• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪২৯
চুড়িহাট্টা ট্রাজেডি : কর্মস্থলেই মারা গেলেন কুড়িগ্রামের ৩ যুবক

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

চুড়িহাট্টা ট্রাজেডি : কর্মস্থলেই মারা গেলেন কুড়িগ্রামের ৩ যুবক

  • রাশিদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে কর্মস্থলেই মারা গেলেন কুড়িগ্রামের তিন যুবক। পরিবারের সদস্যদের মুখে দুইবেলা দুই মুঠো ডাল ভাত জোগানোর জন্য ঢাকায় পাড়ি দিয়েছিলেন  সজিব (২৩), রাজু মিয়া (১৮) এবং খোরশেদ আলম (২২)।পরিবারের সদস্যরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাদের এমন মৃত্যু। এখন এই তিন পরিবারে শুধুই চলছে আহাজারি। আকাশ-বাতাস যেন ভারি হয়ে আসছে তাদের আহাজারিতে।

হতদরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করতে কুড়িগ্রামের এই তিন যুবক কাজ নেয় ঢাকার একটি জুতোর দোকানে। ঘটনার দিন বুধবার রাত ১০টার দিকে দোকান থেকে অন্য দোকানে মালামাল ডেলিভারি করতে যান তারা। এসময় ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ভ্যানেই মৃত্যুবরণ করে তারা।

দুর্ঘটনায় হত এই তিন যুবককে শুক্রবার সকালে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। এই তিন যুবক কিশোর বয়স থেকেই কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকার চক বাজারে একটি জুতোর দোকানে কাজ নেয়। পরিবারে কর্মক্ষম এই তিন যুবকের লাশ বাড়িতে আনা হলে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে হ্নদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।

একমাত্র পূত্র সজিব’র মৃত্যুতে পাগল প্রায় তার বাবা আব্দুল কাদের। তিনি প্রলাপ বকছেন আর বলছেন। বাবারে মোর ছওয়াটাক তোমরা আনি দেও। মুই এ্যালা কার ভরসায় বাঁচিম। একমাত্র সন্তানের মৃত্যু তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না।

রাজু মিয়া’র ভাই মাসুদ জানায়, বাড়ী ভিটা ছাড়া তাদের আর কিছু নেই। বাবা মারা যাওয়ার পর রাজু ঢাকায় জুতোর দোকানে কাজ যোগার করে। আর সে এলাকায় ভ্যান চালাতো। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে সে ঢাকায় কাজ করছে।

খোরশেদ আলমের মামা নবিউল্লাহ জানান, খোরশেদ আলম বাবার একমাত্র ছেলে। ৬ শতক বাড়িভিটা ছাড়া তাদের কোনো জমিজমা নেই। জুতার দোকানে কাজ করে সে দিনমজুর বাবাকে সাহায্য করত। সেই একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আবু বক্কর সারাক্ষণ ছটফট করছেন আর বলছেন, এ্যালা মুই কাক নিয়া থাকিম।

এ ব্যাপারে ভোগডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইফুর রহমান বলেন, নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে বিশ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোছা.সুলতানা পারভীন জানান, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের পরিবারকে খুব শীঘ্রই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads