• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
আবদুল মতিন খান

জটিলতা জন্মে আধিক্য থেকে

সংগৃহীত ছবি

মতামত

কোপ

  • আবদুল মতিন খান
  • প্রকাশিত ২৬ অক্টোবর ২০১৮

প্রতি মুহূর্তের ঘটনা অথচ কেউ খেয়াল করে না। প্রতি মুহূর্তের বলেই সম্ভবত এমনটা হয়। বোধ জন্মানোর আগে জৈবিকভাবে এবং পর থেকে সচেতনভাবে ঘটনাটা ঘটে। সার্বক্ষণিক সেই কর্মটি হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ। সকল প্রাণীর ক্ষেত্রেই এটা শর্ত, তবে মানুষের ক্ষেত্রে বেশি। মানুষের বেলায় বেশি হওয়ার হেতু হলো মানুষের জটিল জীবন।

জটিলতা জন্মে আধিক্য থেকে। মানুষের আধিক্যটা আসে তার মগজের কারণে। মানুষের মগজ সব থেকে বেশি বিকশিত। আজকের বিজ্ঞানীরা মানুষের মগজকে বলেন সুপার কম্পিউটার। মানুষের মগজের কাজ করতে সক্ষম এমন কম্পিউটার মানুষ এখনই তৈরি করে ফেলেছে। এর চেয়েও দ্রুত কাজ করে দেওয়ার কম্পিউটার অচিরে তৈরি হয়ে যাবে। সেটি দিয়ে একটি যন্ত্রমানব বা রোবোট তৈরি হয়ে গেলে তারা কি মানুষকে বিতাড়িত বা বিনাশ করে একদিন রক্তমাংসের মানুষের স্থান দখল করবে? এর জবাব হলো, একটি বিশাল ‘না’। মানুষের সমান কেউ হতে পারবে না। স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নির্বাসনের কথাটা যদি আমরা স্মরণ করি, তাহলেই ধন্ধটা কেটে যাবে। জ্ঞানবৃক্ষের ফল ভক্ষণের অপরাধে মানুষের স্বর্গচ্যুতি ঘটে। জ্ঞানবৃক্ষের ফল আদম খেয়ে ছিলেন বিবি হাওয়ার প্ররোচনায়। জ্ঞানলাভের আদি উৎস নারী। জ্ঞানলাভের ভুলপথে অর্থাৎ বিপদজনক পথে মানুষকে প্রলুব্ধ করে আবার শয়তান।

শয়তান বা ইবলিস ছিলেন ফেরেশতাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। খোদা মানুষ সৃষ্টি করলেন মাটি দিয়ে। প্রথমে আদমকে, পরে তার নিঃসঙ্গতা ঘোচাতে আদমের পাঁজরের একটি হাড় থেকে হাওয়াকে। তাদের তৈরির পর খোদা ফেরেশতাদের আদেশ করলেন সেজদা করতে। সব ফেরেশতা সে আদেশ পালন করল কেবল একজন বাদে। ব্যতিক্রমী এই ফেরেশতা হলো শয়তান বা ইবলিস। না করার কারণ হিসেবে সে জানাল, সে হলো আগুনের তৈরি আর আদম মাটির। আগুনের হয়ে সে মাটির মতো শীতল বস্তুকে সেজদা করতে পারে না।

এরপর স্বভাবতই ইবলিস আদম-হাওয়া অর্থাৎ মানুষের শত্রু হয়ে উঠল। স্বর্গ হতে কী করে তাদের বিদায় করা যায় ভাবতে লাগল। আদম-হাওয়া স্বর্গোদ্যানে মনের সুখে ঘুরে বেড়াতেন। যখন যা ইচ্ছে তা-ই করতেন। করতেন পান আহার। তাদের কেবল নিষেধ ছিল জ্ঞানবৃক্ষের ফল খেতে। নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানুষের প্রবল আসক্তি জানা থাকায় শয়তান হাওয়াকে নানা কথায় ভুলিয়ে-ভালিয়ে ওই ফল খাওয়াতে রাজি করালো। হাওয়া আদমকে সঙ্গে নিয়ে ওই নিষিদ্ধ ফল খেলো। স্বর্গে পানাহার আছে, কিন্তু পেসাব-পায়খানা নেই। কখনো তাদের তেমন ভাব হয়নি। খাওয়া মাত্র তারা বুঝতে পারলো তারা উলঙ্গ। যথাসময়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার ও লজ্জা নিবারণের ব্যবস্থা স্বর্গে না থাকায় খোদা তাদের পাঠিয়ে দিলেন পৃথিবীতে। বললেন, পাপমুক্ত হয়ে এবং নিষ্পাপ জীবনযাপন করলে তারা অবশ্যই স্বর্গে ফিরতে পারবে। পৃথিবীতে নেমে তারা দেখতে পেলেন লতাপাতা গাছগাছালি। এগুলো দিয়েই তারা লজ্জা নিবারণ ও দেহকে রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য আচ্ছাদন তৈরি করল। তাদের সেই প্রয়াসেরই শেষ নয়, সর্বশেষের সংস্করণ আজকের স্কাইস্ক্র্যাপার ও মসৃণ মোলায়েম পোশাকপরিচ্ছদ। শয়তানও স্বর্গে থাকতে পারল না। খোদার আদেশ অমান্য করায় তাকেও বেহেশত থেকে বিতাড়িত করে পৃথিবীতে পাঠানো হলো। আসার আগে শয়তান খোদার কাছে এই মিনতি করল যে, পৃথিবীতে তার শত্রু মানুষকে সে যেন বিপথগামী করতে পারে। মানুষ যেন কখনো আর বেহেশতে ফিরতে না পারে। খোদা তার এই অনুরোধ রক্ষা করলেন এই ভরসায় যে, মানুষকে বিবেকবান করে তৈরি করায় শয়তান তার কিছু করতে পারবে না। এগুলো ধর্মগ্রন্থের কথা।

ডারউইনের বিবর্তনবাদ অনুযায়ী লক্ষ লক্ষ বছরের নিম্নতম থেকে ধীর লক্ষে উচ্চতর স্তরে বিবর্তিত হয়ে পৃথিবীতে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে যাত্রারম্ভের পর, নৃবিজ্ঞানীরা মানুষের অগ্রগতির ইতিহাস আজতক যা পাওয়া গেছে, তা লিখেছেন। সেটা পূর্ণাঙ্গ না হলেও চিত্তাকর্ষক অবশ্যই। মানুষ বর্তমানে পৃথিবী ছাড়িয়ে মহাশূন্যে হানা দিচ্ছে। আজ থেকে দশ হাজার কি দশ লাখ বছর পর, অল্প করেই সময়সীমাটা ধরা হলো, মানুষের সভ্যতা কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে কষ্ট-কল্পনাতেও তা আঁকা যায় না। মানুষের এগিয়ে চলার এই যে সীমাহীনতা এর জন্য দায়ী তার মগজ। এই মগজের বিশ্লেষণ ক্ষমতার একটি ভগ্নাংশ মাত্র মানুষ এখন পর্যন্ত কাজে লাগাতে পারছে। বাকিটা অব্যবহূতই রয়ে গেছে। পুরোটা ব্যবহার যখন হবে, তখন তারা অবশ্যই স্বর্গে ফিরতে পারবে অথবা পারবে স্বর্গ-রচনা।

মানুষের সংখ্যা বর্তমানে সাড়ে সাতশ কোটির মতো। এ সংখ্যা আরো কিছুটা বাড়বে। বাংলাদেশ ছোট একটা দেশ, মাত্র সাড়ে পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের। এর জনসংখ্যা আন্দাজ করা হয় পনেরো কোটির মতো। বাংলাদেশ সুজলা-সুফলা হওয়ায় এখানে বসবাস করা অপেক্ষাকৃত কম কষ্টের। উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্যোৎপাদন বেড়েছে। তবু অভুক্ত মানুষের সংখ্যা শূন্যে নামেনি। কিছুদিন আগে খাদ্য সমস্যা বলতে কেবল ভাতের অভাব বোঝাত। বর্তমানে ভাত ছাড়া মাছ মাংস ডাল তরকারির প্রাপ্যতাও বোঝায়। একসময় জনসংখ্যা কম ছিল অর্থাৎ পঞ্চাশ লাখ কি এক কোটি ছিল এবং এ ভূখণ্ডে ছিল অসংখ্য নদীনালা, বিল-বাঁওড়। তখন পানিতে হাত দিলেই মাছ মিলত। তখন বলা হতো মাছে-ভাতে বাঙালি। গরু দিয়ে আবাদ করা হয় বলে দুধও মিলত। তাই দুধে-ভাতে বাঙালি বলারও চল ছিল। লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এবং নদীনালা শুকিয়ে যাওয়া এবং গরু দিয়ে চাষের বদলে ট্রাক্টর ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষ বৃদ্ধির পর মাছে-ভাতে অথবা দুধে-ভাতে বাঙালি বলার দিন শেষ হয়ে গেছে। এখন অবস্থাপন্ন বাঙালির খাদ্য তালিকায় মাছ থাকলেও মাংসের আধিক্য দেখা যায়। ডাল-ভাতের বদলে পোলাও-কোর্মা, চপ-কাটলেট এবং ব্যস্ত বাসিন্দাদের জন্য বিরিয়ানি বার্গার পিজ্জা ইত্যাদি এখন নিত্যদিনের খাবার। ডাল-ভাত এখন অনেকের শখের খাবার।

বাঙালির মেধা থাকায় ভালোটার অনুকরণ অনুসরণ তার স্বভাবের অন্তর্গত। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান অবিশ্বাস্য দ্রুততায় বাড়ছে। বাংলাদেশের দ্রুত পরিবৃদ্ধির প্রমাণ তুলে ধরতে গিয়ে দেখানো হয় তার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। এই রিজার্ভ বাড়ার মূল কারণ তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, মাছ, চামড়া ও চামড়ার তৈরি পণ্য প্রভৃতির দিন দিন রফতানি বৃদ্ধি। দ্বিতীয় কারণ, বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ। এ দুটো উৎসই বাঙালি শ্রমিকের ঘামের ফসল। শ্রমিকের ঘামে যে কেবল বাংলাদেশের আকাশের দৃশ্যপট বদলে যাচ্ছে তা নয়, বদলে যাচ্ছে নিকটপ্রাচ্য পশ্চিম এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, উভয় আমেরিকা এবং ইউরোপ ও দূরপ্রাচ্যের দৃশ্যটও। এসব দেশের গগনচুম্বী যাবতীয় অট্টালিকা, কলকারখানা, হাইওয়ে, বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় সব কিছু নির্মাণে মুখ্য অবদান বাঙালি শ্রমিকের। দেশের চেয়ে বিদেশের উন্নয়নে তার ভূমিকা ঢের বেশি। কারণ হলো দেশে কাজের অভাব এবং অবিশ্বাস্য নিম্ন মজুরি। দেশে আয় রোজগার ভালো থাকলে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিও আরো গতি পেত। সেটা ঠিকভাবে ধরতে পেরে শেখ হাসনাি তার নিজ আয়ত্তের মধ্যে যত শ্রমজীবী বা চাকরিজীবী ছিল তাদের আয় এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ করে দিয়েছেন। অন্যদেরও তার অনুসরণ করা উচিত। লেখা দিয়ে কাগজ চলে অথচ কাগজ-মালিক লেখককে তার পারিশ্রমিক দিতে গড়িমসি করেন। আয় থাকলে তবেই তো কেনাকাটা। পণ্য উৎপন্ন করে গুদামে ফেলে রেখে তো লাভ নেই। কারখানা মালিকরা শ্রমিকের আয় বাড়িয়ে দিলে তাদের কারখানার পণ্যের কাটতি বাড়বে। বাড়বে খবরের কাগজের কাটতি। তাতে তাদের লাভ হবে। শ্রমিককে (লেখকও তাদের অন্তর্গত) দেওয়া তাদের টাকা আবার তাদের হাতে ফিরে আসবে। এবারের বইমেলায় পুস্তকের কাটতি অবিশ্বাস্য রকমের বেড়েছে বলে প্রকাশকরা বলছেন। পুস্তক ক্রেতারা, উদাহরণ স্বরূপ, আগের দিনে (১৯৫০-২০১২) বই বেশি কিনতেন না। তাদের যে কেনার ইচ্ছা ছিল না বা হতো না তা নয়। তাদের আয় এত কম ছিল যে, তা দিয়ে ভাত-কাপড় জোটানোই ছিল কঠিন। আজ বইয়ের কাটতি বৃদ্ধি এটাই প্রমাণ করে যে, মানুষের আয় বেড়েছে। জীবনের মান বেড়েছে। এখন মানুষ কেবল ফেব্রুয়ারিতে এই কিনছে। এরপর সারা বছরই কিনবে।

ভাবনা এখন যা, তা দুর্নীতি বা দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে। দুর্নীতির মধ্যে কিছুদিন আগ পর্যন্ত ছিল অফিস কাচারিতে ঘুষ খাওয়ার দাপট। বড় অঙ্কের ঘুষ খাওয়া জানাজানি হয়ে গেলে তাকে বলা হতো পুকুরচুরি। অফিস-কাচারির দু’চার লাখ পর্যন্ত ঘুষ তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে। এই নিয়ে এখন আর তেমন কথা ওঠে না। এখন কথা ওঠে হাজার কোটি টাকা লোপাটের খবরে। লোপাটের টাকা দৃশ্যমান খাতে খরচ হলে। ছোটখাটো কর্মচারীর স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা অর্জন দিয়ে একটা পাকা বাড়ি করা, সম্ভব হলে ঢাকায়। তাদের এ মনোবাঞ্ছা পূরণ করছে বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাতারা। ফ্ল্যাট ক্রেতাদের অর্থের উৎস উল্লেখের নির্দেশ সরকার থেকে একবার ব্যক্ত করায় ফ্ল্যাট নির্মাণ ব্যবসায়ে ধস নেমেছিল। তারা হৈচৈ শুরু করে দিলে সরকার ওই নির্দেশ তুলে নেয়। নিম্ন পর্যায়ে দুর্নীতি ঠেকানোর এ প্রয়াস ব্যর্থ হয়। পুকুরচুরিতে ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু সাগরচুরির ব্যাপারে সরকার বরাবরই থাকে উদাসীন। উদার।

এ উদাসীনতা হলো সচেতন উদাসীনতা, যত্নসহকারে এলোমেলো (কেয়ারফুলি কেয়ারলেস) থাকা, প্রেমে পড়তে আগ্রহীর মতো। সাগরচুরি হতে গেলে প্রতারক জালিয়াত চক্রের আন্তর্জাতিক স্তরে যোগাযোগ থাকতে হয়। বাংলাদেশকে ‘অরক্ষিত’ ভেবে এ রকম চক্র অনেকগুলো সক্রিয় থাকতে পারে। প্রমাণ এর একটির বিদেশি সদস্যসহ (তিনি আবার বিয়ে করে এখানে সংসারও পেতেছেন) পুরো বাহিনীর গোয়েন্দাদের জালে বমাল ধরা পড়া। বাংলাদেশ দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। একে আরো বেগবান করতে প্রতিবছর লক্ষ হাজার কোটির বাজেট ঘোষিত হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী বছরের বাজেট বর্তমান বাজেটের দ্বিগুণ আকৃতির হবে। এসব বাজেটের বাস্তবায়নে যারা সংশ্লিষ্ট হবে তারা রাঘববোয়াল নন, হবেন হাঙ্গর-তিমি। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপে এমনটাই হয়ে থাকে। বাজার অর্থনীতির বিকাশে শয়তানেরও থাকে বিরাট ভূমিকা। শয়তানই এ অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বাজার অর্থনীতির এটাই চরিত্র। বাংলাদেশ বাজার অর্থনীতির পথে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলায় হাসিনা সরকারের প্রতি বিরূপ যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে কিছুটা নমনীয় হয়েছে, তবে বোধহয় পুরোপুরি নয়, সামনের দিনগুলোতে আরো হওয়ার সম্ভাবনা। ২০৩০-এর পর বহু বিদেশি ধনপতি বাংলাদেশে এসে স্থায়ী বসতি করবে, এখন যেমন করছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে।

ধনবান দেশের লক্ষণ বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই হচ্ছে স্পষ্ট। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সেকেন্ডে যত ধর্ষণ ও খুনজখম হয় বাংলাদেশে বছরে তত হয় কিনা সন্দেহ। খুন ধর্ষণ এত হয় বলে সেখানকার সংবাদমাধ্যম তা এড়িয়ে যায়। সেগুলো প্রকাশ করলে হাজার পৃষ্ঠার কাগজেও তার সঙ্কুলান হতো না। বাংলাদেশে রাজনীতি স্থবির থাকায় বিবর্ণ খবরের কাগজ পাঠকের কাছে গ্রহণীয় করে তুলতে খুনজখম ও ধর্ষণের রগরগে বিবরণ দিয়ে তার পাতা ভরা হয়। পুঁজিবাদী অর্থনীতি অর্থাৎ ইউরোপ আমেরিকার অর্থনীতি হলো খুনজখম ও কোপের অর্থনীতি। প্রতিপক্ষকে শেষ করতে হলে দরকার তার মাথায় কসাইয়ের চাপাতি দিয়ে আঘাত, যেমন- মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা করে। তার ‘শুভবুদ্ধি’র প্রকাশ হলো অব্যর্থ কোপ। কোপ মেরে হত্যা চরম অধর্মের কাজ। তার ভ্রান্ত আদর্শ এগিয়ে নেওয়ায় সে এ কর্মটিকে তার ‘শুভবুদ্ধি’র উৎকৃষ্ট প্রকাশ বলে বিশ্বাস করে। শুভবুদ্ধির অর্থ এক এক জনের কাছে এক এক রকম। শুভবুদ্ধির উদয়ে কামনা সর্বজনীন না হয়ে শর্তসাপেক্ষ হওয় বাঞ্ছনীয়। সে কোপ বন্ধ করতে হলে বাজার অর্থনীতির পতন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তার পতনের জন্য রাজনৈতিক সংগ্রাম জোরদার করতে হবে। মিষ্টি কথায় চিড়ে ভেজে না। লড়াই ছাড়া কিছু মেলে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads