• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
পুলিশকে মারমুখী হতে মানা সদর দফতরের

লোগো বাংলাদেশ পুলিশ

জাতীয়

পুলিশকে মারমুখী হতে মানা সদর দফতরের

# জদারি অপরাধ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার নয় # হটস্পট চিহ্নিত করে # টহল জোরদার

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা কেমন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে জনমনে। ড. কামালের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইতোমধ্যে অভিযোগ করে বলেছে— পুলিশ সরকারি দলের পক্ষে কাজ করছে। এ অবস্থায় পুলিশ নির্বাচনে মারমুখী না হয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সতর্কাবস্থায় দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতর থেকে দেশের ৬৪ জেলায় বার্তা পাঠিয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় পলাতক ও জামিনপ্রাপ্ত জঙ্গিদের গ্রেফতারে অভিযান জোরদারের পাশপাশি কোনো গোষ্ঠী যাতে অবৈধভাবে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনতে না পারে সেজন্য সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি এবং কক্সবাজারের আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের বের হওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে থাকার কথাও বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ওই নির্দেশনায় ফৌজদারি অপরাধ ছাড়া কাউকে আটক-গ্রেফতার না করা, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, পেশাদার অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযানে জোর দেওয়া, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজি ১২ ঘণ্টা পরপর এলাকার তথ্য হালনাগাদ করে তা সদর দফতরে জানানো, কোনো বাড়িতে নতুন ভাড়াটিয়া এলে তাদের তথ্য সংগ্রহ এবং হটস্পট চিহ্নিত করে টহল জোরদার করতে বলা হয়। এ ব্যাপারে পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (কনফিডেন্সিয়াল ও স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মনিরুজ্জামান গতকাল নিজ দফতরে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পুলিশ কোনো পক্ষপাতিত্ব করবে না। অনেক সময় কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে পক্ষাবলম্বনে বাধ্য করেন, যা অনুচিত। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারির আগে রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে পুলিশকে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু এবার তো সে রকম হচ্ছে না। পুলিশও কোনো বাড়াবাড়ি করছে না। তিনি বলেন, পুলিশ নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে বলেই এবার নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে। ইতোপূর্বে কোনো  জাতীয় নির্বাচনের আগে এত সুন্দর পরিবেশ ছিল না।

গত পরশু বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ঝামেলা করেছে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, সেখানে পুলিশ গিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে পারত। সেটাও করা হয়নি।

ক্ষমতায় কোনো দলকে বসানো বা ক্ষমতা থেকে নামানো পুলিশের কাজ নয় মন্তব্য করে মনিরুজ্জামান বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করবে পুলিশ, যাতে সাধারণ মানুষ যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারে।

এ ব্যাপারে মানবাধিকার নেত্রী ব্যারিস্টার সিগমা হদা বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এসব অভিযোগ খণ্ডাতে হলে এ বাহিনীকে অবশ্যই নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। একই সঙ্গে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের যে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে, আমরা আশা করব পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনার পর এমন অভিযোগ আর তাদের বিরুদ্ধে উঠবে না। পুলিশ প্রশাসন এখন থেকেই নিরপেক্ষতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করলে শিগগিরই সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত আইজিপি প্রশাসন মো. মোখলেসুর রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছিল তা না করতে সংশ্লিষ্টদের ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এ বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে শতভাগ নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে পুলিশ সদর দফতর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চলমান বিশেষ অভিযানও অব্যাহত থাকবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads