• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

বাড়ছে রোহিঙ্গা বিদ্বেষ

ফিরে না যেতে উসকানি দিচ্ছে এনজিওগুলো

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ২৬ আগস্ট ২০১৯

নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে রোহিঙ্গারা। তাদের উসকে দিচ্ছে এনজিওগুলো। এদিকে দিন যত যাচ্ছে স্থানীয়দের কাছে রোহিঙ্গারা যেন বিষফোড়ায় পরিণত হচ্ছে। রোহিঙ্গারা জড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা ব্যবসা, মানব পাচার, খুন, ধর্ষণ, চোরাচালান ও ডাকাতিসহ নানা রকমের অপরাধে। এতে ওইসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, প্রথমদিকে রোহিঙ্গারা ত্রাণসামগ্রীর আশায় ছুটে বেড়াত এ ক্যাম্প থেকে সেই ক্যাম্পে। এক বেলা খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু এখন পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এনজিওগুলো সবকিছু এখন পৌঁছে দিচ্ছে তাদের ঘরে ঘরে। একই সঙ্গে ফিরে না যাওয়ার নানা কৌশল রপ্ত করাচ্ছে রোহিঙ্গাদের। সঙ্গত কারণেই তারা এখন দাবি তুলছে- নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো অবস্থাতেই মিয়ানমারে ফিরে যাবে না। সহজেই ঘরে বসে ত্রাণসামগ্রী পেয়ে যাওয়ায় তাদের মাথায় চেপে বসেছে ‘নতুন ভূত’। যে কারণে কোনো কাজ ও সংসারের পিছুটান না থাকায় রোহিঙ্গারা নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা ক্যাম্পকে ইয়াবারাজ্য বানিয়েছে। ধর্ষণ,

খুন, হামলা তাদের নিয়মিত কাজে পরিণত হয়েছে। ফলে দিন যত যাচ্ছে ততই অবনতির দিকে যাচ্ছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা শিবিরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে গত দুই বছরে  রোহিঙ্গা শিবিরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে নিহত হয়েছেন ৪৩ জন রোহিঙ্গা। এছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এ সময় নিহত হয়েছে আরো ৩২ রোহিঙ্গা। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার পর থেকে নানা অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া ৪৭১ মামলায় আসামি হয়েছে ১০৮৮ জন। ইতোমধ্যে পুলিশ প্রায় আরো এক হাজার রোহিঙ্গাকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, রোহিঙ্গারা এখন আর নিরীহ নেই। দিন যত যাচ্ছে ততই তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। নানা অপরাধের ঘটনা ঘটাচ্ছে। জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা মানবিক আশ্রয় পেয়েছে একথা তারা ভুলে গেছে। তারা এখন এলাকাবাসীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেকনাফের মানুষ রোহিঙ্গাদের এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ।

এ ব্যাপারে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, কতিপয় এনজিও নিজেদের আখের গোছাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যেমন বাধা দিচ্ছে, তেমনি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যেতে এবং মিয়ানমারে ফিরে যেতে অনাগ্রহ তৈরিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমারে ফিরে না যায়। সঙ্গে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশেও উৎসাহিত করছে তারা। আর রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এসব এনজিও দীর্ঘ সময় দাতা সংস্থার অর্থ লুটপাট অব্যাহত রাখতে লন্ডাখালী এলাকায় নতুন করে ক্যাম্প নির্মাণের  চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের নিয়ে বাধা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এই শরণার্থীদের সাদরে গ্রহণ করে, খাবার আর আশ্রয় দিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছিল কক্সবাজারের মানুষ। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর দ্বিতীয় চেষ্টাও ব্যর্থ হওয়ায় শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সী মানুষের মধ্যেই উদ্বেগ আর রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব বাড়ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads