• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

তিস্তার পানি বিপদসীমার ২২সে.মি উপরে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

বিপদসীমার ২২সে.মি উপরে

  • লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১২ জুলাই ২০১৯

লালমনিরহাটে বৃষ্টি কমলেও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানিও বিপদসীমা ছুঁইছুঁই হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রধান এই দুই নদীসহ জেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

এর ফলে অবনতি হয়েছে লালমনিরহাটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি। প্লাবিত হয়েছে নতুন এলাকা। জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী; কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা; সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়নের তিস্তা ও ধরলার নদীর চরাঞ্চল প্ল¬াবিত হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ১৫হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে কষ্টে জীবন-যাপন করছেন।

এদিকে তিস্তায় পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের তালেবমোড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও জেলার তিস্তার তীরবর্তী বেশ কিছু বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।

বন্যার পানিতে ডুবে গেছে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, হাট বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

বাড়ি-ঘর ছেড়ে অনেকে গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে। গত ৫দিন ধরে খাবার ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের চরম সঙ্কটে অমানবিক জীবন-যাপন করছেন দুর্গত এলাকার মানুষজন। শুকনো খাবার খেয়ে জীবনধারণ করছেন তারা। বাধ্য হয়েই পানিতে ডুবে থাকা নলকূপের পানি পান করছেন অনেকে।

লালমনিরহাটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বজলে করিম বলেন, যেহেতু গত কয়েকদিন থেকে বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে সেহেতু তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চরাঞ্চল প্লবিত হয়েছে এবং নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে লালমনিরহাটে বন্যা ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করতে পারে বলেও তিনি জানান।

জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে তালিকা করা হয়েছে। দুর্গত মানুষের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬৮ মেট্রিক টন চাল। এসব চাল বিতরণ করা শুরু হয়েছে। এছাড়া গত দুুুুইদিনে পানি বন্দী অনেক পরিবারের মাঝে সুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার তিস্তার পানি প্রবাহ বিকাল ৩টা থেকে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads