• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
 অধিকাংশ হাসপাতালে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

অধিকাংশ হাসপাতালে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা

  • আবু তাহের চৌধুরী, সিলেট
  • প্রকাশিত ০৮ মে ২০১৯

সিলেটের বেশিরভাগ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেই প্রাথমিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে প্রাথমিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলোও ভবনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। সম্প্রতি সিলেটের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো পরিদর্শনে গিয়ে এমন চিত্র পায় সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত জনবলও নেই। তাই এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন বলে মত ফায়ার সার্ভিসের।  

সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা যায়, সিলেটে ৫৯টি হাসপাতাল ও ১৮৩টি ক্লিনিক রয়েছে। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তদারকি করতে একাধিক টিম গঠন করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। টিমগুলো পরিদর্শন শুরু করে ৩ মার্চ থেকে। পরিদর্শন কাজ তদারকি করা সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদ্য বিদায়ী উপ-সহকারী পরিচালক দিনামনি শর্মা জানান, সিলেটের বেশিরভাগ হাসপাতাল বা ক্লিনিকেই প্রাথমিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে নেই জরুরি নির্গমন পথ, ফায়ার অ্যালার্ম ও হাইডেন্ট ব্যবস্থা।  

সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই। যেসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার রয়েছে, সেগুলো নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ। নগরের কাজলশাহ রোডস্থ বেশ কয়েকটি ক্লিনিকে দেখা যায় অগ্নিনির্বাপণের পুরনো সিলিন্ডারের ওপর নতুন মেয়াদের লেবেল লাগানো। এছাড়া এসব হাসপাতাল ভবনে নেই জরুরি নির্গমন সিঁড়ি। বেশিরভাগ হাসপাতালেই যন্ত্রের ব্যবহারও জানেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।  

সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে তেমন কোনো চিন্তাভাবনা নেই তাদের। এমনকি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে যে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা লাগে, সে বিষয়েও অবগত নন তারা। সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদ্য বিদায়ী উপ-সহকারী পরিচালক দিনামনি শর্মা বলেন, সিলেটের বেশিরভাগ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। যেসব প্রতিষ্ঠানে আছে, সেগুলো হয় মেয়াদ উত্তীর্ণ না হয় খুব নিম্নমানের। এসব সেবাদান প্রতিষ্ঠানে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই দক্ষ জনবল। তিনি আরো বলেন, সিলেট নগরসহ জেলার প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা তদারকি করেছে আমাদের টিম। হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কীভাবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা চালু করতে হবে, সেগুলো বুঝিয়ে দেবে আমাদের পরিদর্শন টিম। এর পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সব দায়ভার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। পরিদর্শনের প্রাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভসের সিলেট কার্যালয়ের নতুন উপ-সহকারী পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী।  

এ ব্যাপারে সিলেট প্রাইভেট হসপিটাল অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. নাসিম আহমেদ বলেন, ঢাকার অগ্নিকাণ্ডের পর সিলেটের মানুষজন সচেতন হচ্ছেন। সবাই নিরাপত্তা চান। আমাদের নিরাপত্তার জন্য প্রাথমিকভাবে আমাদেরকেই উদ্যোগী হতে হবে। সিলেটের ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে অনেক আন্তরিক। বড় বড় হাসপাতাল ক্লিনিকগুলো ইতোমধ্যে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রেখেছেন। ছোট ছোট কিছু হাসপাতাল ক্লিনিক এখনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তবে শিগগিরই তাদেরকেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসতে আমরা পদক্ষেপ নেব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads