• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
নবীন শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ান

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

নবীন শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ান

  • আরাফাত শাহীন
  • প্রকাশিত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

একজন শিক্ষার্থী যখন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ করে, তখন তাকে ভর্তি পরীক্ষার মতো এখানে এসেও নানামুখী পরীক্ষা এবং প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভয়ঙ্করভাবে র‍্যাগিং সিস্টেমটা চালু আছে। অনেকে একে নতুনদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার মাধ্যম মনে করেন এবং অনেক বড়ভাই এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে জঘন্য কর্মকাণ্ড করে থাকেন। দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে র‍্যাগিং অবশ্যই একটি ভয়ঙ্কর অপরাধ। এটি একধরনের মানসিক নির্যাতন, যা করে একটা শ্রেণির মানুষ পৈশাচিক তৃপ্তি পেয়ে থাকে। একজন নবীন শিক্ষার্থী যখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেই এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, তখন স্বভাবতই তার ওপর মানসিক চাপ পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তার মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়।

র‍্যাগিংয়ের মতো অপরাধ বন্ধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে এই অপরাধ আগের তুলনায় অনেকটাই কমে এসেছে। তবে আমরা নিজেরা যদি সচেতন না হই এবং এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে না পারি, তাহলে কিছুতেই র‍্যাগিং বন্ধ করা যাবে না। সবার আগে আমাদের সচেতন হতে হবে। একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, নতুন যে শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করল সে আমাদেরই ভাই কিংবা বোন। বাড়িতে আমরা যেমন নিজেদের ভাই-বোনকে আগলে রাখি, এখানেও তাদের সেভাবে আগলে রাখতে হবে। আজ যদি আমি অন্যের ভাই-বোনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করি, তাহলে আগামীতে যখন আমার নিজের পরিবারের কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করবে, তখন তার সঙ্গে অন্য কেউ খারাপ আচরণ করবে।

একজন শিক্ষার্থী যখন অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে, তখন এখানে এসে সে নিজেকে নিঃসঙ্গ বোধ করে। কারণ একেবারে অপরিচিত এক পরিবেশে এসে হঠাৎ সবাই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। বন্ধু-বান্ধবহীন নিঃসঙ্গ অবস্থায় সে যেন নিজেকে একা না ভাবে, সে জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে তার পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থী নতুন নতুন এসে থাকার জায়গা খুঁজে পায় না। কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই পর্যাপ্ত পরিমাণ আবাসনের ব্যবস্থা নেই। সুতরাং এমন সমস্যার উৎপত্তি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা যারা এখানে পরিচিত হয়ে গেছি, তাদের উচিত হবে এসব শিক্ষার্থীকে থাকার মতো জায়গা জোগাড় করে দেওয়া।

আমি যখন প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি, তখন আমার মধ্যে এক ধরনের জড়তা কাজ করত। কারো সঙ্গে তেমন মিশতে পারতাম না, ভালোভাবে কথা বলতে পারতাম না। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য নবীনদের প্রতি আমার পরামর্শ হলো, এখানে বিভিন্ন ধরনের সংগঠন রয়েছে; নিজের দক্ষতা বাড়াতে হলে এসব সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। তবে এমন সংগঠন থেকেও দূরে থাকা কর্তব্য, যাতে করে নিজের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সুতরাং সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। নতুন শিক্ষার্থীদের বন্ধু হিসেবে তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা সব শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর জন্য একান্ত প্রয়োজন।

 

 

লেখক : শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads