• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
আল-কোরআনের আলোকে খতমে নবুওয়াত

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

আল-কোরআনের আলোকে খতমে নবুওয়াত

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০১৮

হজরত মোহাম্মদ (সা.) সর্বশেষ নবী ও রসুল এ কথা আল-কোরআন দ্বারা প্রমাণিত। প্রখ্যাত আলিম হজরত মাওলানা মুফতি শফী (রা.) তদীয় ‘খতমে নবুওয়াত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, খতমে নবুওয়াতের বিষয়টি আল-কোরআনের শতাধিক আয়াত দ্বারা প্রমাণিত। গোটা কোরআনই খতমে নবুওয়াতের প্রমাণ বহন করে। কেননা কোরআন সংরক্ষিত, অবিকৃত ও অরহিত এক চিরন্তন কিতাব। খতমে নবুওয়াতের আকীদাকে স্বীকার করে নেওয়া হলেই কোরআনের চিরন্তনতা প্রমাণিত হয়। কারণ রসুলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের পর কোনো নবীর আগমনের সম্ভাবনাকে যদি মেনে নেওয়া হয়, তবে পরবর্তী নবীর কারণে আল-কোরআনও রহিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে স্বীকার করে নিতে হয়। অথচ কোরআন হলো এক চিরন্তন কিতাব। এর চিরন্তনতার দ্বারা এ কথাই স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, হজরত মোহাম্মদ (সা.) হলেন সর্বশেষ নবী। তাঁর পর আর কোনো নবী-রসুলের আগমন ঘটবে না। এ প্রসঙ্গে আল-কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘মোহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নন বরং তিনি আল্লাহর রসুল এবং সর্বশেষ নবী। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।’ (সুরা আহযাব, আয়াত : ৪০)

আলোচ্য আয়াতে শব্দটির অক্ষরে ফাহাত (জবর) ও কাস্রা (জের) উভয়ভাবে পাঠের নিয়ম রয়েছে এবং উভয় কিরাআতই বিশুদ্ধ ও মুতাওয়াতির। হাসান ও আসিম (রা.) শব্দটিকে জবর-এর সঙ্গে পড়তেন। আর অন্য কারিরা শব্দটিকে জের-এর সঙ্গে পাঠ করতেন। খাতাম ও খাতিম শব্দদুটির অর্থ শেষ ও সমাপ্তকারী। আলোচ্য শব্দের দ্বিতীয় অংশটি হলো ‘আন্ নাবিয়্যিন’ শব্দে উল্লেখিত অব্যয় পদটি। সমাপ্ত নবীদের বোঝানোর অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এর অর্থ হবে, নবী-রসুলগণের সর্বশেষ ব্যক্তি অথবা নবীদের ক্রমধারা সমাপ্তকারী।

ইমাম রাগিব ইসপাহানি (রা.) ‘মুফরাদাতুল কোরআন’ গ্রন্থে এর আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন, হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে এজন্য ‘খাতামুন্ নাবিয়্যিন’ বলা হয়, তিনি নবুওয়াতের সিলসিলা সমাপ্ত করে দিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি আগমন করে নবুওয়াতকে পূর্ণতা দান করেছেন এবং এর ধারাবাহিকতাকে সমাপ্ত করে দিয়েছেন। হজরত মোহাম্মদ (সা.) হলেন কিয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সব মানুষের রসুল। কাজেই তিনি হলেন সর্বশেষ পয়গাম্বর। আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘স্মরণ করো, যখন আল্লাহ নবীদের থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, আজ আমি তোমাদের কিতাব ও হিকমত দান করেছি, কাল যদি অন্য একজন রসুল এই শিক্ষার সত্যতা ঘোষণা করে তোমাদের কাছে আসে, যা আগে থেকেই তোমাদের কাছে আছে, তাহলে তোমাদের তার প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং তাকে সাহায্য করতে হবে।’ এই বক্তব্য উপস্থাপন করার পর আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমরা কি একথার স্বীকৃতি দিচ্ছ এবং আমার পক্ষ থেকে অঙ্গীকারের গুরুদায়িত্ব বহন করতে প্রস্তুত আছ? তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করলাম।’ (সুরা আলী ইমরান ৩ : ৮১)
 

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads