• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
চাকরি হারাতে পারেন গ্রামীণফোনের ৬০০ স্থায়ী কর্মী

লোগো গ্রামীন ফোন

শ্রমশক্তি

চাকরি হারাতে পারেন গ্রামীণফোনের ৬০০ স্থায়ী কর্মী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

দেশের বৃহত্তর মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন সাধারণ সরবরাহ কেন্দ্র (সিডিসি) নামে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পটির কার্যক্রম চালু করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু হলে প্রতিষ্ঠানটির টেকনোলজি টিমের ৬০০ স্থায়ী কর্মীকে চাকরি হারাতে হবে। গ্রামীণফোন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, গ্রামীণফোনের সিডিসি প্রকল্প রাস্তবায়ন হলে এ প্রকল্পের অধীনে প্রযুক্তিগত ও নেটওয়ার্ক-সম্পর্কিত পরিষেবাগুলো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করবে টেলিকম অপারেটরটি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মী এক-চতুর্থাংশ কমে আসবে। গ্রামীণফোনের কর্মীদের ইউনিয়নও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে এ প্রকল্পটির বিষয়ে একটি চিঠিও দিয়েছে গ্রামীণফোন। এ ছাড়া সিডিসি প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান (আরএফকিউ) করা হয়েছে।

বিটিআরসির কমিশনার রেজাউল কাদের গ্রামীণফোনের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ে অবগত থাকার কথা জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী সপ্তাহে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা হবে।

বিটিআরসির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কমিশনের নীতিমালার সঙ্গে এই টেলিকম অপারেটরের উদ্যোগ যাবে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে গত সপ্তাহে নিজের আইন ও লাইসেন্স বিভাগের কাছ থেকে আইনি মতামত চেয়েছে বিটিআরসি।

গ্রামীণফোনের কর্মীরা বলছেন, ইউনিয়ন থাকার কারণে তাদের ছাঁটাই করতে পারছে না। তাই ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে অপারেটরটি। টেকনোলজির এই টিম সবচেয়ে শক্তিশালী। তাদের বাদ দিলেই ইউনিয়ন বন্ধ হয়ে যাবে।

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর জিপির ভারপ্রাপ্ত করপোরেটবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা হোসেইন সাদাত এক বিবৃতিতে টেলিকম নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে সিডিসি প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বেশ কিছু পরিষেবার জন্য এ-সংক্রান্ত বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের কাছে কোটেশন আহ্বান করা হয়েছে, যাতে মূল্যবান গ্রাহকদের আমরা আধুনিক ও ভবিষ্যৎ উপযোগী সেবা দিতে পারি।

এ বিষয়ে জিপি একটি অনুকরণীয় মডেল চাইলেও এখন পর্যন্ত তা নির্ধারণ করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে- স্বয়ংক্রিয়, কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা, যন্ত্রপঠন প্রযুক্তি এবং বিশ্লেষণধর্মী, গ্রাহককেন্দ্র্রিক পরিকল্পনা ও আশাপ্রদ ভবিষ্যৎ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাই তাদের প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

চিঠিতে টেলিকম অপারেটরটি বলছে, তাদের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ফোরজি ও ফাইভজি প্রযুক্তির সর্বোচ্চ মানের ভয়েস ও ডেটা সার্ভিস নিশ্চিত করা। এতে প্রতিষ্ঠানটির কিছু কর্মীকে ঘরোয়া থেকে আউটসোর্সিং মডেলে স্থানাস্তর করা হবে।

আউটসোর্সিং মডেল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জিপির পিপলস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মিয়া মোহাম্মদ শফিকুর রহমান মাসুদ বলেন, অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা সেবা ব্যবহার করে সর্বোচ্চ মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে সিডিসি প্রযুক্তি গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জিপির সব কর্মী ফাইভজি সেবা শুরুর মতো নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারি। এই একই মানবসম্পদ দিয়ে থ্রিজি ও ফাইভজি শুরু করে আমরা সফল হয়েছি।

জিপির কর্মচারী প্ল্যাটফর্মের এই চেয়ারম্যান বলেন, যখন জিপির অধীনে কাজ করছি, তখন টেলিনরের অন্যান্য ব্যবসায়ও কাজ করতে প্রস্তুত আমরা। যদিও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, তবে ৬০০ স্থায়ী কর্মীর চাকরি খাবে এটি।

গত বছরের অক্টোবরে গ্রামীণফোনের কর্মচারী ইউনিয়নের (প্রস্তাবিত) প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক ও মহাসচিব মিয়া মোহাম্মদ শফিকুর রহমান মাসুদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে সিডিসি প্রকল্প বন্ধে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। জিপি কর্মচারী ইউনিয়ন জানিয়েছে, সর্বোচ্চ লাভের আশায় ২০০৮ সাল থেকে জনবল ছাঁটাই করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে জিপি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads