• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই

বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই

প্রতীকী ছবি

জাতীয়

জাতিসংঘের সতর্কতা

বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কয়েক বছরের নিম্নমুখী প্রবণতার পর বিশ্বব্যাপী ফের বাড়তে শুরু করেছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। গত তিন বছর ধরে এই বাড়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত তিন দশকে বন্যা, খরা, ঝড় ও তাপপ্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনে। যার ফলশ্রুতিতে বাড়ছে ক্ষুধার্ত ও অপুষ্টির শিকার মানুষের সংখ্যা।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের উদ্যোগে করা ওই প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, জলবায়ুর চরম অবস্থা বিশ্বের খাদ্য উৎপাদন ও সহজলভ্যতাকে ভয়ানকভাবে প্রভাবিত করেছে। এর কারণে একদিকে খাদ্য উৎপাদন ও সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্যবান মানুষের সংখ্যা যেমন কমছে তেমনি পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার কেনার জন্য মানুষের সময় ও সামর্থ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর যেসব দেশের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর সেসব দেশে মানুষের অবস্থা আরো ভয়াবহ। কারণ বৃষ্টিপাতের সময় বা ঋতুচক্রে পরিবর্তন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সেসব দেশের ফসল উৎপাদনে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

জাতিসংঘের ওই সংস্থাগুলোর বিশ্লেষণ বলছে, ২০১৭ সালে চরম অপুষ্টির শিকার ছিলেন বিশ্বের ৮২ কোটি ১০ লাখ মানুষ বা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রতি নয়জনের একজন। এ ছাড়া এই সময়ে পাঁচ বছরের কম বয়সের ২২ শতাংশ বা ১৫ কোটি ১০ লাখ শিশুর বৃদ্ধি অপুষ্টির কারণে ব্যাহত হয়েছে। এই সময়ে বিশ্বজুড়ে সুষম ও নিরাপদ খাবারের পরিবর্তনে ‘যা-তা’ খেয়ে স্থূলতার শিকার হয়েছেন ৬৭ কোটি ২০ লাখ পূর্ণবয়স্ক মানুষ। গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চরম অবস্থার কারণে এই পরিণতির শিকার হচ্ছে মানুষ। তারা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তন আরো জটিল হচ্ছে, মাঝেমধ্যেই তা চরম অবস্থায় পৌঁছাচ্ছে কোনো কোনো এলাকায়। আর এসব কারণই ক্ষুধা ও অপুষ্টিমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রধান অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে, চরম খাদ্য সঙ্কটের অন্যতম প্রধান চলক হিসেবে কাজ করছে।

এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য সংস্থাগুলো জরুরিভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা না গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোতে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান অক্সফামের প্রতিনিধি রবিন উইলাফবে বলেন, এটা আসলেই হতাশার। কয়েক বছর ধরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা কমতে থাকলেও গত তিন বছর ধরে ফের টানা বৃদ্ধি আসলেই হতাশার। তিনি বলেন, অবশ্যম্ভাবী সত্য হচ্ছে— জলবায়ু পরিবর্তন আসলে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষকে ক্ষুধা পেটে নিয়েই ঘুমাতে যেতে বাধ্য করছে। হরহামেশা  বন্যা ও খরার কবলে পড়া দেশগুলোর বর্তমান অবস্থা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে খাদ্য ঘাটতির বিষয়টিকে দিনে দিনে প্রতিষ্ঠিত করছে। তাই ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়তে রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিল্পোদ্যোক্তাসহ সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। বন্ধ করতে হবে জীবাস্ম জ্বালানির ব্যবহার। অবস্থা মোকাবেলায় অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোর জন্য গড়তে হবে বিশেষ তহবিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads