• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মধ্যপ্রাচ্যে এরদোগানের ট্রাম্পকার্ড ‘খাশোগি হত্যাকাণ্ড’

সাংবাদিক খাশোগি

ছবি : সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্যে এরদোগানের ট্রাম্পকার্ড ‘খাশোগি হত্যাকাণ্ড’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৮

ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগি হত্যাকাণ্ডকে এখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ট্রাম্পকার্ড হিসেবে দেখছেন। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ‘নগ্ন সত্য’ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাতে মনে হয়েছিল সৌদি যুবরাজ সালমানকে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী করবেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার সংসদে এরদোগানের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চেয়েছেন। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র সৌদি আরব। তারপরও খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিজের দফতর থেকে একের পর এক তথ্য প্রকাশ করে ট্রাম্প এবং বিন সালমানের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি করেছেন এরদোগান। কোনো সন্দেহ নেই সিআইএ প্রধান জিনা হ্যাসপেলের এই মুহূর্তে তুরস্ক সফর বিশেষভাবে দর্শনীয়। এই হত্যাকাণ্ড যে পূর্বপরিকল্পিত এমন দাবি করে এরদোগান নিঃসন্দেহে সৌদিকে মহাচিন্তায় ফেলে দিয়েছেন।

তুরস্কের রাজনীতিবিষয়ক অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন, এরদোগান পুরো বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে জুয়া খেলতে চাইছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই ইস্যুটিকে হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছেন এটা স্পষ্ট তার ভাষণে। কারণ তিনি বিন সালমানের নাম উচ্চারণ না করলেও বলেছেন, এমন হত্যাকাণ্ড ঘটাতে উচ্চ মহলের নির্দেশনার দরকার হয়। আর সৌদি রাজতন্ত্রের কাঠামোয় এই উচ্চ মহল বলতে কাকে নির্দেশ করে তা সহজেই বোঝা যায়।

দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের ইচ্ছা, সৌদি আরবের সঙ্গে পুরনো ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং সর্বোপরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মানবাধিকার ইস্যুতে ঝামেলার বিষয়গুলো সামনে চলে আসছে। ৩৩ বছর বয়সী যুবরাজ মধ্যপ্রাচ্যে যে ইসলামের প্রতিনিধিত্ব এবং যে ক্ষমতার চর্চা করছেন এর বিরুদ্ধশক্তি হলো এরদোগানের রাজনৈতিক ইসলাম।

ভূরাজনীতিতে কাতার তুরস্কের মিত্র। সৌদি অবরোধের মুখে প্রায় এক বছর কাতারে নিয়মিত সেনা এবং খাবার সরবরাহ করেছে এরদোগান সরকার। এখন কাতারের স্বার্থে এরদোগান খাশোগি হত্যাকাণ্ডে বিন সালমানের ওপর চাপ প্রয়োগ করে বাণিজ্যের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা ও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইবেন। কারণ সৌদি আরবের ওপর রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে তুরস্ক প্রভাব বিস্তার করতে পারলে মধ্যপ্রাচ্য ব্লক এবং ইসরাইলকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে দেশটি।

ওয়াশিংটন পোস্টের বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, সিরিয়ার কুর্দি ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে চাইছে তুরস্ক। সিরিয়ায় কুর্দিদের অস্ত্র এবং অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ওয়াশিংটন এবং রিয়াদ। সিরিয়ার বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিকট ভবিষ্যতেই কুর্দিরা তুরস্কে নিজেদের ভূমির অধিকার দাবি করতে পারে। কারণ কুর্দি ও রাশিয়ার সহায়তায় বাশার আল আসাদ সরকার প্রায় সমগ্র সিরিয়া পুনরায় দখল করে নিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সৌদি যুবরাজের কাঁধে বন্দুক রেখে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতা কাঠামোতে একটা তুর্কিপন্থি পরিবর্তন চাইছেন এরদোগান। এক্ষেত্রে তাই তিনি খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত এক একটি তথ্যকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন রিয়াদকে নত করতে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads