• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
শেষ মূহূর্তের ব্যস্ততা ছাপাখানায়

ছাপাখানায় কাজ করছেন এক শ্রমিক

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

শেষ মূহূর্তের ব্যস্ততা ছাপাখানায়

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

ত্রিমুখী ব্যস্ততায় দেশের সব ছাপাখানা। এর মধ্যে বেজায় ব্যস্ততা নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী ছাপা। এ ছাড়া আছে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার বইসহ শুভেচ্ছা সামগ্রীর কাজকর্মও। একুশে বইমেলারও কাজ শুরু হয়ে গেছে টুকিটাকি কিছু ছাপাখানায়।

তবে মোটাদাগে ছাপাখানায় এখন চলছে নির্বাচনী প্রচারণার ছাপাছাপির কাজকর্মে। আগে কিছু পোস্টার ব্যানারের কাজ হলেও মূল কাজ চলছে এখন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ায় তাদের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। প্রার্থীরা এখন তাদের প্রতীক-সংবলিত পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুন টাঙাচ্ছেন তার এলাকাজুড়ে। সারা দেশের প্রার্থীদের এসব প্রচারণার সামগ্রী ছাপাতে ব্যস্ততার ধুম ছাপাখানায়।

নির্বাচনে প্রার্থীদের মূল প্রচারণা সামগ্রীর অধিকাংশ কাজ ছাপাখানার। এ কারণে নির্বাচনের আগে দেশের ছাপাখানাগুলোয় অর্থিক যে লেনদেন শুরু হয়েছে, সেটা টাকার অঙ্কে কম নয়। কয়েকটি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নির্বাচনে ভোটের মাঠে লড়বেন এক হাজার ৮৪১ প্রার্থী। এদের প্রত্যেকে এখন কমপক্ষে ছাপার কাজে ব্যয় করছেন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এ নিয়ে ছাপাখানার পাশাপাশি সচল হয়ে উঠেছে কাগজ-কালির ব্যবসাও। এদিকে গতকাল সরেজমিনে রাজধানীর তোপখানা রোড, ফকিরাপুল, পল্টন, কাঁটাবন ও বাংলাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন রাতদিন ঘুরছে ছাপাখানার চাকা। নির্বাচনী সামগ্রীর পাশাপাশি রয়েছে নতুন বছরের কাজও। সব মিলিয়ে ছোট-বড় সব ছাপাখানায় প্রত্যেকে প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আর নির্বাচনের সময় বেশিদিন না থাকায় কাজের চাপে ২৪ ঘণ্টাই ছাপাখানা চালু রাখতে হচ্ছে অর্ডারপ্রাপ্তদের।

শুধু রাজধানী নয়, এ ব্যস্ততা সারা দেশের অধিকাংশ ছাপাখানায়। এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান। বাংলাদেশের খবরকে তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায়ও এখন ছাপাখানা রয়েছে। খরচ কমাতে ওইসব প্রতিষ্ঠানেও কাজ করাচ্ছেন প্রার্থীরা। ফলে নির্বাচনী সুবিধা সারা দেশের মুদ্রণশিল্পের সবাই পাচ্ছে।

তোফায়েল খান আরো বলেন, নির্বাচনী পোস্টার দেয়ালে সাঁটানো বন্ধ হওয়া ও পোস্টার এক কালার হওয়ায় এ কাজ আগের থেকে বেশ কমেছে। এ কারণে প্রচারণা সামগ্রীর পরিমাণ অন্যান্য নির্বাচনের সময়ের তুলনায় কমছে।

মুদ্রণশিল্প সমিতির তথ্যে, বর্তমানে ১ হাজার ২৫০ সদস্য রয়েছেন এ সমিতিতে। তবে সারা দেশে এ মুদ্রণশিল্পের সঙ্গে জড়িত ৭ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানী ও এর আশপাশে রয়েছে দুই হাজারের বেশি। রাজধানীতে মূলত বাংলাবাজার, সেগুনবাগিচা, তোপখানা রোড, ফকিরাপুল, পুরানা পল্টন ও নয়াপল্টন, নীলক্ষেত ও কাঁটাবনে এসব ছাপাখানা বেশি।

গতকাল ফকিরাপুল এলাকায় সৌখিন প্রেসে কথা হয় এর স্বত্বাধিকারী অজয় সাহার সঙ্গে। তিনি বললেন, কাজের চাপ বেশি হওয়ায় গত নভেম্বর থেকে দুই শিফটে ২৪ ঘণ্টা প্রেস চালু রেখেছি। নির্বাচনের সঙ্গে নতুন বছরের কাজ যোগ হওয়ায় ব্যস্ততা চলবে শেষ জানুয়ারি পর্যন্ত। এসব শেষে শুরু হবে বইমেলার আয়োজন। বেজায় ব্যস্ততায়ও সবাই দিনরাত কাজ করে প্রার্থীদের প্রচার সামগ্রী পৌঁছে দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।

এমন পরিস্থিতিতে কাগজ ও কালির দাম বেশ বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন কাঁটাবন এলাকার প্রাইম প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী দিদারুল আলম। তিনি বলেন, আগের থেকে এখন কাগজ ও কালির দাম বেশি। সময় বুঝে কারণ ছাড়া অধিক মুনাফার জন্য কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে এ দাম বাড়িয়েছে।

এদিকে গতকাল এসব এলাকায় পোস্টারের জন্য ট্রেসিং প্লেটে কাজ করিয়ে নিতে দেখা গেছে বেশ কিছু প্রার্থীর কর্মীদের। তারা জানান, নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এসব সামগ্রীর অর্ডার করছেন তারা। সঠিক সময়ে ব্যানার, পোস্টার না পাওয়া গেলে বিপাকে পড়তে হয় অনেক ক্ষেত্রে। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত তাদের এসব সামগ্রীর প্রয়োজন হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads