• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

প্রিয় নবীর হাসি ও কৌতুক

  • মো. আবু তালহা তারীফ
  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০১৮

রসুল (সা.) আমাদের জন্য পদপ্রদর্শক। তিনি সব বিষয়ে আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। সাহাবিরা রসুল (সা.)-কে দেখে শিক্ষালাভ করতেন। রসুল (সা.) তাঁর সব দায়িত্ব পালনের পরও তিনি সাহাবিদের সঙ্গে আনন্দ করতেন। তিনি সাহাবিদের সঙ্গে হাসিমুখে থাকতেন। হজরত মোহাম্মদ (সা.) অত্যন্ত হাসিখুশি ও উৎফুল্ল মনের মানুষ ছিলেন। তাঁর কাজের সব কঠোরতা ও জটিলতার মধ্যেও সাহাবিদের নিকট কখনো একঘেয়ে, নিরস কিংবা আকর্ষণহীন মনে হতো না। বরং তাঁর সঙ্গ ছিল আনন্দ ও কৌতুকোজ্জ্বল। তিনি কখনো কখনো তার সাহাবিদের সঙ্গে হাস্য ও কৌতুক করতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে হারিস ইবনে জায (রা.) বলেন, মোহাম্মদ (সা.)-এর মতো খোশ মেজাজ এবং হাস্যোজ্জ্বল মানুষ আর দেখেননি। তিনি বলেন, মোহাম্মদ (সা.) মৃদু হাসি ব্যতীত কখনো উচ্চ হাস্য করতেন না। (তিরমিজি)।

একবার কয়েক সাহাবি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ (সা.) আপনি কি আমাদের সঙ্গে কৌতুক করেন? তিনি জবাবে বললেন, আমি সত্য ব্যতীত কিছু বলি না। (তিরমিজি)।

একদিন এক বৃদ্ধা এসে রসুল (সা.)-এর দরবারে আরজ করল- হে আল্লাহর রসুল! (সা.) আপনি আমার জন্য (আল্লাহর কাছে) দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে জান্নাত দান করেন। রসুল (সা.) বলেন, কোনো বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এ কথা শুনে বৃদ্ধা মর্মাহত হলেন। রসুল (সা.) তার সাহাবিদের বললেন, তোমরা তাকে বুঝিয়ে বল সে যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে তখন সে বৃদ্ধা থাকবে না, বরং আল্লাহ সব জান্নাতি নারীকে ষোড়শী কুমারীতে রূপান্তরিত করবেন। (তিরমিজি)।

হজরত আউফ ইবনে মালেক আল আশজায়ী (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে তাঁবুক অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। একদিন প্রিয় নবী (সা.) চামড়ার নির্মিত একটি ছোট তাঁবুকের মধ্যে ছিলেন। তিনি তাঁকে সালাম জানিয়ে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন ‘প্রবেশ কর’। অমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ (সা.) আমার সবটুকু কি? তিনি বললেন, তোমার সবটুকুই। আমি তখন ভেতরে প্রবেশ করলাম। (আবু দাউদ)

একদিন হজরত আলী (রা.) মাটিতে শুয়েছিলেন। তার সারা শরীর ধুলাবালিমাখা ছিল। রসুল (সা.) এ দৃশ্য দেখে বললেন, ‘ওঠ হে আবু তুরাব।’ আবু তুরাব অর্থ মাটির বাপ। এরপর থেকে তা আলীর (রা.) ডাকনামে পরিণত হয়। একবার আবু হুরায়রা বিড়ালকে আদর করছিলেন, এই দৃশ্য দেখে মহানবী (সা.) তাকে বিড়ালের অধিকারী বলে ডাক দিলেন। এই ডাক তার এত প্রিয় হয়ে যায় যে, এটাই তার আসল নাম হয়ে যায়।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমরকে (রা.) মহানবী (সা.) তাঁর সাহাবিদের সঙ্গে হাস্য-কৌতুক করতেন কি না তা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তারা হাস্য-কৌতুক করতেন বটে, কিন্তু তাদের অন্তরে ইমান এত সুদৃঢ় ছিল যে, তা পাহাড়ের চেয়েও অনেক বেশি ভারি ছিল।

 

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads