• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

ভূমির শ্রেণিবিভাজন

আসছে ৩৩৭ কোটি টাকার প্রকল্প

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

দেশের সব জমিকে অবস্থান ও গুণাগুণের ভিত্তিতে কৃষি, আবাসন, বাণিজ্য পর্যটন এবং শিল্প প্লট হিসেবে শ্রেণিবিভাজন করতে ৩৩৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। ‘মৌজা ও প্লটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং’ শীর্ষক প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ, ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ।

তিনি বলেন, সারা দেশের ভূমিকে ডিজিটাল করার জন্য এখন একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেটার সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন এই প্রকল্পটির মাধ্যমে সারা দেশের ভূমিকে মৌজা ও বিভিন্ন প্লট ভিত্তিক আলাদা করা হবে। তখন যে কেউ যেখানে সেখানে যা ইচ্ছা নির্মাণ করতে পারবে না। পরিকল্পিতভাবে ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত হবে। প্রতিবেশী ভারত ভূমিকে এ ধরনের জোনিং করে প্লটভিত্তিক ভাগ করে ব্যবহার করছে।

একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য তৈরি প্রকল্প দলিলে বলা হয়েছে, এর মূল কাজ হবে ভূমির গুণাগুণ অনুযায়ী সেটিকে প্লটওয়ারি কৃষি, আবাসন, বাণিজ্যিক, পর্যটন ও শিল্প উন্নয়ন ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করে মৌজা ও প্লটভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং ম্যাপ ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। প্রকল্পটির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার নিমিত্তে সারা দেশে মৌজা ও প্লটভিত্তিক ডেটাবেজ প্রণয়ন করা হবে।

এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় ভূমির অঞ্চলভিত্তিক ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার চালানো হবে। প্রকল্পের আওতায় ভূমি জোনিং বিষয়ক কার্যক্রম সচল রাখার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করা হবে। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সামাগ্রিক উন্নয়নের জন্য দেশের ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি দক্ষ পদ্ধতি গড়ে তোলা দরকার। কারণ ভূমি হস্তান্তর ও ভূমি ব্যবহারে শ্রেণি পরিবর্তনের হার অনেক বেশি।

এতে বলা হয়, দেশে এখন কৃষি জমির পরিমাণ মোট জমির প্রায় ৮৪ শতাংশ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে নতুন আবাসন রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অবকাঠামো ইত্যাদি নির্মাণের জন্য কৃষি জমি ব্যবহার হয়। ফলে কৃষি জমির পরিমাণ প্রতিনিয়ত উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। এই নীতিমালায় দেশের সকল ভূমিকে বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করে ভূমি পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ২০০৬ থেকে ২০১১ মেয়াদে উপকূলীয় ভূমি জোনিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ১৫২টি উপকূলীয় উজেলার ভূমি জোনিং ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা (ল্যান্ড ইউজ প্ল্যান) প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া ২০১২-২০১৭ মেয়াদে বাস্তবায়িত জাতীয় ভূমি জোনিং (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩৩৬টি উপজেলায় ভূমি জোনিং এবং ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা ও ম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় ভূমি জোনিং (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় উপজেলা, জেলা এবং বিভাগ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালাগুলোতে উপকারিতা কার্যকারিতা এবং প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার ওপর ব্যাপক আলোচনা করা হয়।

আলোচনায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, ভূমি জোনিংয়ের বিষয়টি এবং কৃষিজমির সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইনটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে এটির মৌজা ও প্লটভিত্তিক ভাগ করা প্রয়োজন। মৌজা ও প্লটভিত্তিক ডিজিটাইজপ ভূমি জোনিং মানচিত্র প্রণয়নপূর্বক ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে প্লট নাম্বার এবং প্লটভিত্তিক বিস্তারিত ভূমি জোনিং মানচিত্রে সন্নিবেশিত করা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভূমি প্রশাসনের দায়িত্ববপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই তথ্য ব্যবহার করে অপ্রতুল ভূমি সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads