১৯৪৩ সালে এ অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়। এ দুর্ভিক্ষে কয়েক লাখ লোক মারা যায়। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য হন। তাকে মনোনীত করেন সোহরাওয়ার্দী সাহেব। আর খাজা নাজিমুদ্দীন সাহেবের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন খুলনার আবুল কাশেম সাহেব। হাশিম সাহেব তাকে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক হন। এর আগে সোহরাওয়ার্দী সাহেবই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ সময় থেকে মুসলিম লীগের মধ্যে দুটি দল মাথা চাড়া দিয়ে দিয়ে ওঠে। একটি প্রগতিবাদী, আরেকটা প্রতিক্রিয়াশীল। শহীদ সাহেবের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু ও তার সহকর্মীরা মুসলিম লীগকে জনগণের লীগে পরিণত করতে চান। এটাকে জনগণের প্রতিষ্ঠান বানাতে চান। কারণ তখন পর্যন্ত মুসলিম লীগ জনগণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারেনি। এটা জমিদার, জোতদার ও খান বাহাদুর নবাবদের প্রতিষ্ঠান ছিল। তারা মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে দলে ভিড়তে দিতে চাইত না। জেলায় জেলায় খান বাহাদুরের দলের লোকরাই লীগকে পকেটে রেখেছিল।
খাজা নাজিমুদ্দীন সাহেবের নেতৃত্বে ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে ঢাকায় এক খাজা বংশ থেকেই ১১ জন এমএলএ হয়েছিল। ১৯৪৩ সালে খাজা নাজিমুদ্দীন সাহেব যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন তিনি তার ছোট ভাই খাজা শাহাবুদ্দীন সাহেবকে শিল্পমন্ত্রী বানিয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর লোকজন বাধা দিলেও তিনি সেটা শোনেননি। এরপর শহীদ সাহেবের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনিও কিছু বলেননি। সোহরাওয়ার্দী সাহেব তখন সিভিল সাপ্লাই মন্ত্রী হলেন।
বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে সংগৃহীত।