• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
যানবাহন সঙ্কটে ভুগছে থানাগুলো

লোগো বাংলাদেশ পুলিশ

জাতীয়

গড়ে মাত্র ২টি করে যানবাহন দেশের ৬৩৩ থানায়

যানবাহন সঙ্কটে ভুগছে থানাগুলো

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

যানবাহন সঙ্কটে ভুগছে দেশের থানাগুলো। চাহিদার তুলনায় যানবাহন কম থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে মহানগরসহ দেশের ৬৩৩ থানার। বেসরকারিভাবে যানবাহন সংগ্রহ করে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে থানাগুলোকে। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পুলিশ সদর দফতর থেকে যানবাহন সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর সূত্র।

সূত্র জানায়, থানা পুলিশ এলাকাভেদে কার প্যাট্রলিং করে। শুধু ফুট প্যাট্রলিং করে পুরো থানা এলাকা কভার করা সম্ভব হয় না। ওসির গাড়ি ছাড়াও প্যাট্রলিং করার জন্য কমপক্ষে আরো ৪টি যানবাহন দরকার। ওসির গাড়িসহ ৫টি গাড়ি হলে অন্য অফিসাররা সমন্বয় করে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে দাফতরিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারেন। কিন্তু গড়ে মাত্র ২টি গাড়ি বরাদ্দ থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হচ্ছে থানাগুলোকে। এ ছাড়া পুলিশ বেসরকারি খাত থেকে গাড়ি সংগ্রহ করে চলছে। এতে জনমনে পুলিশ সম্পর্কে আরো নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণ থানার ওসিরা সাধারণত সাব ইনস্পেক্টরদের (এসআই) বেসরকারিভাবে গাড়ি সংগ্রহের দায়িত্ব দেন। তারা রাস্তা থেকে ব্যক্তি মালিকানাধীন চলন্ত গাড়ি আটক করে রিকুইজিশন করেন। এতে দেখা যায় ওই সময় ওই গাড়ির মালিক জরুরি কোনো কাজে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নাছোরবান্দা পুলিশ। ওই অবস্থায়ই পুলিশ গাড়ি মালিকের ওজর-আপত্তি উপেক্ষা করে গাড়িটি রিকুইজিশন করে থাকেন। এতে ওই গাড়ির মালিক ক্ষিপ্ত হলেও তার কিছু করার থাকে না। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যরা রিকুইজিশনের বিকল্প হিসেবে লেগুনা বা সিএনজি স্টেশনে গিয়ে গাড়ি নেন। সেটাও স্ট্যান্ডের লোকজন ভালোভাবে নেয় না। কিন্তু ভয়ে তারা কিছু বলতে পারে না।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, গাড়ি সঙ্কট সমাধানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেটার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর কথা ভাবছে পুলিশ সদর দফতর। এ ব্যাপারে আগামী মার্চ মাসে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এটা একটা বড় সমস্যা। কিন্তু সরকারের তো সম্পদ সীমিত। এই মুহূর্তে একযোগে দেশের ৬৩৩ থানায় আরো ৩টি বা ২টি করে গাড়ি দিতে গেলেও অনেক টাকার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে পুলিশের জনবল, আবাসন, ইকুইপমেন্ট সমস্যা সমাধান করে লজিস্টিক দিয়েছেন। পুলিশ বাহিনীর সুযোগ-সুবিধাও অনেকটা বাড়িয়েছেন। তিনি যানবাহন সমস্যার কথাও জানেন। তিনি এ ব্যাপারে সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এ ব্যাপারে জয়দেব পুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অভাবে স্বভাব নষ্ট। আমি সরকারিভাবে অফিসারদের গাড়ি দিতে পারি না। অফিসাররা গাড়ি ‘ম্যানেজ’ করতে গেলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে এটা পুরনো বিষয়। কারণ যার গাড়ি রিকুইজিশন করা হয়-তিনি ওই অফিসারের ওপর ক্ষিপ্ত হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সরকারের সীমাবদ্ধ সম্পদের কথা বিবেচনা করে এ অবস্থার মধ্য দিয়েই চলতে হচ্ছে।

পুলিশ সদর দফতরের অ্যাডিশনাল আইজিপি (এইচ আর এম) বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পুলিশকে গণমুখী হিসেবে গড়ে তুলতে ও সেবার মান বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যানবাহন সমস্যা সমাধান না হলে পুলিশের মাঠ পর্যায় থেকে শত ভাগ ভালো সার্ভিস আশা করাটা ঠিক নয়। সুতরাং যানবাহন সমস্যা সমাধানের বিষয়টিও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে সক্রিয়ভাবে বিবেচনাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ বলতে সাধারণ মানুষ মাঠ পর্যায়ের পুলিশকেই বোঝে। কারণ মানুষ আইনগত সহায়তা চাইতে থানায় যায়। থানা পুলিশের সঙ্গেই সর্বস্তরের মানুষের যোগাযোগ। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের আচরণ ও কর্মকাণ্ড গণমুখী হয়। সেবার মানসিকতা নিয়ে পুলিশ সদস্যরা যেন নিজেদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে। আর এটা নিশ্চিত করতে হলে আগে বাহিনীর সদস্যকে সমস্যামুক্ত করতে হবে। তার আবাসন, যানবাহনসহ অন্যান্য সমস্যা থাকলেও সেটা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পুলিশে কিছুদিন আগেও অনেক সমস্যা ছিল সেগুলো সরকার সমাধান করেছে। যানবাহন সমাধানের বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads