• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
করোনার প্রভাবে কর্মহীন শ্রমজীবি মানুষ

শহরের কালুন দোকন এলাকায় কাজ না পাওয়া শ্রমজীবি মানুষ।

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

কর্মসংস্থান

করোনার প্রভাবে কর্মহীন শ্রমজীবি মানুষ

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ মার্চ ২০২০

পিএমখালীর ছনখোল থেকে ভোরে শহরের কালুর দোকান কাজের সন্ধানে এসেছেন রহিম উদ্দিন (৪০) আগেও এখানে আসতেন কাজের সন্ধানে প্রায় দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে কাজ পাওয়া গেলেও গত কয়েক দিন ধরে কাজ মিলছেনা। তিনি জানান, আমরা ২০ থেকে ৩০ জন প্রতিদিন এখানে আসি কাজের সন্ধানে আগে নিয়মিত কাজ পেলেও এখন কাজ মিলছেনা এতে পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতেও সমস্যা হচ্ছে।

এ সময় কাজের সন্ধানে আসা ঝিলংজার আলী মিয়া (৪২) বলেন, আমরা বাসাবাড়ির মেরামত, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা,ঘাষ কাটা,মাটি ভরাট সহ যে কোন কাজ করি দৈনিক সর্বনিম্ন দৈনিক ৭০০ টাকা দিয়ে কাজ করি আবার অনেক সময় ৬০০ টাকা দিয়েও করি। আমার ছেলেরাও টমটম চালায়, ঘরে উপযুক্ত মেয়ে আছে তারা সবাই লেখাপড়া করে তাই অনেক খরচ এখন কাজ না থাকায় আমরা খুব সমস্যার মধ্যে পড়েছি। সরকারি কর্মকর্তারা মাস শেষ হওয়ার আগেই বেতন পায়, দেশে যতদূযোর্গ আসুন উনাদের কোন সমস্যা নেই যত সমস্যা সব আমাদের মত গরীব মানুষের।

একই ভাবে শহরের রুমালিয়ারছড়া বাজারে কাজের সন্ধানে আসার নুরুল আলম বলেন, আমি রংয়ের কাজ করি তবে কয়েক দিন ধরে কাজ না থাকায় এখন অন্য কাজ ধরতে এখানে এসেছি এখন বাজারেও দেখি কোন কাজ নেই তাই মারাত্মক  সমস্যায় পড়েছি জানিনা কি করবো।

শ্রমজীবি মানুষের অর্থ সংকট বিষয়ে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক অজিত দাশ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারনে এখন সব কিছু লকডাউন। সাধারণ মানুষ তেমন ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। আবার যাদের বাসাবাড়িতে কাজ ছিল তারাও কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কাজও বন্ধ তাই শ্রমজীবি মানুষ সমস্যায় আছে এটা সত্য। আমার মতে জেলার অতি দরিদ্র মানুষের একটি তালিকা করে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা করা জরুরী।

এদিকে করোনার প্রভাবে শুধু শ্রমজীবি মানুষ নয় রিক্সা চালক, টমটম চালক এমনকি ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরাও অর্থ সংকটে পড়েছে বলে জানান তারা।

এ ব্যপারে শহরের পাহাড়তলীর সড়কের টমটম চালক আজম বলেন,আগে এই টমটমের যাত্রী ছিল বেশ এখন মানুষ বিনাপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছেনা তাই রাস্তায় ভাড়া কম। ফলে আগে দিনে কমপক্ষে ১০০০ টাকা ভাড়া পেলেও গত ২ দিন ধরে ৪০০ টাকাও পাচ্ছিনা। এতে গাড়ী ভাড়াও দিতে পারছিনা। এখন বাড়িতে নিয়ে যাব কি? খাব কি?। আর আমাদের বাড়িতে এমন কোন টাকাও জমা নেই কাজ ছাড়া চলতে পারবো। এদিকে টেকপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, আমি কলাতলী এলাকার একটি হোটেলে চাকরী করতাম হবে কয়েক দিন আগে সরকারি ভাবে পর্যটক আসা বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের হোটেলও বন্ধ হয়ে গেছে তাই আমাদের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। পুরু মাসের বেতনও দেয়নি। তাই এখন ঘরে বসে আছি,আমরা গরীব মানুষ কিছু না করলে খাব কিভাবে এখন দেখছি ছোটখাট কাজও মিলছেনা। জানিনা এখন কি করবো।

এদিকে শ্রমজীবি মানুষের কল্যাণে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া সহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads