। জরাজীর্ণ অবস্থা, ময়লা-দুর্গন্ধ, নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি তো আছেই। তার ওপর শৌচাগার ঠিকমতো পরিষ্কার না করায় দুর্গন্ধ কমনরুমেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে নারীদের জরুরি মুহূর্তগুলোতে মারাত্মক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

রাবির কলা অনুষদের ছাত্রীরা জানান, শহীদুল্লাহ কলাভবনে এ অনুষদের ১২টি বিভাগের প্রায় দুই হাজার ছাত্রী প্রতিদিন ক্লাস করছেন। এসব ছাত্রীর জন্য চারতলা ভবনের তেতলায় একটি কমনরুমে মাত্র ২টি শৌচাগার রয়েছে। তারা যে তলায়ই ক্লাস করুন না কেন, শৌচাগারে যাওয়ার জন্য তাদের তেতলায়ই দৌড়াতে হয়। শুধু এ ভবনই নই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি একাডেমিক ভবনেই ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত ও পরিচ্ছন্ন শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি একাডেমিক ভবন ঘুরে দেখা যায়, মমতাজ উদ্দীন কলাভবনে শৌচাগার রয়েছে ২টি, শহীদুল্লাহ কলাভবনে ২টি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভবনে ৪টি, সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী ভবনে ২টি, সত্যেন্দ্রনাথ বসু ভবনে ২টি, ড. কুদরত-এ-খুদা ভবনে ২টি, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবনে ৫টি, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনে ২টি, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ভবনে ২টি এবং আইবিএ ভবনে ২টি শৌচাগার রয়েছে। কৃষি অনুষদ ভবনে ছাত্রীদের জন্য পৃথক কোনো শৌচাগার নেই। এছাড়া ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনের বর্ধিত অংশে একটি কমনরুম নির্মাণাধীন রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ শৌচাগারের বেহাল দশা। কমোডগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সেগুলো নোংরা লালচে রং ধারণ করেছে। কিছু শৌচাগারের দরজার সিটকিনি নষ্ট ও বেসিন ভাঙা। পানি জমে মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে এসব শৌচাগার এখন সংক্রামক রোগ-জীবাণুর উৎসে পরিণত হয়েছে। কমনরুমে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বিরাজ করছে।  কমনরুমে ছাত্রীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত আসবাবপত্র নেই। যেগুলো আছে সেগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কৃষি অনুষদ ভবনে ক্লাস করেন ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। বলেন, এ ভবনে আমাদের জন্য পৃথক কোনো শৌচাগার বা কমনরুম নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের একসঙ্গে শৌচাগার ব্যবহার করতে হয়। এজন্য আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মিম্মা রহমান বলেন, অফিস চলাকালীন ছাড়া কমনরুম বন্ধ থাকে। তখন ছাত্রদের শৌচাগার ব্যবহার করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। ফলে অনেক ছাত্রী শৌচাগারে যেতে চান না। বিশেষ করে জরুরি মুহূর্তগুলোকে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। কমনরুমে যে শৌচাগারগুলো রয়েছে সেগুলো ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার করা হয় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ  বলেন, একাডেমিক ভবনগুলো অনেক পুরাতন। আগের ছাত্রীদের অনুপাতে সেগুলোতে শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছিলো। এখন ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ায় নতুন করে শৌচাগার নির্মাণের প রিকল্পনা রয়েছে। কয়েকটি ভবনের বর্ধিত অংশে ছাত্রীদের জন্য কমনরুম নির্মাণাধীন রয়েছে। এছাড়া ছাত্রদের শৌচাগারগুলোর মধ্যে কয়েকটি ছাত্রীদের জন্য নির্ধারিত করে দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads