কথা বলো
জোবায়ের মিলন
কথা বলো—
যে কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলো।
মাছ নিয়ে কথা বলো, মাছি নিয়ে কথা বলো;
জল নিয়ে কথা বলো, স্থল নিয়ে কথা বলো;
কথা বলো।
কথা বলতে বলতে প্রস্ফুটিত হবে- কী নিয়ে কথা বলতে হয়
কী নিয়ে কথা বলতে হয় না কখনো,
কী নিয়ে কথা বললে পুণ্যে পুণ্যে ভরে ওঠে রাশিফল
কী নিয়ে কথা বললে অশুচি হয় মহাভারত।
কথা বলো—
আর কোনো বিষয়, কোনো সহপাঠী না পেলে
নিজেই নিজের সাথে কথা বলো,
যুক্তি-খণ্ডন করো প্রতি-ছায়ার সাথে।
শৈশব
রোকসানা জাহান ইপা
তুই কি আমার সঙ্গে যাবি?
বকুলতলায় ফুল কুড়াবি।
বৈশাখ মাসে ঝড়ের সময়,
কাঁচা-মিঠে গাছের তলায়।
পুকুর ঘাটে নাইতে যাব,
কলার ভেলায় পা দোলাবো।
তুই কি আমার বন্ধু হবি?
সবুজ ঘাসে ঘুরে বেড়াবি।
তেঁতুল খোসায় ভাত রাঁধবো,
চড়ুইভাতি খেলা খেলবো।
মটর কলাই পুড়িয়ে নিয়ে
কালি মেখে ভূত সাজবো।
তুই কি আমার বন্ধু হবি?
খেজুর গাছের রস খাওয়াবি।
শীতের রাতে ভাপা খেয়ে,
সকাল বেলা রোদ পোহাবি।
কানামাছি খেলতে যাব,
যা খুশি তাকে ছোঁবো।
তুই কি আমার সঙ্গে যাবি?
নাটাই সুতোয় ঘুড়ি উড়াবি।
জ্যোৎস্না রাতে ঘুরতে যাব,
গাঁয়ের পথে হোঁচট খাব।
বাঁশবাগানে হুতোম দেখে,
পেছন ফিরে দৌড় লাগাবো।
অবগাহন
পরান জহির
রোদচশমার বিপরীতে কার মুখ ভাসে? যামিনীর
বুক চিড়ে যন্ত্রণারা যখন প্রবেশ করে বৃক্ষশরীরে
ক্লোরোফিলের অবগাহনের মতো তখন তোমার
উছলগুলো ছিটকে পড়ে শ্রাবণী বৃষ্টিকণার মতো।
পৃথিবীকে কুড়িয়ে রাখি উপলব্ধিদের বুকপকেটে
শরীরে লেগে যায় গহনের দাগ-যমুনা বুকে হাসে।
ভাঙ্গা-গড়ার পৃথিবী
আদ্যনাথ ঘোষ
কোনখানে তোর বাসাডেরা
কোনখানে তোর মিলন বাসর
সবখানে আজ সুপ্ত আসন
মনের মাঝে কী সুর বাজে!
পরানের পরানপাখি কোথায় রাখি জনমদুঃখী!
কামারশালা আগুনজ্বালা হাঁপরচালা
আজ এখানে শুদ্ধ হবি
এ কোন খেলা দিবসরাতি
এ কোন মেলা প্রকৃতিতে
সব এখানে শেষ হবে আজ
ভাঙ্গা-গড়ার পৃথিবীতে।