• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

  • প্রকাশিত ২৯ মে ২০১৮

বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৮ সালের ২৯ মে পিতার কর্মস্থল বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের কাছে মালবদিয়া গ্রামে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম প্রবোধ কুমার, ‘মানিক’ তার ডাকনাম। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তিরিশ-উত্তর বাংলা কথাসাহিত্যের একজন শক্তিমান লেখক। স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নের সময় বিচিত্রা পত্রিকায় তার প্রথম গল্প ‘অতসী মামী’ প্রকাশিত হলে পাঠক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিশ শতকের তিরিশের দশকে রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র ধারার বিরোধিতা করে যে কল্লোল গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটে, সেই গোষ্ঠীর লেখক হিসেবে মানিকের স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে ওঠে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনের প্রথম পর্বে মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড, ই য়ুং, অ্যাডলার প্রমুখ দ্বারা প্রভাবিত হলেও পরবর্তী সময়ে তিনি মার্কসবাদে দীক্ষা নেন। ১৯৪৪ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য হন এবং আমৃত্যু এই দলের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক ও শিল্পী সংঘের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। সাহিত্যের মাধ্যমে মার্কসের শ্রেণি সংগ্রামতত্ত্বের বিশ্লেষণ এবং মানুষের মনোরহস্যের জটিলতা উন্মোচনে তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শিল্পী। শহরের পাশাপাশি গ্রাম্যজীবনের দ্বন্দ্বসঙ্কুল পটভূমিও তার উপন্যাস ও গল্পে গুরুত্ব পেয়েছে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার রচনায় মানুষের অন্তর্জীবন ও মনোলোক বিশ্লেষণে শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। তার প্রথম দিকের রচনায় নিপুণভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে মানুষের অবচেতন মনের নিগূঢ় রহস্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পঞ্চাশের মন্বন্তর পরবর্তী রচনায় তার সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। অর্ধশতাধিক উপন্যাস ও দু’শ চব্বিশটি গল্প তিনি রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে জননী, দিবারাত্রীর কাব্য, পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, চিহ্ন, চতুষ্কোণ, অতসী মামী ও অন্যান্য গল্প, প্রাগৈতিহাসিক, হলুদ পোড়া, আজ কাল পরশুর গল্প ইত্যাদি। তবে পদ্মানদীর মাঝি ও পুতুলনাচের ইতিকথা উপন্যাস দুটির মাধ্যমেই তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে চরম দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছেন, তা সত্ত্বেও তিনি সাহিত্যচর্চাকেই পেশা হিসেবে আঁকড়ে ধরেছেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। তিনি পূর্ববঙ্গ প্রগতি লেখক ও শিল্পী সঙ্ঘের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads