• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শ্রমশক্তি

মোংলা বন্দরে ড্রেজিং

এক যুগে শুরু হয়নি তিন বছরের কাজ

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ২৫ এপ্রিল ২০১৮

২০০৬ সালের ১ জুলাই থেকে চলে আসছে পশুর চ্যানেল আউটার বারে ড্রেজিং শীর্ষক প্রকল্পের কাজ। ২০০৯ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয় প্রকল্পটির মেয়াদকাল। তিন বছরের কাজ শেষ হয়নি ১২ বছরেও। ৫৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে চলমান এ প্রকল্পে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ টাকা। মাঠ পর্যায়ে কাজ হয়েছে শূন্য শতাংশ। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে বাতিল করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাবটি ইতোমধ্যেই পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা ডেকেছে। আগামী মাসের শুরুতে এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জুয়েনা আজিজের সভাপতিত্বে আগামী মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিতব্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

প্রকল্পটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের পরেই দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর মোংলায়। তবে বন্দর এলাকায় গভীরতা কম থাকার কারণে বেশি ড্রাফটের জাহাজ এখানে আসতে পারে না। এ অবস্থায় বন্দরের অ্যাংকরেজ এলাকায় ৯ মিটারের অধিক ড্রাফটের জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে পশুর চ্যানেলের আউটার বার এলাকায় ড্রেজিং করতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পের আওতায় ৩১ লাখ ৯৬ হাজার ঘনমিটার মাটি ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা ছিল। এর ফলে বন্দর এলাকায় নাব্য বাড়বে বলে আশা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার অনুমোদন পেয়েছিল ২০০৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। প্রকল্পের ড্রেজিং কাজ শেষ করতে ছয়বার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে প্রথম পাঁচবার কেউ দরপত্রে অংশ নেয়নি। শেষবার প্রাক্কলিত দরের চাইতে ৯২ শতাংশ বেশি দরপ্রস্তাব পাওয়ায় কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি।

বাস্তবায়নে গতি না থাকায় ২০০৯ সালেই প্রকল্পটি বাতিলের প্রস্তাব দেয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে প্রস্তাবটি একনেকে উপস্থাপন হয় ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর। তবে বাস্তবতার নিরিখে মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্প সংশোধনের সুপারিশ করে একনেক। এ লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠালে কয়েকবার পিইসি সভার আয়োজন করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

দুই মন্ত্রণালয়ের চিঠি চালাচালিতে চলে যায় আরো সাত বছর। এ সময়ে মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বারে ড্রেজিং শীর্ষক পৃথক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৭১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। নতুন প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দরে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

তা ছাড়া মনিটরিং, মডেলিং ও হাইড্রোলিক বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে খননকাজ পরিচালনা করা হবে। ১ কোটি ৩ লাখ ৯৫ হাজার ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি পশুর চ্যানেলে নেভিগ্যাবিলিটি স্টাডিও করা হবে। কাজের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ গুণের বেশি।

এ অবস্থায় আগে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটি কার্যত অকার্যকর হয়ে গেছে। এডিপির তালিকায় রয়েছে প্রায় একই নামের দুই প্রকল্প। এসব বিষয় বিবেচনায় প্রকল্পটি বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিতে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিকরুর রেজা খানম বলেন, নানা কারণে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ায় পশুর চ্যানেল খনন করা জরুরি। এ চ্যানেলে অনেক জাহাজও ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার করার সক্ষমতা নেই। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে চ্যানেল খননের পাশাপাশি ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads