• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মুহম্মদ আবদুল হাই

মুহম্মদ আবদুল হাই

সংরক্ষিত ছবি

মতামত

স্মরণ

মুহম্মদ আবদুল হাই

  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৮

মুহম্মদ আবদুল হাই একাধারে শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি ২৬ নভেম্বর ১৯১৯ সালে মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। মুহম্মদ আবদুল হাই ১৯৩২ সালে জুনিয়র মাদরাসা, ১৯৩৬ সালে হাই মাদরাসা ও ১৯৩৮ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪১ সালে বাংলায় বিএ অনার্স এবং ১৯৪২ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তিনিই ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রথম মুসলমান ছাত্র। মুহম্মদ আবদুল হাই ১৯৫০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে ভাষাতত্ত্বে অধ্যয়ন ও গবেষণার জন্য গেলে ভাষাতত্ত্ব, ধ্বনিতত্ত্ব ছাড়াও ইংরেজি, আরবি, সংস্কৃত, দ্রাবিড় প্রভৃতি ভাষা শিক্ষার সুযোগ লাভ করেন এবং ১৯৫২ সালে A Phonetic and Phonological Studz of Nasal and Nasalization in Bengali শীর্ষক অভিসন্দর্ভ রচনা করে ডিস্টিংশনসহ এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তার এ অভিসন্দর্ভটি ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়। মুহম্মদ আবদুল হাই ১৯৫৪ সালে বাংলা বিভাগের রিডার ও অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৯৬২ সালে যখন তিনি অধ্যাপক পদে নিয়োগ লাভ করেন, তখন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির অঙ্গনে ছিল এক দুঃসময়। গবেষণার ক্ষেত্র প্রস্তুত ও প্রসারের লক্ষ্যে তিনি ‘সাহিত্য পত্রিকা’ প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি সম্পাদনার পাশাপাশি তিনি তার গবেষণাকর্ম হিসেবে ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতি’ ‘বিলেতে সাড়ে সাত শ’ দিন’, ‘তোষামোদ ও রাজনীতির ভাষা’, ‘ভাষা ও সাহিত্য’, ‘ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব’ প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। বাংলা ভাষার ধ্বনির গঠন, উচ্চারণ ও ব্যবহারবিধি সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে রচিত ‘ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব’ গ্রন্থটি মুহম্মদ আবদুল হাইকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি দান করে। মুহম্মদ আবদুল হাইয়ের অপর উল্লেখযোগ্য অবদান বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ভাষা ও সাহিত্য সপ্তাহ’ (২২-২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৩) উদযাপন। এর প্রধান লক্ষ্য ছিল বাঙালির ওপর চাপিয়ে দেওয়া পাকিস্তানি সংস্কৃতির বিরোধিতা করা এবং নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য নিবেদিত এই শিক্ষাবিদ ১৯৬৯ সালের ৩ জুন ঢাকায় এক ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads