‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৯’ এবং ‘হজ প্যাকেজ-২০১৯’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এর অনুমোদন দেওয়া হয়। ফলে সরকারি-বেসরকারি দুই ধরনের হজযাত্রায় এবারো খরচ বেড়েছে। এ নিয়ে টানা দুই বছর হজে যাওয়ার খরচ বাড়ল।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে প্যাকেজ-১-এ এবার ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্যাকেজ-২-এ ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকার কম নেওয়া যাবে না। গত বছর প্যাকেজ-১-এ ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকা এবং প্যাকেজ-২-এ ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা নির্ধারিত ছিল। সেই হিসাবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার প্যাকেজ-১-এ ২০ হাজার ৫৭১ টাকা এবং প্যাকেজ-২-এ ২৪ হাজার ৬৪৫ টাকা বেশি খরচ পড়বে।
২০১৭ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১-এ ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং প্যাকেজ-২-এ ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা নির্ধারিত ছিল। এ বছর কোরবানির খচর ৪৭৫ রিয়াল থেকে বাড়িয়ে ৫২৫ রিয়াল করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল বলেন, বেসরকারিভাবে বিমানভাড়া ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে; যা গতবারের থেকে ১০ হাজার ১৯১ টাকা কম।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট হজ হতে পারে। এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এ বছর যারা হজে যেতে চান তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এবার রমজান মাসের আগেই সৌদিতে বাড়িভাড়া করতে হবে। সৌদির বাড়িভাড়া এবং সার্ভিস ও ক্যাটারিং চার্জ অনলাইনে জমা দিতে হবে বলে জানান সচিব। হজযাত্রীরা সৌদি আরবে যে বাড়িতে থাকবেন এবার থেকে ওই বাড়ির ঠিকানা পাসপোর্টের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ১৯২০ সালের পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিরোধ আইনের ভিত্তিতেই নতুন আইন করা হচ্ছে। কুকুরকে একটানা ২৪ ঘণ্টা বেঁধে বা আটকে রাখলে ছয় মাসের জেল ও পাশাপাশি জরিমানার বিধান রেখে ‘প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, ১৯২০ সালের পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিরোধ আইনের ভিত্তিতেই নতুন আইন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কুকুরকে শরীরচর্চার জন্য কোনো প্রকার চলাফেরার সুযোগ প্রদান না করিয়ে একটানা ২৪ ঘণ্টা বা ততোধিক সময় বাঁধিয়া বা আটকিয়া রাখা হয়- এটা নিষ্ঠুরতা বলিয়া গণ্য হবে। প্রত্যেক প্রাণীর মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর দায়িত্ব হবে যৌক্তিক কারণ ব্যতীত উক্ত প্রাণীর প্রতি কল্যাণকর ও মানবিক আচরণ করা এবং নিষ্ঠুর আচরণ করা হইতে বিরত থাকা।
সচিব আরো বলেন, খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রাণী জবাইকালে এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে উৎসর্গকালে যেকোনো ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি কর্তৃক নিজস্ব ধর্মীয় আচার অনুযায়ী কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে তাকে নিষ্ঠুরতা হিসেবে গণ্য করা হবে না। তবে যুক্তিযুক্ত প্রয়োজনে ভেটিরিনারিয়ান সার্জনের লিখিত পরামর্শ ও পদ্ধতি অনুসরণ করে কোনো প্রাণীর অজ্ঞান ও ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটানো হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। এই আইন লঙ্ঘন করে অপরাধ করলে বা কোনো অপরাধে সহায়তা করলে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। আগের আইনে বিভিন্ন অপরাধের জন্য তিন মাসের জেল এবং এক হাজার টাকা জরিমানা করা হতো।
