• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
গণমাধ্যমের কাজ জীবন্ত বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করা : আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

গণমাধ্যমের কাজ জীবন্ত বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করা : আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

  • মামুন মুস্তাফা
  • প্রকাশিত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

দৈনিক বাংলাদেশের খবর আয়োজিত ‘সুবর্ণ রেখায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক আপন ভুবনে গত ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের খবরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই অধ্যাপক গণমাধ্যমের ভূমিকাসহ দেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন, সংকট, রাজনীতি, শিক্ষা, দুর্নীতি ইত্যাদি নানা বিষয়ে কথা বলেন। কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, এমনকি বর্তমান নেতৃত্ব প্রসঙ্গেও। সেসব আলাপচারিতার মধ্য থেকে দেশের এই প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বিশেষ সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন দৈনিক বাংলাদেশের খবরের সহকারী সম্পাদক মামুন মুস্তাফা

 

প্রশ্ন : দৈনিক বাংলাদেশের খবর আয়োজিত ‘সুবর্ণ রেখায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক আপন ভুবনে আপনাকে স্বাগত। আপনি বর্তমান সময়, দেশ-কাল, মানুষ প্রভৃতি বিষয়ে কি ভাবছেন? এটি আমরা জানতে চাই।

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক : এই যে আপনারা লিখেছেন ‘সুবর্ণ রেখায় বাংলাদেশ’ এটি যথার্থ হয়েছে। আমরা এখন সুবর্ণ রেখাতেই আছি। দেশ এখন যথাযথ নেতৃত্বের ভেতর দিয়েই যাচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পর দীর্ঘ সময় আমরা অন্ধকারে ছিলাম, দেশ উল্টো রথের চাকায় চলছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নেওয়ার পর, তিনি বিরোধী দলেই থাকুন আর ক্ষমতায় থাকুন, আমরা সঠিক নেতৃত্ব পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ তথা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্নপূরণে আমরা কাজ করার প্রয়াস পাচ্ছি।

কিন্তু কিছু অনিয়ম, দুর্নীতি তো রয়েছেই; যে কারণে আমরা বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকি। তবে বাঙালি পরিশ্রমী জাতি, সাধারণ মানুষ কষ্টসহিষ্ণু, বিপরীতে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের অন্যায়-দুর্নীতি আমাদের আটকে রাখতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাবই। আর এ জন্যই আমাদের বন্ধবন্ধুর দেখিয়ে যাওয়া পথ অনুসরণ করতে হবে। তার আদর্শকে লালন করতে হবে। তবেই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারব, সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।

 

প্রশ্ন : আপনি যে কথাগুলো বললেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমার দু’একটি বিষয় জানার আছে। যেমন ধরুন, উন্নয়ন আমরা দেখছি সূচকভিত্তিক। আর্থ-সামাজিক নানা ক্ষেত্রেই আমাদের উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে, কিন্তু এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন বলতে যা বোঝায়, সেই উন্নয়ন কি আমাদের ঘটছে?

আরেফিন সিদ্দিক : আগেই বলেছি, আমরা সঠিক নেতৃত্বে রয়েছি। ফলে বিভিন্ন ইস্যুতেই সূচকে যেমন উন্নয়ন ঘটেছে তেমনি টেকসই উন্নয়নও সম্ভব। আর সে জন্য বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন; তার সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে।

 

প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শের কথা আমরা জানি বা বলে থাকি, বর্তমান আওয়ামী লীগের হাতে তার সেই আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে মনে করেন?

আরেফিন সিদ্দিক : এর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারাই ভালো দিতে পারবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে পিতার অনেক কিছুই বাস্তবায়নে সচেষ্ট। যেমন— স্কুলগুলোতে মিড ডে চালু করা, প্রাইমারি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা নির্ধারণ করা। এগুলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। কিন্তু তিনি তা করে যেতে পারেননি। কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন ও আদর্শগুলোকেই পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদেরও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করতে হবে। আমাদের জাতীয়তা বোধে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।

এখানে আমি দুটি ঘটনা উল্লেখ করব। ১৯৯৬ সালে যখন দীর্ঘকাল পরে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ নিয়ে হয়তো বাসায়ও পৌঁছতে পারেননি; বাংলাদেশ টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার শুরু হলো। সে সময় আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী পরদিন এসে বলছে, স্যার আমাদের এত বড় উঁচুমাপের একজন নেতা ছিল, তা আমাদের জানাই ছিল না। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার এক মহিলা সহকর্মীর ৭ম-৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে ওই ভাষণ শুনছে আর কাঁদছে। ওই ছেলে আমার সহকর্মীকে বলছে, মা তোমরা এই দেশপ্রেমিক লোকটাকে মেরে ফেললে। যে তোমাদের জন্য, এ দেশের জন্য এত কিছু করল তাকে তোমরা মারতে পারলে! পঁচাত্তরের পর এতটা বছর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার এক প্রকার নিষিদ্ধই ছিল। যা বাজানো হতো তা নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন কিংবা মৃত্যু দিনে মাইকে বাজাত। সুতরাং আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে ছড়িয়ে দিতে হবে।

 

প্রশ্ন : জাতীয়তা বোধে উদ্বুদ্ধ হতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চর্চার বিকল্প তো কিছু নেই।

আরেফিন সিদ্দিক : বঙ্গবন্ধুকে যত আমরা লালন করব ততই আমরা মানবিক হব, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হব। এখন তো আমাদের জাতীয়তা বোধ সৃষ্টি হচ্ছে না। দেশপ্রেম বলে কিছু নেই। এখন শুধু অর্থ প্রেম, সম্পদ প্রেম, আত্ম প্রেম। জাতীয়তা বোধ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে স্কুল-কলেজ। সেখানে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। আজকাল স্কুল-কলেজগুলোতে সেসব হচ্ছে কোথায়। মাদরাসাগুলোতে তো নয়-ই। আগে আমরা স্বকণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেতাম, জাতীয় পতাকাকে স্যালুট জানাতাম। আমাদের ভেতরে এখনো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ধারণা প্রোথিত। পতাকা উত্তোলনের কোনো নিয়ম নেই জাতীয় কোনো দিবস ছাড়া। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দিবস লাগে না। ব্যক্তি তার আনন্দ-উৎসবঘন মুহূর্তে বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারবে এবং তারা তা করেও থাকে।

এখন তো ঘর ভাড়া নিয়ে স্কুল-কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ও চলছে। একটা লাইব্রেরি পাওয়া যাবে না। ছেলেমেয়েরা শিখবে কোথা থেকে। জার্মানিতে দেখেছি পার্কের ভেতরেও লাইব্রেরি; যার ইচ্ছা হচ্ছে বই পড়ছে। আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য—সবকিছু মিশে আছে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শে। সুতরাং তার চর্চাই হবে বাঙালি জাতীয়তা বোধ জাগ্রত করার একমাত্র পন্থা।

 

প্রশ্ন : সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকবে না। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা পদ্ধতির পরিবর্তনে আমাদের শিশু শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ভিত্তি গঠনে এটি কতখানি সহায়ক হবে বলে মনে করেন?

আরেফিন সিদ্দিক : এই পদ্ধতি আরো আগে চালু করা উচিত ছিল। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাতেই গলদ রয়েছে। এখন চলছে জিপিএ-৫ পাওয়ার শিক্ষা। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে না আমাদের ছেলেমেয়েরা। বঙ্গবন্ধু যেটি চেয়েছিলেন। তিনি কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের শিক্ষা রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই আমরা তাকে হত্যা করলাম। ওই রিপোর্টে ছিল কি? অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা হবে। প্রাইমারি পর্যন্ত একমুখী শিক্ষা হবে। যেখানে শিশু শিক্ষার্থীরা বাংলাভাষা জানবে, নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিখবে, খেলাধুলার মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করবে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে তারা উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেকে গড়ে তোলার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাও গ্রহণ করবে। বর্তমানে ওই শিক্ষাব্যবস্থাকেই ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। আগে আমরা যখন পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় মুরুব্বিদের সালাম করতাম, তারা বলতেন ‘মানুষ হও’। এখনকার অভিভাবকরা বলেন, ‘পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া চাই’। আমাদের এখন ভালো মানুষ সৃষ্টির শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন।

এ ক্ষেত্রে যারা ভালো মানুষ তৈরি করবে, সেই স্কুলের শিক্ষকদেরই তো মান-মর্যাদা আমরা রাখিনি। না আছে তাদের সামাজিক মর্যাদা, না আছে আর্থিক নিরাপত্তা। একটা পরিবারে যদি কয়েকটা ছেলে থাকে, তার কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা থাকলে, আর একটি যদি স্কুল শিক্ষক হয়; তার পরিচয়ও আমরা দিতে চাই না। বলি ও আছে আপাতত একটা স্কুলে, চেষ্টা করছে অন্য কিছু করার। আমাদের এই মানসিকতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ওই স্কুল শিক্ষকের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা আমরা ভালো মানুষ তৈরি করতে ব্যর্থ হব।

 

প্রশ্ন : অল্প কিছুদিন হলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ পেলেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ইউজিসির ক্ষমতা সীমিত। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি?

আরেফিন সিদ্দিক : আবারো বঙ্গবন্ধুর কাছেই ফিরে যেতে হয়। বঙ্গবন্ধু যখন ইউজিসি গঠন করেন তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছিল মাত্র ৬টি। তবু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিলেন। তাদের সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নিক। তাই তিনি ইউজিসির চেয়ারম্যান করলেন একজন শিক্ষাবিদকে। শিক্ষামন্ত্রীও একজন শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষা সচিব করলেন অধ্যাপক কবীর চৌধুরীকে। এখন শিক্ষকরা যদি নিজেদের স্বার্থ ভুলে গিয়ে আমলাদের সঙ্গে যোগসাজশ গড়ে, তাহলে তো কিছু করার থাকে না।

 

প্রশ্ন : এখন তো ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে অভিন্ন নীতিমালা চাচ্ছে। সরকার এটা অনুমোদনও দিয়েছে। আবার শিক্ষকদের একাংশ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানাচ্ছেন।

আরেফিন সিদ্দিক : এখন ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জেলা পর্যায়ের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত দিক কি এক হবে? সেখানে শিক্ষক কি একই মানের আমরা পাব? এ রকম নানা ব্যবধান বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে থাকবে। অভ্যন্তরীণ নানা সংকটও এসে যাবে। তাহলে এ ক্ষেত্রে অভিন্ন নীতিমালা কীভাবে সম্ভব! এটা আমাদের বুঝতে হবে।

 

প্রশ্ন : দীর্ঘ ২৮ বছর পর আমরা নির্বাচিত ডাকসু পেলাম। কিন্তু সেটি তো কার্যকর নয়।

আরেফিন সিদ্দিক : এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। আর ডাকসু নির্বাচনই তো বৈধ নয়।

 

প্রশ্ন : বর্তমান সময়ে আমরা রোহিঙ্গা সংকটের বেড়াজালে আবদ্ধ। এ থেকে উত্তরণ কীভাবে সম্ভব?

আরেফিন সিদ্দিক : আরো কিছুটা সময় লাগবে। কয়েক দিন আগে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, সময় লাগবে। তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

 

প্রশ্ন : একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমার মনে হয়েছে এবং এক সম্পাদকীয়তেও লিখেছি, চীন চাইলে এর দ্রুত সমাধান সম্ভব।

আরেফিন সিদ্দিক : হ্যাঁ, চীন তো একটা ফ্যাক্টর বটে। তাদের কিছু স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ও রয়েছে। তবে তারা এখনই কিছু বলবে বলে মনে হয় না।

 

প্রশ্ন : আর সম্প্রতি আসামের এনআরসি নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে?

আরেফিন সিদ্দিক : না, এটা আমাদের জন্য এখনই কোনো চাপ সৃষ্টি করবে না। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যারা নাগরিকত্ব হারিয়েছেন, তারা এখন আদালতের শরণাপন্ন হবেন। ওই প্রক্রিয়া শেষ করতে আরো ৮-১০ বছর লেগে যাবে। তত দিনে ভারতেই কত পরিবর্তন আসবে। তা ছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তাতে তারা বিরূপ কোনো কিছু করবেন বলে মনে হয় না।

 

প্রশ্ন : আপনি দীর্ঘদিন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। সাংবাদিকতার আগামী কেমন দেখছেন?

আরেফিন সিদ্দিক : সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন মিডিয়ার জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সাংবাদিকতা। তবু বলব গণমাধ্যমেই রয়েছে সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা। ইতিবাচক সাংবাদিকতাই গণমাধ্যমের প্রধান শক্তি। একজন সাংবাদিককে সৎ ও নৈতিকতার সঙ্গে ইতিবাচক সংবাদের প্রজেকশন করতে হবে। তার মাধ্যমেই একজন দুর্নীতিবাজ আমলা, একজন নীতিবর্জিত রাজনীতিকের কথা জনসমক্ষে আসতে হবে। অসততা, অনিয়ম, দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারে গণমাধ্যম। গণমাধ্যমকে সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। এখন সমাজ থেকে এই অপরাজনীতি, অপসংস্কৃতি, দুর্নীতি দমাতে হলে গণমাধ্যমকে আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে পৌঁছে দিতে হবে। গণমাধ্যমেরই কাজ জীবন্ত বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করা।

 

প্রশ্ন : আপনার কাছে সর্বশেষ জিজ্ঞাসা আগামীর বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান?

আরেফিন সিদ্দিক : আগামীর বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। শুরুতেই বলেছি বাঙালি কষ্টসহিষ্ণু। বিদেশেও আমরা ভালো করছি। কিছু অসৎ লোকের জন্য হচ্ছে না। কিন্তু তা বাধা হতে পারবে না। গণমাধ্যমেরই কাজ হওয়া উচিত সৎ ও অসতের পার্থক্য নিরূপণ করা। যে রাজনীতিক কষ্ট করে কাজ করছেন তার কথাও আসতে হবে। আবার দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা-শিল্পপতির কথাও আসতে হবে। সাধারণ মানুষ জানবে, বুঝবে—তাকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করাই হচ্ছে সংবাদপত্রের কাজ। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের ভেতর দিয়ে আগামীর বাংলাদেশ সুখী, সমৃদ্ধশালী হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads