• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ আগস্ট ২০১৯

ত্যাগের মহিমায় মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হয়েছে। গত সোমবার পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদুল আজহা উদযাপন করেন।

যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর করে আসছে। ঈদের দিন সকালে জায়নামাজ হাতে সবাই ছুটছেন ঈদগাহে। শিশুরা রঙিন পোশাকে ছুটোছুটি করছে। চারদিকে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা।

রাজধানীর হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত। রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য ও বিশিষ্ট নাগরিকসহ সর্বস্তরের মানুষ ঈদের প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করেন। এছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত হয় সকাল ৭টায়।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারো জামাতে শরিক হতে মুসল্লিদের আগ্রহের কমতি ছিল না। ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই রাজধানীর নানা প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আসতে থাকেন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে।

জাতীয় ঈদগাহে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ের জন্য প্রতিটি প্রবেশ পথেই ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তায় বিস্তৃত হয় ঈদগাহের জামাত। নামাজের আগে দেওয়া বয়ানে কোরবানির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য তুলে ধরেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মওলানা সালাউদ্দিন।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বিশ্বের মুসলিম ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বঙ্গভবনে সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদের দিন বঙ্গভবনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলীয় নেতা ও কর্মী, বিচারক এবং বিদেশি কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এবার ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির উদ্যোগে রাজধানীর ৫৮২টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাতসহ ঈদুল আজহার ৩১২টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭০টি স্থানে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এবার উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান দিনাজপুরে পবিত্র ঈদুল আজহার সবচেয়ে বড় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন এখানে। এছাড়াও আরেকটি বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। জামাতে ইমামতি করেন প্যানেল ইমাম শহরের মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফিজুর রহমান খান।

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বরাবরের মতো এবারো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহর থেকে অগণিত মানুষ নাড়ির টানে গেছেন গ্রামের বাড়িতে। সারা দেশে বিভাগ বা জেলা বা উপজেলা বা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা বা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ বা সরকারি সংস্থাসমূহের প্রধানগণ জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করেছেন। এছাড়াও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমসমূহ যথাযোগ্য গুরুত্বসহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

ঈদ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করেছে। 

প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) নিজ পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়।

হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads