• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো দুদক আইনজীবীর ভবন

গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো দুদক আইনজীবীর ভবন

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো দুদক আইনজীবীর ভবন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বুড়িগঙ্গা নদীর জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করায় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের তিনতলা ভবন ভেঙে ফেলেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচরে এ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

সকালে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের স্ত্রীর ভবন ভাঙতে গেলে আইনজীবী কাজল কাগজপত্র দেখিয়ে বৈধতা প্রমাণের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা নদীবন্দরের উপপরিচালক কেএম আরিফ উদ্দিন জানান, নদী ভরাট করেই নির্মাণ করা হয়েছে ভবনটি। তাই এটা অবৈধ। তিনি বলেন, ভবনটির মালিক মোশাররফ হোসেন কাজল ভাঙার সময় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কোনো ভ্যালিড কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

জানা যায়, ভবনের জমিটি মোশাররফ হোসেন কাজলের স্ত্রী পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন এবং সেখানে তিনি তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন।

তবে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল জানান, এই সম্পত্তিটি তার শ্বশুরের ছিল। এটি ১৯৬১ সালে কেনা। এটা অবৈধ না, সব ধরনের দলিলপত্র আছে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এবং কাগজপত্র না দেখেই এটা ভেঙে ফেলে। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ’র পদক্ষেপকে ‘বড় ধরনের অত্যাচার’ আখ্যায়িত করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী হাকিমের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দুদকের এই আইনজীবী। তিনি বলেন, নদীতীরের সীমানা নির্ধারণ না করেই এটা করা হয়েছে। একটা বেকুব ম্যাজিস্ট্রেট কাজটা করেছে। পাশেই একটা বিল্ডিং আছে, সেটা ভাঙা হয়নি। কারণ সেটা বিআইডব্লিউটিএ’র একজন ইঞ্জিনিয়ারের বিল্ডিং ছিল। বাড়ি ভাঙার বিষয়ে ক্ষতিপূরণের মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন আইনজীবী কাজল।

বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা বলছেন, নদী দখলমুক্ত করতে ক্রাশ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

বুড়িগঙ্গা নদী দখলমুক্ত করতে তৃতীয় দফা উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে গতকাল কামরাঙ্গীচর এলাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায় বিআইডব্লিউটিএ। এ দিন কামরাঙ্গীরচরের খোলামোরাঘাট থেকে ঝাউচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বহুতল ভবনসহ ১২৪টি পাকা ও আধাপাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

এই উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শন করেন নৌ পরিবহন সচিব মো. আবদুস সামাদ। উচ্ছেদ অভিযানে উদ্ধার হওয়া জায়গায় ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনার কথা তিনি জানিয়েছেন। তিনি জানান, উচ্ছেদ করা জায়গা পরিষ্কার করে শিগগিরই ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উচ্ছেদ করা ১২৪টি স্থাপনার মধ্যে ১১টি দোতলা ভবন, ৬টি একতলা ভবন, ৩০টি আধাপাকা ঘর, ২২টি টিনের ঘর ও ৫৫টি টংঘর রয়েছে। এই অভিযানের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট এক হাজার ১৯৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং প্রায় ১০ একর তীরভূমি উদ্ধার করেছে বিআইডব্লিউটিএ। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দখলদারদের বিতাড়িত করার পরিকল্পনা নিয়ে নদীতীর উদ্ধারে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচর এলাকা থেকে বসিলা অভিমুখে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালিত হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads