• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়: প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা এবং জবাবদিহিতা

ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফ

সংগৃহীত ছবি

মতামত

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়: প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা এবং জবাবদিহিতা

  • প্রকাশিত ১৫ অক্টোবর ২০১৯

ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ছাত্রলীগের ১৭ হাজার নেতাকর্মীর আত্মত্যাগ রয়েছে। বাংলাদেশের সকল সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সুতরাং ছাত্রলীগ কলুষিত হলে বাংলাদেশ কলুষিত হয়। ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস যেমন রচিত হয় না তেমনি ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশকে কল্পনা করা যায় না। একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে বলতে পারি ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য,ছাত্রদের মৌলিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের একটি এবং অন্যতম সংগঠন হল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যারা সবসময় সত্যের পথে,অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সংগ্রামে লিপ্ত থাকে।

ছাত্রলীগ একটি প্রতিষ্ঠান যে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অপকর্ম,বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বৈরাচারী মনোভাব সবকিছুতেই বাধা দিয়ে থাকে। ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান করে থাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।যারা ছাত্রলীগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে থাকেন তারা একটি জনপ্রিয় সংগঠনের বিপক্ষে বললে তাদের জনপ্রিয়তা পায় মনে করে সেজন্যই বিরূপ মন্তব্য করে থাকেন।ছাত্র রাজনীতি করেছেন,ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে বোঝেন,বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন বাংলাদেশের অন্য কোন সংগঠন ছাত্রদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে?অন্য যে সব সংগঠন রয়েছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস কলুষিত করেছে,রক্তে রঞ্জিত করেছে প্রিয় ক্যাম্পাসগুলো। অনেক সংগঠন আছে যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপদান করার লক্ষ্যে কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়। একমাত্র ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যাদের কখনো দরকার হয় না প্রশিক্ষণের। এখানে মেধা ও কর্মের ফলে নেতা নির্বাচন করা হয় এবং আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি হিসেবে আমি দেখেছি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সেই সকল ইউনিট প্রধানের থাকে। ইউনিট প্রধানরা তাদের ক্যাম্পাসের এবং ছাত্রদের চাহিদা স্বরূপ তাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে । নেতা নির্বাচন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ক্যাম্পাসের ভালো-মন্দ দেখভাল করার দায়িত্ব ইউনিটের নেতাদের।

আমরা বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাটলে দেখতে পারি একটি পক্ষ স্বাধীনতার পক্ষে অন্যপক্ষ স্বাধীনতার বিপক্ষে অর্থাৎ আওয়ামী লীগের পক্ষের শক্তি, আর অন্যটি আওয়ামী লীগের বিপক্ষের শক্তি। এছাড়া আমরা কোন রাজনৈতিক সংগঠন উপস্থিতি দেখতে পাই না । যারা সুশীল হিসাবে নিজেদের পরিচয় দেন,যারা ছাত্রলীগকে গালি দেন আপনারা অবশ্যই স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি যদি হয়ে থাকেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কৃতিত্ব আপনার অস্বীকার করতে পারবেন না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডকে আপনারা বিতর্কিত করতে পারেন না। মুষ্টিমেয় কোনো ব্যক্তির জন্য গোটা ছাত্রলীগকে আপনারা গালি দিতে পারেন না।বুয়েটের আবরার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কিছু বিপথগামী ছাত্র। কোনো প্রতিষ্ঠান নয়।আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ব্যবস্থা নিয়েছে। ২-৪ জনের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কলুষিত হতে পারে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বর্তমান সময়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন। লাখ লাখ ছাত্রদের নিয়ে এই সংগঠন পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যেকোনো ইউনিটের নেতা হতে হলে বর্তমান সময়ে তাকে অবশ্যই নিয়মিত ছাত্র হতে হবে।নিয়মিত ছাত্র হওয়ার সাপেক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচন করা হয়। যেহেতু নিয়মিত ছাত্ররা ছাত্র নেতৃত্বে আসে সেই সুযোগে অনেক অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করে। হঠাৎ করে অনেকেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে চলে আসে যাদের হয়তো বংশ পরিচয় বা ব্যাকগ্রাউন্ড নির্ণয় করা অনেকাংশে সম্ভবপর হয় না ।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই একটি আদর্শ, নীতি নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ঠিক বর্তমান ছাত্রলীগ আদর্শ, নীতি এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করে ছাত্রলীগ পরিচালিত হয়।জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল কর্মপন্থা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি। বঙ্গবন্ধু কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে গেলে আগে ছাত্রলীগের উপর দায়িত্ব দিতেন। পরে ছাত্রলীগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতেন। আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেই উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এক অগ্রণী পথিক। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কোনো বিকল্প নাই। সুতরাং বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ নয় বরং তাদের দিয়েই সৃষ্টিশীল কর্মগুলো বাস্তবায়ন করাই বাঞ্ছনীয়।বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সন্তান।কোনো ভুল করলে তাদের সমালোচনা হবে ঠিক তাদের ভালো কাজেরও প্রশংসা করতে হবে। সুতরাং ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়। ছাত্র রাজনীতিতে আরো বেশি পরিচ্ছন্নতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে । আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তি আরো সুদৃঢ় করতে হবে ছাত্র রাজনীতিতে । তাহলেই সত্যিকারের মেলবন্ধন তৈরী হবে ছাত্র রাজনীতিতে ।

লেখক: এফ এম শরিফুল ইসলাম শরিফ

সাবেক সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ।

সাংগঠনিক সম্পাদক,ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads