• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ওসি মোয়াজ্জেমকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ

ফাইল ছবি

আইন-আদালত

ওসি মোয়াজ্জেমকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৪ জুন ২০১৯

মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে ধারণ এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় গ্রেফতার ফেনীর সোনাগাজী থানা সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। 

আজ সোমবার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। 

আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ শুনানি করেন।

এ সময় মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলাদেশ সরকারের নবম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। সে অনুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেণির নাগরিক। যদিও একজন ওসি সরাসরি প্রথম শ্রেণির নাগরিক না,  তবে এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা আছে। দয়া করে আপনি ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দেন। ’

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম ডিভিশনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘আসামি বর্তমানে বরখাস্ত। তাই তার ডিভিশন বিষয়ে আপত্তি রয়েছে।’

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী জেল সুপারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ১২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন  ট্রাইব্যুনালে জমা দেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর ১৫ দিন পলাতক ছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম। গত ১৬ জুন দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। ১৭ জুন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন একই ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে মামালটি দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।

গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এমন অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, থানার ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছেন নুসরাত। সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ দুই হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনো তোমাকে কাঁদতে হবে।’

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওসি মোয়াজ্জেম অনুমতি ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা এবং তা ভিডিও করেন। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ওসি মোয়াজ্জেম অত্যন্ত অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষায় একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছেন নুসরাতকে। নুসরাতের বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নও করতে দেখা যায় ওসি মোয়াজ্জেমকে।

অধ্যক্ষের নিপীড়নের ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। এরপর গত ৬ এপ্রিল সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে-এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads