• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

এমপিওভুক্তির দাবিতে সোমবার সকাল থেকে ‘আমরণ অনশন কর্মসূচি’ পালন শুরু করেছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ জুন ২০১৮

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির দাবিতে গতকাল সোমবার সকাল থেকে ‘আমরণ অনশন কর্মসূচি’ পালন শুরু করেছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। দাবি পূরণে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল সকাল ১০টা থেকে এ অনশন শুরু করেন টানা আন্দোলনে থাকা শিক্ষকরা। ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে।

বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত ও শপথবাক্য পাঠ করানোর মধ্য দিয়ে ‘আমরণ অনশন কর্মসূচি’ শুরু হয়। শপথবাক্য পাঠ করান ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী। শপথবাক্যে বলা হয়, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।’ স্বীকৃতি পাওয়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে এ সময় জানান।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এমপিওভুক্তির স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৫ থেকে ২০ বছর বিনা বেতনে চাকরি করছেন। অনেকের আর চাকরি আছে মাত্র ৫ থেকে ১০ বছর। এ কারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আর অপেক্ষায় না রেখে বর্তমান সরকারের মেয়াদে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

আমরণ অনশন শুরুর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা ১৫ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। আন্দোলনরতদের অভিযোগ, ‘অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, সেখানে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। এবারের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের জন্য ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে খাতওয়ারি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। বাজেট বরাদ্দে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

তথ্য মতে, গত ১০ জুন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এমপিওভুক্তির দাবিতে ও চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন তারা।

এর আগেও একই দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে নামে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন। ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনশন করার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে ফিরে যান। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে তখন টানা অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক ও কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

তথ্য মতে, সারা দেশে বর্তমানে সাড়ে সাত হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ২৪২টি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাকে। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে এখনো এমপিওভুক্ত না করায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা। বর্তমানে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads