আল্লাহতায়ালার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভালোবাসার মাধ্যমে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তা-ই শ্রেষ্ঠ ও সম্মানজনক সম্পর্ক। যে বন্ধনের ভিত্তি হলো আল্লাহতায়ালার প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন এবং তার মহান বিধানকে ধর্ম ও আদর্শরূপে জীবনের সব ক্ষেত্রে পরিগ্রহকরণ।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা আল্লাহকে এবং তার রাসুলকে ও মুমিনদের ভালোবাসবে (তারাই আল্লাহর দলভুক্ত) আর আল্লাহর দলই বিজয়ী হবে’ (সুরা মায়েদা : ৫৬)। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত ওই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে ইসলামী জীবন বিধানে মৌলিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা তোমাদের ভ্রাতৃদ্বয়ের মাঝে মীমাংসা করো’ (সুরা হুজরাত : ১০)।
আল্লাহতায়ালা সুরা তওবার ৭১ নম্বর আয়াতে আরো বলেন, ‘মুমিন নর-নারীরা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু।’ আর প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না, কী করে পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? (তা হলো) তোমরা পরস্পরকে বেশি বেশি সালাম প্রদান করবে’ (মুসলিম)।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের বুকের দিকে ইঙ্গিত করে আরো বললেন, ‘তাকওয়া (আল্লাহ ভীরুতা) এখানেই। একজন মুসলিম ভাইকে হীন প্রতিপন্ন করাই পাপের জন্য যথেষ্ট। প্রতিটি মুসলমানের ওপর হারাম করা হয়েছে অন্য মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মানের ক্ষতিসাধ’ (বোখারি ও মুসলিম)।
বর্ণিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে বলা যায়, সব মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মানের হেফাজতে প্রয়াস চালানো প্রতিটি মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলমানদের সাদৃশ্য প্রদান করেছেন- ‘সিসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায়’ বলে এবং ‘একটি দেহের সঙ্গে’ তাদের তুলনা করেছেন।
সাহাবিরা ছিলেন এর জীবন্ত উদাহরণ। আল্লাহতায়ালা তাদের আচার-আচরণ এতটাই পছন্দ করেছেন যে, তাদের কথা কোরআনে কারিমের বিভিন্ন জায়গায় নানাভাবে বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে মক্কা থেকে আগত মুহাজিরদের সঙ্গে মদিনাবাসী আনসাররা যে আচরণ করেছেন, তা অনুসরণীয়। আল্লাহতায়ালা আমাদের মাঝেও তেমন ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন। যে ভালোবাসার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক