• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
বাস ভ্রমণে বিড়ম্বনার অবসান হোক

সংগৃহীত ছবি

মুক্তমত

বাস ভ্রমণে বিড়ম্বনার অবসান হোক

  • প্রকাশিত ১৩ জানুয়ারি ২০২১

সড়কপথে দেশের সিংহভাগ মানুষ যাতায়াত করে। নানা শঙ্কা আর ভয়ভীতি নিয়ে মানুষকে গন্তব্যে পাড়ি জমাতে হয়। বিভিন্ন অনিয়ম আর অসতর্কতার ফলে প্রতিদিন সড়কে শত প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে। পত্রিকার পাতা উল্টাতেই বীভৎস সব লাশের ছবি চোখে পড়ে। সড়কপথ এমনিতেই নানারকম সমস্যায় জর্জরিত। তার মধ্য গাড়ি চালকদের যাত্রী উঠানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দূরপাল্লার বাসগুলোতে এই সমস্যা কম হলেও আন্তঃজেলায় চলাচল করা যানবাহনে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে থাকে। চালকদের এমন প্রতিযোগিতার ফলে সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে বই কমছে না। বাস স্টপেজে যাত্রী উঠানোর জন্য মাঝেমধ্যে যাত্রা পথে দুই চালকের মাঝে প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায়। চালকদের এমন আচরণে যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যাপক হারে বিঘ্নিত হচ্ছে। দুই চালক যখন প্রতিযোগিতা করে, তখন যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। এদিকে বাস টার্মিনাল বা স্টপেজে যাত্রী হয়রানির তো অন্ত নেই। আপনি কোনো জরুরি কাজে বের হয়েছেন, এমন অবস্থায় বাস টার্মিনালে গেছেন। আর তখনি হয়তো একটি গাড়ির সময় শেষ, সেটি ছেড়ে দিয়েছে। আপনার যতবড় ক্ষতি হোক না কেন, আপনাকে সেই গাড়িতে যেতে দেওয়া হবে না। এটা তো মাত্র একটি উদাহরণ দিলাম। এই যানবাহন যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তারা যাত্রী স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। বাস স্টপেজের অধিকাংশটিতে টয়লেট সুবিধা নেই। যেগুলোতে আছে সেগুলো আবার মানসম্মত না, তদুপরি আবার টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু এই টাকাগুলো যায় কোথায়? এ দিয়ে যে টয়লেটের কোনো সংস্কার বা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয় না, তা টয়লেটগুলো দেখলেই বোঝা যায়।

আন্তরুটে গাড়ির ভেতরে যারা সুপারভাইজার থাকে, তাদের অধিকাংশ স্বল্প শিক্ষিত অথবা নিরক্ষর। যাত্রীর সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে সেটাও তারা জানে না। এজন্যই প্রায়ই অনেক ভদ্রলোককে তাদের হাতে হেনস্তার শিকার হতে হয়। প্রয়োজনের তুলনায় যাত্রী উঠানোর সংস্কৃতি তো আছেই। গাড়ির ফিটনেস ও জায়গা না থাকলেও হেলপার যাত্রী উঠাবে আর সুপারভাইজার বলবে ভেতরে যান। মাঝেমধ্যে অবস্থা এমন বেগতিক হয় যেন প্রত্যেক যাত্রীর পিঠে যাত্রী দাঁড়িয়ে, শ্বাস ফেলছে ঘাড়ের ওপর। এমনি কিছু বাস পাবেন যাদের অবস্থা দেখে মনে হবে তারা যেন বাড়ি থেকে যাত্রী ডেকে এনে গাড়িতে তুলবে। যাত্রীদের সময়ের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র খেয়াল থাকে না। আন্তঃজেলায় চলাচল করা বাসগুলোর রুট বিভ্রান্ত তো আছেই। আপনাকে এক জায়গার কথা বলে গাড়িতে উঠাবে আর নামিয়ে দেবে আরেক জায়গায়। এমন বিব্রতকর অবস্থায় যাত্রা পথে যাত্রীদের হরহামেশাই পড়তে হচ্ছে। আর এত বিধিনিষেদের পরেও গাড়ি চালানোর সময়ে চালকদের মোবাইল ফোনে কথা বলা বন্ধ করাই যাচ্ছে না। এসব সমস্যা সমাধানে পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ একেবারেই উদাসীন। এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগও তাদের নেই। তাহলে কে দেখবে সাধারণ যাত্রীদের এই হয়রানি! সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর ইত্যাকার প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।  দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাত্রী-অধিকার নিশ্চিত করুন। সেই সঙ্গে সড়কপথ হোক নিরাপদ ও যাত্রীদের সব বিড়ম্বনার অবসান হোক-সেই প্রত্যাশা করি।

লেখক : আব্দুর রউফ

নিবন্ধকার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads