• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪২৯
দুই কোটি রোগীর চিকিৎসায় ২টি বিশেষায়িত হাসপাতাল

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আজ

সংরক্ষিথ ছবি

জাতীয়

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আজ

দুই কোটি রোগীর চিকিৎসায় ২টি বিশেষায়িত হাসপাতাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ অক্টোবর ২০১৮

বিশ্বে প্রতি পাঁচজন তরুণের একজন মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন। এ ছাড়া ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য কারণ আত্মহত্যা, যার সঙ্গে মানসিক রোগের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। অপরদিকে, বর্তমানে দেশে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকদের মধ্যে মানসিক রোগীর হার ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আর ১৮ বছরের নিচে শিশু-কিশোরদের মধ্যে এ হার ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু অর্থ, চিকিৎসক, জনবল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং সচেতনতার অভাবে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ রোগে আক্রান্তরা।

শুধু তাই নয়, রোগী হওয়া সত্ত্বেও নানা বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য ও উত্ত্যক্ততার শিকার মানসিক রোগীরা। তাদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন, এসব বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য তাদের আত্মমর্যাদার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এটা তাদের আরো অসুস্থ করে তুলছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এ থেকে পরিত্রাণ পেতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ‘ফাস্ট ইমার্জিং ডিজিজ’ হিসেবে আখ্যায়িত মানসিক রোগ মোকাবেলায় এখনই সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ পরিস্থিতিতে আজ ১০ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হবে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। ডব্লিউএইচও ঘোষিত ‘ইয়াং পিপল অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ ইন এ চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে মানসিক রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশেও পালিত হবে দিবসটি।

মনোরোগ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে ফেসবুকসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ৯০ ভাগই ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ। তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে সাইবার বুলিংয়ের (ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষতি) ঝুঁকি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বায়নের প্রভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তি— সবখানেই পরিবর্তন হচ্ছে, যার ছোঁয়ায় তরুণরা বেশি প্রভাবিত। প্রযুক্তিতে মগ্ন থাকার এই প্রবণতা এক ধরনের আসক্তিতে পরিণত হচ্ছে।

কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে তরুণদের গেমিংয়ের নেশাকে কয়েকটি দেশের প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথমবারের মতো এটিকে ‘মানসিক রোগ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। সংস্থার ১১তম ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজ’ (আইসিডি)-তে গেমিং-ডিজঅর্ডার হিসেবে উল্লেখ করা হবে।

রোগটির চিকিৎসা শিক্ষা দিতে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে মাত্র ৫, রাজশাহী মেডিকেলে ১ জন অধ্যাপক থাকলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ডে কোনো প্রফেসর পদ নেই। সব মিলিয়ে দেশে সরকারি ১০ থেকে ১৫ জন অধ্যাপকসহ ২৫০ জনের মতো চিকিৎসক আছেন।  

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার মো. জামাল হোসেন বলেন, ক্লিনিক্যাল সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার এবং অকুপেশনাল থেরাপিস্টসহ মোট ২৫০ সাইকিয়াট্রিক কাজ করছেন। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে সাইকিয়াট্রিস্ট সোশ্যাল ওয়ার্কার আছেন মাত্র ৩ জন। এ ছাড়া এ রোগের চিকিৎসাব্যবস্থায় অর্থ, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ জনবল সঙ্কট রয়েছে।

এদিকে, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০১৮ উপলক্ষে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালের উদ্যোগে আজ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা এবং আগামীকাল কর্মশালার আয়াজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টের (বিএপি) উদ্যোগে সাইকেল শোভাযাত্রা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সিলিং সেন্টার, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রদর্শনী, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন রয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads