• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মান পরীক্ষায় লেনদেনের তথ্য পেলে জেল : হাইকোর্ট

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

মান পরীক্ষায় লেনদেনের তথ্য পেলে জেল : হাইকোর্ট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ জুন ২০১৯

হাইকোর্ট হুশিয়ারি দিয়েছেন, বাজারে কোনো পণ্যের মান নিয়ে বিএসটিআইয়ের টেস্টিং ও রিটেস্টিংয়ে যদি লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায় তাহলে জড়িতদের সরাসরি জেলে পাঠানো হবে। গতকাল রোববার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ একথা বলেন।

আদালত বলেন, আমরা জেনেছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মান পরীক্ষার সময় ডিমান্ড নিয়ে আলোচনা হয়। অভিযোগ আছে,  টেস্ট-রিটেস্টের আগে লেনদেনও হয়। এরকম খবর পেলে দুদকে না পাঠিয়ে সরাসরি জেলে পাঠিয়ে দেব। কোর্টের আদেশের কারণে রেট বেড়ে গেছে বলে শুনেছি। তাহলে দেখা যাচ্ছে, কোর্ট দুর্নীতিতে হেল্প করছে।

ভোক্তাদের জরুরি সেবা দিতে আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি হটলাইন চালু করতে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হটলাইন চালুর আগ পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার সংক্ষরণ অধিদপ্তরের একটি নম্বর (০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮), প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ৩৩৩ এবং জাতীয় হটলাইন ৯৯৯-এর মাধ্যমে ভোক্তাদের সপ্তাহের প্রতিদিন (ছুটির দিনসহ) ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা দিতে হবে। ওই দুটি নম্বর যেন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নম্বরটিও ছুটির দিনসহ ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হবে। বিষয়টি ভোক্তাদের জানানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আদালতের পূর্বের আদেশ অনুসারে ব্যাখ্যা দিতে হাজির না হওয়ায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক হাইকোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শর্তসাপেক্ষে তাকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম, বিএসটিআইয়ের পক্ষে ব্যারিস্টার এম আর হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। এছাড়া তলব আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে ব্যাখ্যা দিতে হাজির ছিলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। শুনানিকালে শুধু বিশেষ কোনো মাস বা উপলক্ষ নয়, সারা বছরই ভেজাল ও মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

শুনানির একপর্যায়ে মোহাম্মদ মাহফুজুল হক আদালতের পূর্বের কয়েকটি আদেশের পরও হাজির না হওয়ায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসময় তিনি আদালতকে বলেন, বিশেষ কোনো মাস বা উপলক্ষ নয়, সারা বছরই ভেজাল ও মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে, ভবিষ্যতে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সতর্ক থাকা হবে এবং জনবল কম থাকলে তা বাড়ানো হবে। এসব শর্তের ভিত্তিতে তাকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে ক্ষমার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় প্রমাণিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। পাশাপাশি পণ্যগুলোর বিষয়ে যথাযথ আইন অনুসারে তা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ভেজাল পণ্যের মানোন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত তা উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধ রাখার কথা বলেন আদালত। আদালতের সেই আদেশ প্রতিপালন না করায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে তলব করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত ৩ ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল রয়েছে। বিএসটিআই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ রিপোর্ট প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads