• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
গিবত সব আমল ধ্বংস করে দেয়

গিবত

সংগৃহীত ছবি

মতামত

গিবত সব আমল ধ্বংস করে দেয়

  • আবু হানিফ কাছেমী
  • প্রকাশিত ০৮ জানুয়ারি ২০১৯

মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কালামে গিবত বা পরনিন্দার দোষ-ত্রুটি ও ক্ষতির কথা অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বর্ণনা করে বলেন, গিবতকারী স্বীয় মৃত ভাইয়ের মাংস ভক্ষণকারীর মতো। সুরা হুজরাতের ১১নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, তোমাদের কেউ যেন কারো পেছনে নিন্দা (গিবত) না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের (মৃতদেহের) মাংস ভক্ষণ পছন্দ করবে? বস্তুত তোমার তো অবশ্যই এটাকে ঘৃণা কর। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) এরশাদ ফরমান— এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের রক্তপাত করা, তার ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করা এবং তাকে অপমান করা, একে অপরের হক নষ্ট করা হারাম। তিনি আরো এরশাদ করেন, তোমরা গিবত থেকে বেঁচে থাক, কেননা গিবত জিনা থেকে জঘন্যতম অপরাধ।

গিবতের উক্তরূপ জঘন্যতর, কারণ হচ্ছে- মানুষ জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার পর যদি মহান আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ তওবা করে, তাহলে মহান আল্লাহতায়ালা তওবা কবুল করে তাকে ক্ষমা করবেন বলে আশা করা যায়। কিন্তু গিবত হচ্ছে হক্কুল ইবাদ, যা বান্দার হক বান্দা যে পর্যন্ত ক্ষমা না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গিবতকারীর পাপ মোচন হবে না। আল্লাহতায়ালা গিবতকারীকে কেয়ামতের দিন জাহান্নামের পুলের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আগুনের দহনে তার অন্তর গিবতের কলুষ থেকে মুক্ত না হয়। রসুলে করিম (সা.) এরশাদ করেছেন, গিবত হচ্ছে কারো অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে এমনসব কথাবার্তা বলা যা শুনলে সে অপছন্দ করবে, এসব দোষচর্চা সে ব্যক্তির দেহ, বংশ, কথা, কাজ, ধর্ম, দুনিয়া, আখিরাত এমনকি তার পোশাক-পরিচ্ছদ এবং আরোহণের জন্তু সম্পর্কে হলেও গিবত বলে পরিগণিত হবে।

মহানবী (সা.) আরো এরশাদ ফরমান, কিয়ামতের দিন চোগলখোর ব্যক্তির অবস্থা অত্যন্ত নিকৃষ্টতম হবে। কারণ  চোগলখোরের অভ্যাস হলো, সে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কিছু লোকের কাছে হয়তো যে কথা বলল, পরক্ষণেই সে অন্য লোকদের কাছে ওই কথাটি অন্যরূপে ব্যক্ত করল। তাই এ ধরনের দু’মুখো ব্যক্তির শাস্তিস্বরূপ কিয়ামতের ময়দানে তার দুটি আগুনের জিহ্বা হবে। এদের আরবি ভাষায় বলা হয় নাম্মাম।

হজরত আনাস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) এরশাদ করেছেন, মিরাজের রাতে আমি এমন কিছু লোকের কাছ দিয়ে পথ অতিক্রম করছিলাম যারা মর্মান্তিক শাস্তিস্বরূপ স্বীয় মুখমণ্ডল বিরাটাকার ধারালো নখ দিয়ে আঁচড়াচ্ছিল এবং গলিত পচা লাশের মাংস ভক্ষণ করছিল। আমি হজরত জিবরাঈল (আ.)-কে তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এরা দুনিয়ায় মরা লাশের গোশত ভক্ষণ করত। অর্থাৎ অন্যের গিবত ও চোগলখোরি করত।

 

লেখক : আলেম ও গবেষক

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads