• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
নীরবতার ফজিলত ও উপকারিতা

নীরবতার ফজিলত ও উপকারিতা

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

নীরবতার ফজিলত ও উপকারিতা

  • এম এম আবু দাউদ
  • প্রকাশিত ১১ আগস্ট ২০১৮

নীরবতা একটি অনন্য ইবাদত। শরিয়তে নীরব থাকার প্রশংসা করে এর প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রসুলে পাক (সা.) বলেছেন, যে নীরব থাকে সে মুক্তি পায়। অন্য রেওয়াতে আছে, নীরব থাকা হলো হেকমত ও প্রজ্ঞা। কিন্তু কম লোকই এর ওপর আমল করে। নীরব থাকার অন্যতম উপায় হলো কথা কম বলা। হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলে পাক (সা.) ইরশাদ করেন, বান্দার ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক হয় না, যতক্ষণ তার অন্তর ঠিক না হয়। বান্দার অন্তর ততক্ষণ ঠিক হয় না, যতক্ষণ তার জিহ্বা ঠিক না হয়। অন্যত্র রসুলে পাক (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি শান্তি পছন্দ করে, সে যেন নীরবতা অবলম্বন করে।

নীরব থাকার উপায় হলো জিহ্বার হেফাজত করা। রসুলে পাক (সা.) ইরশাদ করেন, যখন সকাল হয় তখন মানুষের সব অঙ্গ জিহ্বাকে বলে, আমাদের বিষয়ে তুমি আল্লাহকে ভয় কর; তুমি ঠিক থাকলে আমরাও ঠিক থাকব, তুমি নাফরমানি করলে আমাদের অবস্থাও অনুরূপ হবে।

রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, দেহের প্রতিটি অঙ্গই আল্লাহপাকের কাছে জিহ্বার ক্ষিপ্রতা সম্পর্কে অভিযোগ করে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি নিজের জিহ্বা সংযত রাখে, আল্লাহ তার দোষত্রুটি গোপন রাখেন। হজরত সাফওয়ান বিন সলিম (রা.) থেকে বর্ণিত, একসময় রসুল (সা.) ইরশাদ করলেন- আমি কি তোমাদের এমন ইবাদতের কথা বলব না, যা খুবই সহজ? তা হলো- যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকাল বিশ্বাস করে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা নীরব থাকে। হজরত হাসান বসরী (রহ.) বলেন, আমার কাছে নবী করিম (সা.)-এর এই বাণী নকল করা হয়েছে যে, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সেই ব্যক্তির ওপর রহম করবেন, যে উপকারী কথা বলে অথবা নীরবতা দ্বারা নিরাপত্তা লাভ করে (বায়হাকি)।

রসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, আল্লাহতায়ালা সব বক্তার সঙ্গে আছেন। সুতরাং সবারই নিজের কথার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা উচিত। এক রেওয়ায়েতে আছে, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, মানুষ তিন প্রকার- ১. গনিমত আহরণকারী (যে আল্লাহকে স্মরণ করে), ২. বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ (যে চুপ থাকে), ৩. ধ্বংসপ্রাপ্ত (যে বাতিলের মধ্যে লিপ্ত)। একজন বিজ্ঞ দার্শনিক বলেছেন, নীরবতার সাত হাজার উপকারিতা রয়েছে। আর এই সাত হাজার উপকারিতা মাত্র সাতটি কথায় বিদ্যমান। ১. নীরবতা, পরিশ্রম ছাড়াই ইবাদত; ২. অলঙ্কার ছাড়াই সৌন্দর্য; ৩. ক্ষমতা ছাড়া ভয়ের কারণ; ৪. প্রাচীর ছাড়াই দুর্গ; ৫. কোনো ধরনের ওজর-আপত্তি প্রকাশ থেকে নিরাপত্তা; ৬. কিরামান কাতিবিন ফেরেশতাদের প্রশান্তি ও ৭. নিজের দোষ-ত্রুটির আচ্ছাদন [ইমাম গাজ্জালী (রহ.) রচিত জবানের ক্ষতি]।

এম এম আবু দাউদ

লেখক : আলেম

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads