• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
তিন দিনে কর্ণফুলীর তীরের ১৪০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

তিন দিনে কর্ণফুলীর তীরের ১৪০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

তিন দিনে কর্ণফুলীর তীরের ১৪০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চট্টগ্রামের লাইফলাইন কর্ণফুলী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গতকাল বুধবার তৃতীয় দিনের মতো অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। সদরঘাট লাইটারেজ জেটি থেকে মাঝিরঘাট এলাকায় এ অভিযান শুরু হয়। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া অভিযানের প্রথম দিনে ছোট-বড় ৮০টি স্থাপনা উচ্ছেদ, দ্বিতীয় দিনে ৩০টি স্থাপনা এবং তৃতীয় দিনে গতকাল ৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানে মোট পাঁচ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। তিনি বলেন, বলেন, অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তবে উচ্ছেদের আগেও অনেকেই তাদের স্থাপনা নিজ নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে। সদরঘাট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শেষ হলে শাহআমানত সেতুর পূর্ব দিকে শুরু করা হবে। ওই এলাকায় জনবসতি বেশি বলে এ ব্যাপারে আমাদের প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। আশা করি এবার কর্ণফুলী নদীর সবগুলো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা ও র্যাব-৭-এর সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজের নেতৃত্বে দুই শতাধিক পুলিশ ও র্যাব সদস্য অংশ নেন অভিযানে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন এতে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ ও র্যাব-পুলিশ-আনসার।

২০১০ সালের ১৮ জুলাই পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ-এর পক্ষে জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করা হয়। পরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর কর্ণফুলীর দুই তীরে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে। জরিপে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। পরে এ প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর দাখিল করা হয় উচ্চ আদালতে। পরে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেন। অর্থ সঙ্কটে সে সময় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। পরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে এক কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন চিঠি দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় সেবারও আর উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে অর্থ বরাদ্দের পর গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে ও কয়েকটি সংস্থার সমন্বয়ে কর্ণফুলীর পাড়ে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads