• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
ঝাঁক বেঁধেছে ইলিশ, কমছে দামও

ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে ইলিশ

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

ঝাঁক বেঁধেছে ইলিশ, কমছে দামও

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ আগস্ট ২০১৮

আষাঢ় থেকে আশ্বিন এই চার মাস থাকে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও ইলিশের হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে একটু দেরি হলেও খবর মিলেছে ইলিশের।

বঙ্গোপসাগরে এখন ঝাঁক বাঁধতে শুরু করেছে ইলিশ।  শ্রাবণ শেষে ধরা দিতেও শুরু করেছে। বঙ্গোপসাগরের  মোহনা সংলগ্ন বিষখালী, বলেশ্বর নদী ও গভীর সমুদ্রে এখন ইলিশের জোয়ার।

আর তার ঢল নামতে শুরু করেছে বাজারে। কমছে দামও।

উপকূলীয় বরগুনা জেলার পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী, তালতলী, আমতলীসহ দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণ দুই ধরনের জেলে। এক ধরনের জেলে নদ-নদীতে মাছ ধরে, আরেক ধরনের জেলেরা ফিশিং ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকার করে।

দুই মাস আগেও বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর জেলেরা হতাশা প্রকাশ করেছিল। বলেশ্বর বিষখালীসহ উপকূলীয় নদ-নদীর ইলিশকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় লোকাল ইলিশ। যা আকারে বড় হয়, তৈলাক্ত ও সুস্বাদু হয়। আর গভীর সমুদ্রের ইলিশকে বলা হয় ফিশিং ইলিশ, যা  আকারে খুব বেশি বড় হয় না।

ইলিশের দেখা পাওয়ায় সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসি পাইকারী বাজার। বাজারটিতে সরেজমিতে দেখা যায়, জেলে, মৎস্য আড়তদার ও পাইকারদের পদচারণায় মুখরিত বিএফডিসি। ফিশিং ইলিশ ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। আর লোকাল ইলিশ ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজির ওপরে ইলিশ ৪৫ থেকে ৫৫ হাজার টাকা করে কেনাবেচা চলছে। যা কদিন আগের চেয়ে প্রায় মণে ১০-১২ হাজার টাকা কম।

বলেশ্বর-বিষখালীর জেলেরা জানান, নদ-নদীতে ইলিশ আসার যে আবহাওয়া দরকার সে আবহাওয়া এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হয়নি। একদিন কিছু সময় বৃষ্টি হলে আবার দুদিন প্রচণ্ড রোদ।  যে কারণে গত দুমাস নদীতে খুব অল্প ইলিশ পাওয়া যায়। এখন আগের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি ইলিশ পাচ্ছি। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরও ইলিশ পাবো।

সমুদ্র থেকে ফিরে আসা ফিশিং ট্রলারের জেলেরা জানান, গভীর সমুদ্রে ইলিশ থাকলেও গত এক মাসে দফায় দফায় আবহাওয়া খারাপ হওয়াতে জাল দড়ি রসদ সামগ্রীসহ ৭০  থেকে ৮০ হাজার টাকার বাজার নিয়ে সমুদ্র থেকে ফিরে আসতে হয়েছে খালী হাতে। এখন একেকটি ট্রলারে ২/৩হাজার ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। আশা করছি সামনে ইলিশ বেশি পাওয়া যাবে।  

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, গত ৩ বছর জলদস্যূ  ছিল না। যে কারণে জেলেরা সমুদ্রে সব স্থান বিচরণ করে প্রচুর ইলিশ পেয়েছে। অনেকে এত  ইলিশ দেখে শতাধিক নুতন করে ট্রলার নির্মাণ করে সমুদ্রে পাঠিয়েছে, কিন্তু এ বছর ইলিশের মৌসুমের মাঝামাঝির সময় হঠাৎ জলদস্যূর উৎপাত বেড়েছে।  যেখানে ইলিশ ধরা পড়ছে সেখানেই জলদস্যূদের হানা। যে কারণে নির্বিঘ্নে সাগরে জেলেরা ইলিশ শিকার করতে পারছে না। সে কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে।

খুলনা র‌্যাব-৬ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কমান্ডার সিপিসি এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, আমরা সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি। জলদস্যূদের অস্তিস্ত সুন্দরবনে থাকবে না।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল বলেন, জলবাযুর পরিবর্তনের কারণে ইলিশ আসা কমতে পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads