প্রত্যয় হামিদ
বৃষ্টিবতী মেঘ
নরম নরম মেঘ
কালো কালো হয়ে ছুটে এলে মাথার উপর
রৌদ্রতপ্ত আত্মারা সব অথবা চাতক-জমিন
ছায়াবেষ্টিত হয়ে উন্মাতাল সুখে মুখর হয়ে ওঠে—
খুলে দেয় সব বন্ধ দুয়ার।
বৃষ্টিবতী মেঘের প্রসব বেদনায় চমকে ওঠে সবাই।
তাকিয়ে দেখে— ভূমিষ্ঠ হয়েছে কেবল বৃষ্টিবিন্দু নয়—
ধাতব জলবিন্দু লাখে লাখ;
তারা ভেঙে তছনছ, চুরমার করে দিচ্ছে সব—
বহুকালবেষ্টিত অভ্যর্থনা ডালি ভাসিয়ে নিচ্ছে দিগ্বিদিক!
সব গর্ভই অন্ধকার।
কিছু কিছু অন্ধকারে জন্ম নেয় অনন্ত আঁধার...
সাইয়্যিদ মঞ্জু
লুণ্ঠিত বৃক্ষ
উত্তেজনার স্ফুরণ, কালযাত্রার স্রোতে স্তিমিত
দাম্পত্যের বহতা নদী যেন উত্তাপহীন
ধুলোর আবরণে আচ্ছাদিত পরিমাপ যন্ত্র—
গভীর ভালোবাসার।
ভালোবাসা লুটে নেয় রক্তের প্রজন্ম
তুমি আমি লুণ্ঠিত বৃক্ষ
নিজের আয়নায় দেখা হয় না নিজকে
শুধু দেখি প্রতিচ্ছবি।
আয়-ব্যয়ের অংকে শুধু
চাল, ডাল, মরিচ, তেল, বিদ্যুৎ বিলের হিসাব
এই তো জীবন, এভাবে বহমান।
হাসান নাজমুল
রাজত্ব
দিনান্তে যখনই শেষ হয় খেলা
তখনই সূর্যের মতো—
সব খেলোয়াড় ফিরে যায় ঘরে,
পৃথিবীর মাঠে তখন খেলতে নামে
‘আঁধার’ নামের খেলোয়াড়;
প্রেমাসক্ত হূদয় নিয়ে—
সূর্যরশ্মি দাঁড়িয়ে থাকলে
তাকেও তাড়িয়ে দেয় নিবিড় অন্ধকার,
চারিদিকে যেন আঁধারের রাজত্ব!
আঁধারের এ রাজ্যে স্বজন হারিয়ে যায়
সতীর্থও মাড়িয়ে যায় বুকের পাঁজর,
তখন কেবলি অন্ধকার হতে ইচ্ছে হয়।
কবির হোসেন
মুখোশ
মেয়েলি জ্যোৎস্নার নগরে—
সওদা হয় একঝাঁক পাতাবাহার
দৈনন্দিন নাইওরে ফিরতি আঙিনা দ্যাখে
নিয়নের বাঁক।
আমরা দেখি অগাধ ধূলিচর।
কেননা, আর্য খোলসে অনার্য মন আমাদের।
তুলেই দ্যাখো বিতানের পণ্য
বিহার থেকে পাঞ্জাব
পাঞ্জাব থেকে উড়িষা
কিংবা—
কাবার গিলাফ ছোঁয়াদের বার্মুডায়;
কাশির সাথে গড়গড় করে
বেরিয়ে আসে সমুদ্রের পর্নোত্ত্ব।
মানুুষের ছায়াপথে কাটে মানুষের ঘ্রাণ।