• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা

বেকারত্ব নিরসনে বিশেষ উদ্যোগ

  • মো. রেজাউর রহিম
  • প্রকাশিত ২২ অক্টোবর ২০১৯

আগামী অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশে বিদ্যমান বেকারত্ব ও খণ্ডকালীন বেকারত্ব দূর করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সাম্প্রতিক ‘স্টাডি অন এমপ্লয়মেন্ট প্রডাক্টিভিটি অ্যান্ড সেক্টরাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে কর্মে নিয়োজিতদের বড় অংশ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাচ্ছে না। তাদের বেশির ভাগ খণ্ডকালীন এবং কম বেতনে কাজ করছে। দেশে বর্তমানে আন্ডারএমপ্লয়মেন্ট বা খণ্ডকালীন বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩৯ লাখ ২১ হাজারে। তাদের মধ্যে ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৯ হাজার পুরুষ এবং সাড়ে ২৩ লাখ নারী। আর এই অর্ধবেকারদের ৭০ শতাংশের বয়স ৩০-৬৪ বছরের মধ্যে। এজন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ভালো মানের চাকরি, চাকরির নিশ্চয়তা এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের এ প্রতিবেদন প্রসঙ্গে জিইডি সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, এই গবেষণামূলক প্রতিবেদনে নমুনা জরিপের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। দেশে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জাতীয় পরিকল্পনা তৈরিতে এ প্রতিবেদনের তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর প্রতিফলন থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী অষ্টম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির ও বেকারত্ব দূর করতে বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ রাখা হচ্ছে। 

সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মোট ১৬ কোটি ৬৩ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ১১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ কর্মক্ষম, যাদের বয়স ১৫ বছরের ওপরে। এদের মধ্যে শ্রমবাজারে রয়েছে ৬ কোটি ৩৯ লাখ মানুষ। আর কর্মে নিয়োজিত রয়েছে ৬ কোটি ১৯ লাখ। অর্থাৎ বেকার রয়েছেন ৩ দশমিক ১ শতাংশ বা ২০ লাখ শ্রমশক্তি। ২০১৭ সালের তথ্যের ভিত্তিতে  বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপে বলা হয়েছে, দেশে বেকার রয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ বা ২৬ লাখ ৮০ হাজার। অন্যদিকে ২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে জিইডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বেকারের সংখ্যা ২০ লাখ। এতে দেখা যাচ্ছে,  দেশে বেকারত্বের হার কমেছে।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত বাংলাদেশের উন্নয়ন হালনাগাদ প্রতিবেদনেও মানসম্পন্ন শিক্ষা ও শোভন কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, শিক্ষার সঙ্গে কর্মসংস্থানের অনেক ফারাক রয়েছে। দেশে একদিকে যেমন যোগ্যরা চাকরি পাচ্ছেন না অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো যোগ্য লোক খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে। এ অবস্থা কাটাতে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানমুখী শিক্ষা জরুরি। তিনি বলেন, বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে, আবার শোভন কর্মসংস্থানের বিষয়টি কর্মপরিবেশ, ভালো বেতন, নিরাপত্তা, চাকরির নিশ্চয়তা, নিয়োগপত্র প্রদান, চাকরিচ্যুতির পর পাওনা আদায়, আইনি সুরক্ষার মতো বেশ সূচকের ওপর নির্ভরশীল।

জিইডির প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ১ কোটি ৩৯ লাখ আন্ডারএমপ্লয়মেন্টের মধ্যে খণ্ডকালীন কর্মসংস্থানে রয়েছে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। বর্তমানে চাকরি হারানোর ফলে বাধ্য হয়ে নিম্নমানের কাজ করছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যক্তি, অধিক বেতনের আশায় নতুন চাকরি খুঁজছে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ, আরো বেশি সময় কাজ করতে চায় ৯ শতাংশ শ্রমশক্তি, উচ্চ পদে চাকরি প্রত্যাশা করছে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, আরো ভালো মানের কিছু করার চেষ্টা করছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, ভালো কর্মপরিবেশ প্রত্যাশা করছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, নিজের দক্ষতা ও শিক্ষা দিয়ে উন্নত কাজের চেষ্টা করছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ শ্রমশক্তি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads