• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
দিল্লিতে সহিংসতায় নিহত ২৩

সংগৃহীত ছবি

ভারত

দিল্লিতে সহিংসতায় নিহত ২৩

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে উত্তাল ভারত। রাজধানী দিল্লিতে চারদিন ধরে নজিরবিহীন সংঘাত চলে। গতকাল বুধবার সকালে আরো ৫ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। দাঙ্গায় আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২শ’র কাছাকাছি।

সহিংস পরিস্থিতির মধ্যেই সিএএ’র পক্ষে আন্দোলনকারীরা দিল্লির একটি মসজিদে আগুন দিয়েছে। এ সময় মসজিদটিতে জাফরান রঙের পতাকাও বেঁধে দেন তারা।

এদিকে নয়াদিল্লির সহিংসতার পেছনে বিজেপির স্থানীয় নেতা কপিল মিশ্র নাটের গুরু হিসেবে কাজ করেছেন বলে দেশটির বেশকিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। এসবের মধ্যেই বিহারে মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী প্রস্তাব বিধানসভায় পাস হয়েছে। এনআরসি নিয়ে অনেকদিন ধরেই দেশটিতে আন্দোলন চলছে। এনআরসির জন্য যুগ যুগ ধরে দেশটিতে বাস করা অনেকেই বিতাড়িত হওয়ার শঙ্কায় আছেন। গত এক দশকের মধ্যে চলমান ঘটনাবলিকে ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

এসব নিয়ে সহিংসতার চারদিন পর অবশেষে সরব হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল বুধবার বিকেলে এক টুইটবার্তায় দিল্লিবাসীকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আন্দোলনের বিষয়ে রাষ্ট্রীয় এনডিটিভি জানিয়েছে, হতাহতদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান উভয়েই রয়েছেন। এদিকে দিল্লি পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর প্রচুর সদস্য নগরীর দাঙ্গাকবলিত এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন।

এদিকে দেশটির অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, গুজরাট দাঙ্গার স্মৃতি ফেরাচ্ছে দিল্লি। 

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, বুধবার সকালে নগরীর চান্দবাগ এলাকায় সিএএ’র সমর্থক ও বিরোধীদের পরস্পরের দিকে পাথর নিক্ষেপের মধ্যেই আইএএফ, সিআরপিএফ ও দিল্লি পুলিশের বহু সদস্য সেখানে অবস্থান নেন। সর্বশেষ খবরে মৃত্যুসংখ্যা লাফিয়ে বাড়ার পাশাপাশি সহিংসতা চলছিল। নগরীর দাঙ্গাকবলিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কোথাও

কোথাও অস্বস্তিকর নীরবতা নেমে আসে। বুধবার সকালে এই এলাকাগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো দেখাচ্ছিল বলে প্রত্যক্ষদশী সাংবাদিকরা জানান।

সকালে এক টুইটে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পরিস্থিতিকে ‘ভয়ানক’ বলে বর্ণনা করে দাঙ্গাকবলিত এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতভর কেজরিওয়ালের বাসভবনের সামনে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বহু লোক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। তারা সহিংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য দিল্লি পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে।

মঙ্গলবার দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল দিল্লির মুসলমান অধ্যুষিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিবিসি বলছে, দিল্লিতে এমন সহিংসতা গত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি।

উত্তেজনা যেন না ছড়ায়, সেজন্য বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে সংঘাতের খবর প্রচারের ক্ষেত্রে সাবধান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস করার পর থেকে ভারতের মুসলমানরা ক্ষোভে ফুঁসছে। এই আইন বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছিল তারা।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি আইনের পক্ষে কর্মসূচি নিয়ে নামলে দেখা দেয় সংঘাত। রোববার সংঘাত শুরুর পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম ভারত সফর শুরু করেন। সেদিনই নিহত হন এক পুলিশ কনস্টেবলসহ চারজন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে, কেননা ট্রাম্পের সফর চাপা পড়ে যাচ্ছে সহিংসতার খবরের কাছে।

নিহতদের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত চারজনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন মুসলমান; তারা হলেন রিকশাচালক শহিদ (২৬) ও দোকানি মোহাম্মদ ফোরকান (৩২)। অন্য দুজন হিন্দু; তারা হলেন পুলিশ কনস্টেবল রতন লাল (৪২) ও বিপণন কর্মকর্তা রাহুল সোলাঙ্কি (২৬)।

সহিংসতা দমনে ব্যর্থতার জন্য পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপক সমালোচনা চলে। এনডিটিভি বলে, আগের দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যথেষ্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবারও বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষকারীদের তুলনায় অনেক কম পুলিশই দেখা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ পুলিশ কর্মকর্তারা তুলেছেন বলে খবর প্রকাশ হলেও না ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়েক।

সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করায় সোমবারই দিল্লির একাধিক মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবারও জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরী, জোহরি এনক্লেভ ও শিব বিহার স্টেশন বন্ধ রাখা হয়। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।

জয় শ্রীরাম স্লোগানে মসজিদে আগুন, মিনারে টাঙানো হলো পতাকা : সিএএ’র পক্ষে আন্দোলনকারীরা দিল্লির একটি মসজিদে আগুন দিয়েছে। এ সময় মসজিদটিতে জাফরান রঙের পতাকাও বেঁধে দেন তারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াইরের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দিল্লির অশোক নগরে অবস্থিত একটি মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকে। শুধু তাই নয়, তারা জাফরান রঙের পতাকাও বেঁধে দেন মসজিদটিতে। সাধারণত হনুমান পতাকা জাফরান রঙের হয়ে থাকে।

এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রানা আইয়ুব নামে এক ব্যক্তি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে এ ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কর্তৃপক্ষের দ্বারা সত্যায়িত হওয়ার পর এই ভিডিওটি আবার পোস্ট করা হলো। এই ভিডিও দিল্লি থেকে করা। কিছু লোক মসজিদের ওপরে উঠে ভাঙচুর চালায় এবং জাফরান রঙের পতাকা উড়িয়ে দেয়।’

নাটের গুরু বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র : নয়াদিল্লির সহিংসতার পেছনে বিজেপির স্থানীয় নেতা কপিল মিশ্র নাটের গুরু হিসেবে কাজ করেছেন বলে দেশটির বেশকিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। একটি ভিডিওতে বিজেপির এই নেতাকে দিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিএএ বিরোধী যে বিক্ষোভ চলে, সেই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের তিন দিনের মধ্যে হটিয়ে দিতে পুলিশকে আল্টিমেটাম দিতে দেখা যায়।

একই সঙ্গে বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে না দেওয়া হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুমকিও দেন তিনি। তার এই হুমকির পরদিন রোববার নয়াদিল্লির উত্তর-পূর্বে ব্যাপক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট, মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে।

দেশটির অনেকেই বিজেপির এই নেতাকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। জবাবে বুধবার এক টুইট বার্তায় বিজেপির এই নেতা বলেন, যারা কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী বুরহান ওয়ানী এবং আফজাল গুরুকে সন্ত্রাসী মনে করেন না; তারাই আমাকে সন্ত্রাসী বলছেন। যারা ইয়াকুব মেমন, উমর খালিদ এবং শারজীল ইমামের মুক্তির জন্য আদালতে যান; তারাই আমাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। হিন্দিতে করা টুইটের শেষে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’ জুড়ে দেন কপিল মিশ্র।

সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এবং উসকানিমূলক বার্তা ছড়ানোর জন্য দেশটিতে পরিচিত বিজেপির এই নেতা রোববার উত্তর-পূর্ব দিল্লির মৌজপুর এলাকায় নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন। ওই এলাকার পাশে জাফরাবাদে নাগরিকত্ব আইনে বিরুদ্ধে গত শনিবার রাত থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন শত শত মানুষ।

বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র জাফরাবাদ এবং মৌজপুর এলাকা থেকে বিক্ষোভকারীদের যে কোনো মূল্যে হটিয়ে দিতে দিল্লি পুলিশকে আল্টিমেটাম দেন। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় ধরে ধরে পেটানো হবে বলেও হুমকি দেন তিনি। তার এই হুমকির কয়েক ঘণ্টা পর মৌজপুরে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক ও বিপক্ষের লোকজনের মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

দেশটির বিরোধীদলীয় নেতারা কপিল মিশ্রের উসকানি এবং হুমকির তীব্র সমালোচনা করেন। দিল্লির প্রাণঘাতী সহিংসতার জন্য অনেকেই বিজেপির এই নেতাকে দায়ী করেছেন। এমনকি বিজেপিদলীয় সংসদ সদস্য ও দেশটির সাবেক ক্রিকেট তারকা গৌতম গম্ভীরও কপিল মিশ্রের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যদের দিল্লির একটি হাসপাতালে দেখতে গিয়ে গৌতম গম্ভীর বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা বিজেপি, কংগ্রেস অথবা আম আদমির নেতা হলেও তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটা দিল্লির বিষয়, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়।

চলতি মাসে অনুষ্ঠিত দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। দেশটিতে মুসলিমবিদ্বেষী বার্তা ছড়ানোর জন্য অনেকের কাছে পরিচিত তিনি। দুই মাস আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হয়ে যাওয়ার পর তার মুসলিমবিদ্বেষী বার্তা ছড়ানোর মাত্রা বেড়ে যায় তার। এমনকি সিএএবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে আখ্যা দিয়ে গুলি করে হত্যার স্লোগানও দেন তিনি।

এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব বিহারে পাস : বিহারে মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী প্রস্তাব বিধানসভায় পাস হয়েছে। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জির (এপিআর) সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী বিধানসভায় পাস করেছে নীতীশ কুমারের সরকার। প্রস্তাবের মূল বিষয়, রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করা হবে না এবং বিহার সরকারের শর্ত মানলে তবেই এনপিআর কার্যকর করা হবে।

শান্তি চেয়ে মোদির টুইট : সহিংসতার চারদিন পর অবশেষে সরব হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার বিকেলে এক টুইটবার্তায় দিল্লিবাসীকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। টুইট করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমার ভাই ও বোনদের দিল্লিতে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায়ের আবেদন জানাচ্ছি। এ ছাড়া আমার দপ্তর পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। আশা করি সবাই শান্তি বজায় রাখবেন।’

শান্তি চেয়ে টুইট বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দীর্ঘ পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে। পুলিশসহ অন্য নিরাপত্তা বাহিনী শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে তৎপর। শান্তি ও সম্প্রীতি আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় আবেগ। এখন সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ দিল্লিতে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads