• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

‘মাহাজনের কাছে বকেয়া টাকা চাইলেই মারধর করে’

  • স্বপন রানা, উত্তরা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ জানুয়ারি ২০২১

রাজধানীর তুরাগের ধউর এলাকায় বকেয়া বেতন চাওয়াতে বেশ কয়েকজন পরিবহন শ্রমিককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে মর্তুজা মাহাজন নামের এক পরিবহন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। আহত পরিবহন শ্রমিকরা হলেন রুবেল,সৌরভ,ও জুয়েল।

শুক্রবার রাতে তুরাগ থানায় এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ একটি অভিযোগ পত্র দায়ের করে।

ভুক্তভোগী জুয়েল জানান, অল্প টাকায় থাকা খাওয়ার সু-ব্যবস্থা সহ ভালো টাকা বেতন দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মর্তুজা মাহাজন ড্রাইভিং এর কাজে ব্যবহার করতো উঠতি বয়সী চালকদের। কিন্তু কিছুদিন পরেই মর্তুজার ভয়ঙ্কর রূপ প্রকাশ পায়। বেতন চাইলেও চালকদের উপর নির্যাতন চালানো শুরু করেন তিনি।

রংপুর থেকে আসা রাজু ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েক জন যুবককে একইভাবে দীর্ঘদিনের পাওনা টাকা না দিয়ে মারধর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য করে মর্তুজা ও তার সহযোগীরা।

পরিবহন শ্রমিক জুয়েল জানান, ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে দাবি করা মর্তুজা আমাকে তার গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেয়। মাস শেষে টাকা চাইতে গেলে প্রতি মাসেই বলে, কিছুদিন পরে টাকা দিয়ে দিবো। পরে মাহাজন (মর্তুজা) কাছে আমাদের প্রাপ্য টাকা চাইলেই মারধর করে ভয় ভীতি দেখায়। ২ মাস ১০ দিনে কাজ করে মোট ৩৭ হাজার টাকা বকেয়া হয় তার কাছে। এক টাকাও না দিয়ে সে চলতি মাসের ২১ তারিখে তার টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলামের বাগান বাড়িতে নিয়ে যায় আমাকে। সেখানে নিয়ে গিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে আমাকে ও রুবেলকে লাঠি দিয়ে বেধরক পেটাতে শুরু করে। পরে রুবেল দেয়াল টপকে কোনভাবে প্রাণে বেঁচে যায়।

অন্য পরিবহন শ্রমিক জুয়েল জানান, আমি সে সুযোগ পাইনি। আমাকে প্রায় ২ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। বার বার বাঁচার আঁকুতি জানিয়ে ও পায়ে ধরে মাফ চাইলেও আমাকে ছাড় দেয়নি মর্তুজা। পরে, আমি ও রুবেল টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে যেয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি। এরপর তুরাগ থানায় যেয়ে এ বিষয় অভিযোগ করি।

পরিবহন শ্রমিক সৌরভ জানান, একইভাবে বকেয়া বেতন চাওয়ায় গত ২ মাসে আমিসহ কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ জন কে মর্তুজা ও তার ছোটভাই লেহাজ উদ্দিন তাদের হোটেলে শ্রমিকদের মারধর করে। আমি পা ধরেও রক্ষা পাইনি, এখন আমি পালিয়ে বেড়াই।

এদিকে অভিযুক্ত পরিবহন ব্যবসায়ী গোলাম মর্তুজা তার কর্মচারীকে মারধরের কথা স্বীকার করে জানান, তারা কোনো বকেয়া বেতন পায় না। বেতন চাইলে কাউকে মারার আইনগত অধিকার তার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিতি নিয়ে এব্যাপারে বসলে তাদের সামনেই  মর্তুজা ও তার ছোটভাই লেহাজ উদ্দিন  অভিযোগকারীদের মারধরের চেষ্টা করে।

তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান জানান, মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগী অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে পুলিশ। তবে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে গিয়েছেন। তিনি ফিরে আসলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads