• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বগুড়ায় বাঙালী নদীর পানিতে নতুন এলাকা প্লাবিত

  • বগুড়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২১ জুলাই ২০১৯

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি কমলেও বাঙালী নদীর পানি বাড়ছে ব্যাপক হারে। বাঙালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পৌর এলাকা সারিয়াকান্দি সদর, নারচী, ফুলবাড়ী, কুতুবপুর এবং ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে নতুন করে ফসলের মাঠ তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবারের সংখ্যা আরো বেড়েছে।

বানভাসি মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি গবাদী পশুর খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভেলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রুবেল উদ্দিন জানান, বাঙালী নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে তার ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের সব কটি গ্রামের ফসলের মাঠ তলিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সুত্রে জানা গেছে, বন্যা কবলিত এলাকায় ১ লাখ ২৫ হাজার গরু, মহিষ, লক্ষাধিক ছাগল, ১০ হাজার ভেড়া পানি বন্দি রয়েছে। হাওড়াখালি গ্রামের মজিদ ফকির, আমজাদ হোসেন, পাইকপাড়ার জহুরুল মন্ডল জানান, তাদের বাড়ী ঘরে বন্যার পানি ওঠায় গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। গরু-ছাগল লালন পালন করেই তাদের সংসার চলে।

বন্যার আগে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘাস কেটে এনে গরু ছাগল লালন পালন করতে খরচ কম হওয়ায় গরু বিক্রি করে লাভ বেশী পেয়েছেন। এখন মাঠ-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘাস সংগ্রহ করতে পারছেনা। ধানের কুড়া-ভুষি সহ অন্যান্য গোখাদ্য ক্রয় করে গরু-ছাগল পালনে খরচ বেশী হচ্ছে। ঠিকমত খাবার দিতে না পারায় গরুর স্বাস্থ্য কমে গেছে।এতে কোরবানীর জন্য যে সব গরু প্রস্তুত করা হয়েছিল সেই গরু গুলোর স্বাস্থ্য হানি ঘটায় গরুর প্রকৃত মূল্য পাওয়া যাবে না। গরু খামারীদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি কমে রবিবার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার এবং বাঙালী নদীর পানি ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার যমুনা ও বাঙ্গালী নদী বেষ্টিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় ২০টি ইউনিয়নের ১৩৮টি গ্রামের ১লাখ ২৮ হাজার ৯৭০জন পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে ৩ উপজেলায় ১৪৫টি আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৬৩০ ঘরবাড়ি। বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন ২ হাজার ৯শ পরিবার। অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছে ৯২৩ পরিবার। বন্যায় ৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় এসব স্কুল বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। বন্যায় ৯হাজার ৬৫৯ হেক্টর জমির পাট, আউস ধান, বীজতলা, মরিচ, আখ ও বিভিন্ন সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যায়ন ২ হাজার ৩৩০টি ল্যান্টিন ও ২ হাজার ৭৩৬টি টিউবয়েল নষ্ট হয়ে যায়। এরমধ্যে ৯৬টি নলকুপ মেরামত ২৪টি নলকুপ পুনস্থাপন ও ২৭টি ল্যান্টিন স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ১০ হাজার ৮৫০ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকায় ২ হাজার প্যাকেট শুকèা খাবার, ৪৬৭ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads