• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
যুদ্ধ শুরুর আগে শহীদ হন হাদিস

অগ্নিঝরা মার্চ

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

অগ্নিঝরা মার্চ

যুদ্ধ শুরুর আগে শহীদ হন হাদিস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ মার্চ ২০১৯

১৯৭১ সালের মার্চে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাঠানো নির্দেশ অনুযায়ী খুলনা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। হাজার হাজার জনতা রাস্তায় নেমে আসে এবং পাকিস্তান শাসনের বিরুদ্ধে মুহর্মুহু স্লোগান দিতে থাকে। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি জানায়। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয়লাভ করে।

সরকারি ও বেসরকারি অফিস এমনকি সব ধরনের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড থেমে যায়। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং অঞ্চলে সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলন আরো বেগবান করতে খুলনা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে সর্বস্তরের হাজার হাজার লোক অংশ নেয়।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে এবং হরতাল, অবরোধ, সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং শ্রমিক ও ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে।

অসহযোগ আন্দোলন সফল করতে খালিশপুরে শিল্প এলাকা এবং দৌলতপুর এলাকায় শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬-দফা আন্দোলনের পর থেকে এই অঞ্চলে সব আন্দোলন প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হয়েছে। সে সময়ে ১২টি ইউনিয়ন ও জোনে বিভক্ত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১২ জন আহ্বায়ক এসব ইউয়িন ও জোনে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। সে সময় খুলনা বেতার কেন্দ্র এবং লুৎফর রহমান জাহাঙ্গীর প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দেশের ডাক’ জনমত সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

স্বাধীনতাকামী জনতা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সব কর্মসূচিতে যোগ দেয়। তারা পাকিস্তানি পতাকা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং একটি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য পাকিস্তানকে বিদায় জানাতে মানসিক প্রস্তুতি দেখায়। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে খুলনায় প্রথম শহীদ হন এক লন্ড্রি দোকান কর্মচারী হাদিস।

পাকিস্তানি পুলিশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিলে গুলি চালালে হাদিস নিহত এবং অপর ৫০ জন আহত হন। পরে এক সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে নগরীর পার্কটি শহীদ হাদিস পার্ক নামকরণ করা হয়। হাদিস নিহত হওয়ার পর প্রতিদিন বিকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে অসহযোগ আন্দোলনের সর্বশেষ খবর এখানে প্রচার করা হতো।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads